September 15, 2025, 9:07 am
শিরোনামঃ
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মেয়াদ কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ৪ কোটি ৯০ লাখ শিশুকে দেওয়া হবে টাইফয়েড টিকা ভূমিকম্পে একসঙ্গে কাঁপল বাংলাদেশ-ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৬ দেশে খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা সহায়তা প্রদান দিনাজপুরে গমের জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ বিষয়ক কর্মশালা ভোলায় শিক্ষায় আধুনিকীকরণ শীর্ষক সেমিনার  ফিলিস্তিনর গাজায় পোকার কামড়ে অতিষ্ঠ ইসরায়েলি সেনারা ; ছড়িয়ে পড়ছে চর্মরোগ মুসলিম দেশগুলো মিলে ‘যৌথ অপারেশন সদরদপ্তর’ গঠনের আহ্বান জানাল ইরান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আগে ন্যাটোকে রুশ তেল কেনা বন্ধ  করতে হবে :  ট্রাম্প ইউক্রেনে ড্রোন হামলার প্রেক্ষিতে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করল রোমানিয়া ও পোল্যান্ড
এইমাত্রপাওয়াঃ
বাংলাদেশে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ

কুমিল্লায় আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর এক চা-বিক্রেতা আবদুল খালেকের গল্প

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার একটি গ্রাম নলুয়া চাঁদপুর। নব্বইয়ের দশকেও ওই গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের মানুষদের অধিকাংশ ছিল নিরক্ষর। গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল খালেক নামের এক চা-বিক্রেতা নিজের জায়গায় নলুয়া চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় নামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন।
এই স্কুল প্রতিষ্ঠার গল্প অন্য আর দশটি স্কুলের মতো নয়। এখন আবদুল খালেক এলাকায় আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। প্রায় শতবর্ষী আবদুল খালেকের এখন আর কোনো সহায়-সম্বল নেই। ভাই-ভাতিজাদের সঙ্গে থাকেন আর স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নলুয়া চাঁদপুর গ্রামের পাশেই কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক। ওই গ্রামের মাক্কু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আবদুল খালেক এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালাতে ১৯৯৭ সালে সড়কের পাশে নলুয়া চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
নলুয়া গ্রামের মেতালিব হোসেন ও মজিদ সরকার বলেন, গ্রামের রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকান ছিল আবদুল খালেকের। পরিবারে তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার বাবা কৃষিকাজ করতেন। একসময় বড় ছেলে হিসেবে তার কাঁধে ওঠে পরিবারের জোয়াল। চা-দোকানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে সেই জোয়াল টানতে থাকেন তিনি কিছু টাকা জমিয়ে দোকানের কাছে ৫৪ শতক জমি কিনেন। তারা জানান, এই গ্রামের ৮০ ভাগ লোক ছিলেন নিরক্ষর। কিছু ছেলেমেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়লেও হাইস্কুল দূরে হওয়ায় অধিকাংশ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় এ অবস্থায় এলাকার সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য তিনি জমি দান করে হাইস্কুল করার ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে তার দেয়া জমিতে গ্রামের মানুষ থেকে বাঁশ, কাঠ আর নগদ টাকা চেয়ে এনে গড়ে তুললেন নলুয়া চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষক হিসেবে এগিয়ে এলেন গ্রামের কিছু তরুণ ও স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক। প্রথম দিকে এগিয়ে এসে স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেছিলেন গ্রামের আবদুর রহিম, সিরাজুল হক, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মজুমদার, প্রথম প্রধান শিক্ষক সফিউল্লাসহ এলাকার দানশীল ব্যক্তিরা।
শিক্ষক সফিউল্লা বাসসকে বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে আবদুল খালেক নিঃসন্তান। ১৯৯৯ সালের ২৮ অক্টোবর স্কুল দেখে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী সখিনা বেগম মারা যান। ২০১৫ সালে তার চা-দোকানটি ঝড়ে উপড়ে ফেলে। এখন তার কোনো সহায়-সম্বল নেই। রাতে ভাই-ভাতিজাদের সঙ্গে থাকেন। দিনে তিনি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পড়শীদের সঙ্গে সময় কাটান।
স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল মাঠে লাঠি ভর দিয়ে এক বৃদ্ধ মানুষ কুঁজো হয়ে হাঁটছেন। তার পাশে হাঁটছেন শিক্ষার্থীরা কুঁজো হয়ে গেলেও তিনি একজন দৃঢ়চেতা ও রসিক মানুষ।  তিনি বাসসকে বলেন, আমার বয়স ৯৫ বছর, তবে মনের বয়স ২৭!
তিনি এখনো স্কুলকে ঘিরে নানা স্বপ্ন দেখেন। তিনি চান স্কুলটি সরকারি হোক। তার এলাকার ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষায় আরো অনেক দূর এগিয়ে যাক। আবদুল খালেক বলেন, আমি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়েছি। অভাবের সংসারে বেশি দূর পড়তে পারিনি। স্কুলের জন্য জমি দেয়ায় প্রথম দিকে গ্রামের ও পরিবারের লোকজন আমাকে পাগল বলতো। যেদিন আমার স্ত্রী স্কুল দেখে বললেন, একটি ভালো কাজ করেছেন- সেদিন অনেক আনন্দ পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি শিক্ষার জন্য একটি ফুলের বাগান করে দিয়েছি। এখন শিক্ষক ও এলাকাবাসীর দায়িত্ব এর পরিচর্যা করা। স্কুলটি সরকারিকরণ হলে এলাকার শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে পড়তে পারবে। তিনি স্বপ্ন দেখেন এখানে এক দিন একটি কলেজও প্রতিষ্ঠিত হবে।

আজকের বাংলা তারিখ

September ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Aug    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  


Our Like Page