অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিরত কর্মীদের বেতন থেকে সংস্থার তহবিলে কন্ট্রিবিউশনের নামে কমিশন বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে ইকো সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশন (ইএসডিও) নামে একটি বেসরকারি এনজিওর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী ৮ জনের অভিযোগ, প্রাপ্য বেতন থেকে কমিশনের অংশ না দেওয়ায় যোগ্যতার অযুহাতে তাদের চাকরি থেকে অপসারণ করেছে সংস্থাটি।
সোমবার (১ মে) বিকেলে উখিয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অন্যায়ভাবে অপসারিতদের পুনরায় নিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি’র অর্থায়নে পরিচালিত নিউট্রেশন প্রকল্পে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিভিন্ন পদে ভুক্তভোগী ৮ জনকে নিয়োগ দেয় ইএসডিও।
বেতন থেকে কমিশন দেওয়াসহ সংস্থাটির অন্যায় প্রস্তাব গ্রহণ না করা এবং অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগীদের এক বছর মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত) নিয়োগের মাত্র চার মাস পর ৩০ এপ্রিল অব্যাহতি প্রদান করে সংস্থাটির মানবসম্পদ বিভাগ।
অপসারিত আনিকা বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘৪ জানুয়ারি যোগদানের পর বেতন প্রদান করা হলে ১ মাসের পূর্ণ বেতন সংস্থার তহবিলে জমা দিতে আমাদের চাপ দেওয়া হয়। আমরা অপারগতা প্রকাশ করলে পরের মাসে সংস্থার স্বার্থে বেতন অনুযায়ী পারসেন্ট নির্ধারণ করে কিছু টাকা মাসিক বেতন থেকে সংস্থার তহবিলে দেওয়ার কথা বলেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার।’
অপর এক ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন বলেন, ‘আমার নির্ধারিত বেতন থেকে প্রতিমাসে কিছু অংশ সংস্থার তহবিলে জমা না দিলে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা নতুন ৮ জন এই অবৈধ আবদার না মানায় আমাদের অব্যাহতি দেয় ইএসডিও।’
সংবাদ সম্মেলনে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন বলেন, ‘শুধু ইএসডিওই নয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত নোয়াখালী, সিলেট, ঠাকুরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ভিত্তিক এনজিও কক্সবাজারের স্থানীয় চাকরিজীবীদের কাছ থেকে ম্যানেজমেন্ট কস্ট বা সংস্থার তহবিলের জন্য বেতন থেকে কমিশন নেওয়ার নামে হয়রানি করছে। অমান্য করলে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে, আমরা চাই ইএসডিওসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে চাকরি হারানো স্থানীয়দের পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হোক।’
জেলা প্রশাসন, দাতা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ইসএসডিওসহ অন্যান্য এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সমন্বিত মনিটরিং টিম করার দাবি জানান তিনি।
কর্মী অপসারণ প্রসঙ্গে ইএসডিওর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাসুকুল হক মাসুক বলেন, দাতা সংস্থার পদভিত্তিক যোগ্যতা সংক্রান্ত চাহিদা পূরণ করতে ৮ জন কর্মীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে বেতন থেকে কমিশন নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, কমিশন না দেওয়ায় চাকরি থেকে ৮ স্থানীয়কে একটি এনজিও থেকে অপসারণের অভিযোগটি শুনেছি, বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply