অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে গভীর চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছে সুতা উৎপাদনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসােসিয়েশন (বিটিএমএ)। তারা বলছে, পাকিস্তানি সুতা ও কাপড়ে বাজার সয়লাব। দেশটিতে ডলারের বিপরীতে রুপি অবমূল্যায়ন হওয়ায় কম দামে এসব কাপড় ও সুতা দিচ্ছে তারা। আর একটি অসাধু মহল লাগেজ ভরে মাল নিয়ে আসছে। এর বিপরীতে দেশীয় টেক্সটাইল খাত বাজার হারাচ্ছে, সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) ‘টেক্সটাইল খাতে বিরাজমান সমস্যা ও উত্তরণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এ অবিযোগ করেন। এসময় বিটিএমএ পর্ষদের সদস্য ছাড়াও এ খাতের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ২০৩০ সালে টেক্সটাইল ও ক্লথিং থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে খাতাটির এ নাজুক অবস্থা দীর্ঘদিন থাকলে সরকারের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না। তাই সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমাদের দাবি থাকবে ব্যাংকের ঋণের কিস্তি ও সুদ, অন্তর্বর্তীকালীন তথা আগামী ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ব্লক অ্যাকাউন্টে রাখা। একই সঙ্গে পরবর্তী সময় হতে সহজ কিস্তি সুবিধা প্রদানেরও দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ের পর থেকে আমাদের মিলগুলো ঈদুল ফিতরের বাজারটি ফিরে পাবে বলে আশা ছিল। তব তীব্র ডলার সংকটের পরও এসময়ে বন্ডেড ওয়্যার হাউজের মাধ্যমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমদানি করা বিদেশি সুতা শহরের বড় শপিং মলগুলোতে অবাধে বিক্রি করেন, এতে স্থানীয় মিলগুলোর অবস্থা সংকটে পড়ে। পাকিস্তান ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন থেকে আসা সুতা ও কাপড়সহ বিভিন্ন ড্রেস-ম্যাটেরিয়েলও বিভিন্ন নগরীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার ইসলামপুরের বিক্রমপুর প্লাজা, নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, গাউসিয়া, মাধবদি, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে, এতে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। দীর্ঘ দিনে গড়ে ওঠা প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতে বিদ্যমান ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি আজ অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।
নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিয়ে তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় আমাদের বলা হলো নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ থাকবে শিল্পে, কিন্তু আমরা পাইনি। আমাদের সদস্য মিলগুলো অধিকাংশই ভারী শিল্প ও ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ। খাতটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন মেশিনারিজ দিয়ে পরিচালিত। তৈরি পণ্যের, সুতা ও কাপড়ের মান অক্ষুণ্ন ও মানসম্পন্ন ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিংয়ের জন্য মিলগুলো সবসময় চালু রাখতে হয়।
তিনি বলেন, সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছিল না। তাই আমাদের ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনে উৎসাহিত করা হয়। এ লক্ষ্যে আমাদের বিদ্যুৎ জেনারেশনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হয়। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে জেনারেটর এবং গ্যাস সংযোগের জন্য নিরাপত্তা জামানত হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে হয়েছে। অন্যদিকে গ্যাস বিল হিসেবে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়।
Leave a Reply