মানুষের মধ্যে আদর্শিক চেতনার চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ, লাভ-ক্ষতি এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার অনুভূতি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এই যে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতির প্রাধান্য সব জায়গায় জেঁকে বসেছে, এ কারণে আমরা স্বার্থপর এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গেছি। অর্থই যেখানে সুখের একমাত্র চাবিকাঠি সেখানে মনোজগতে দুর্বৃত্তায়ন হওয়াই নিয়তি। এখন রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তি মননে ভয় সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজে একদিকে বৈষম্য অন্যদিকে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করে প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রাখার প্রবণতা প্রবলভাবে জেঁকে বসেছে।
সমাজের বঞ্চিত গোষ্ঠীর মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আওয়াজ বিরাজমান। কিন্তু তারা সেই আওয়াজ বাইরে প্রকাশ করতে পারছেন না। রাষ্ট্রে যদি কোনো জবাবদিহি না থাকে, তাহলে অন্যত্রও জবাবদিহি থাকে না। প্রতিবাদী কণ্ঠ ভয়ের কাছে চুপসে যায়। রাজনৈতিক দিক বিচারে এর দায়ভার শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নয়; সামগ্রিক বিচারে সমাজের জনগণও এর জন্য দায়ী। সমাজের সব মানুষকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু একটি শ্রেণী অপ্রত্যাশিত সুবিধা পেয়ে সমাজের বেশির ভাগ মানুষের অসুবিধার কথা ভুলে যায়। এ ক্ষেত্রে শুধু সাধারণ জনগণই নন, সচেতন ব্যক্তিবর্গের মধ্যেও বিভাজন তৈরি হয়েছে। শাসকগোষ্ঠী ওই মুষ্টিমেয় মানুষকে লোভ দেখান,ভয় দেখান। অনেক বুদ্ধিজীবী লোভের কাছে বশীভূত, অনেকে ভয়ের কাছে নতজানু। তারা সংগঠিতও নন। তার ওপর তারা দলীয়ভাবে বিভক্ত। দেশের মানুষ সরকারের কাজের সমালোচনা রাজপথেও করতে পারছেন না, করলে বাধা, নির্যাতন। সংবাদমাধ্যমে সমালোচনা করলে বিপদ। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে করলে গ্রেফতার।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ পরিস্থিতিকে ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভয়ের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে, সেই ভয়ের মধ্যে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলই নয় বরং সরকারও অধিক ভয়ে আছে। সরকার জনগণকে ভয় পায়। জনগণ যদি সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান তারা ক্ষমতায় যেমন থাকতে পারবেন না, তেমনি বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এ ভয় তাদের গ্রাস করছে।
শাসকদল কৌশলগতভাবে অপরাধের সাথে যুক্ত পুলিশ, সিভিল প্রশাসন কিংবা অন্যান্য সংস্থার লোকজনকে এই বলে ভয় দেখাচ্ছে যে, আমরা ক্ষমতায় না থাকলে তোমাদেরও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে। এ ভয়ে,সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তারা আরো বেশি অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছে। যারা ব্যক্তিগত ভালো-ক্ষতির চিন্তায় পুরো সমাজটাকে ভয় ও অপরাধের কাছে নতজানু করছে তাদের সংখ্যা কম হলেও ভয়ের রাজ্যে তারা ত্রাস। এই স্বল্পসংখ্যক মহারথী গোটা সমাজ নিয়ন্ত্রণ করছেন। সমাজের বাকি লোকদের চলার পথও তারা দেখিয়ে দিচ্ছে। বেশি সংখ্যক সুবিধাবঞ্চিতরা ত্রাসের কারণে কথা বলছে না, পাছে তাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়ে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে জনগণ ভয়ের মধ্যে থাকতে চান না। তারা তাদের সাংবিধানিক অধিকার স্বাধীনভাবে ভোগ করতে চান। তারা স্বাধীনভাবে কথা বলতে চান, নির্ভয়ে, নির্বিঘেœ জীবন চালাতে চান। মূলত এসব অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৫৩ বছর আগে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজন হয়েছিল, তাই সেদিন মানুষ রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে ইজ্জত সম্ভ্রম হারিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু আজকে ৫৩ বছর পরেও সেই একই ভয়ের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। সেই একই বঞ্চনা, নিপীড়ন হজম করতে হচ্ছে। সেই একই অধিকার আদায়ে এখনো সংগ্রাম করতে হচ্ছে, রক্ত ও জীবন দিতে হচ্ছে। কী এক আজব বাস্তবতা! একই রাষ্ট্রে সরকারি দল সভা-সমাবেশ করার জন্য গাড়ি- ঘোড়া, লঞ্চ স্টিমারে আনন্দনৃত্য করে লোক সমাগম করার সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে সব বন্ধ হয়ে যায়। পথে পথে হয়রানি, গ্রেফতার, আক্রমণ মোকাবেলা করে সভা-সমাবেশ করতে হয়। আরেকটি আতঙ্ক হলো, মোবাইল ফোন চেক করা। সন্দেহজনক ছবি পেলে রক্ষে নেই। লাল দালানের বাসিন্দা হতে হয়।
নাগরিক যখন মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে জামিন প্রার্থনা করতে যান তখন সেই আদালত যদি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের কথা ভুলে জামিন না দেন এবং বলেন কে আপনাকে মিছিল মিটিং করতে বলেছে ? এমন ভয়ের সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পাওয়া খুব বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। যেভাবে সমাজের মধ্যে এ ভয়ের সৃষ্টি করা হয়েছে একই প্রক্রিয়ায় তার নিঃশেষ করার ব্যবস্থাও আছে।
পৃথিবীর রাজনীতির ইতিহাস বলে,কোনো সমস্যার সমাধান আইনি প্রক্রিয়ায় শুরু হলে তা একই প্রক্রিয়ায় শেষ হয়। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শুরু হলে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় শেষ করা যায়, আর বল প্রয়োগের মাধ্যমে শুরু হলে তা বলপ্রয়োগ দিয়ে শেষ করতে হয়। সামাজিক বোধোদয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় আনাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ঘোষণা দিতে হয়।
একটি নিরপেক্ষ সরকার কেন দরকার সেই বিষয়ক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গীয় সাহিত্য সভা। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এই আলোচনায় অংশ নেয়ার মুক্ত আহ্বান ছিল কবি,শিল্পী-সাহিত্যিক এবং বুদ্ধিজীবীদের প্রতি। দেশ নিয়ে যারা ভাবেন তাদের স্বতঃস্ফূর্ত দায়বোধ থেকেই এ আয়োজন তাতে সন্দেহ নেই। আয়োজকরা ভেবেছেন,যারা বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তায় নিয়োজিত যাদের আমরা নাগরিক সমাজ (সিভিল সোসাইটি) বলি, তারা অন্তত যোগ দেবেন। হয়তো ভেবেছেন, নাগরিক সমাজের সদস্যদের পর্দার অন্তরালে থাকার সুযোগ আর নেই। নাগরিক সমাজ এই সময়েও ভীতসন্ত্রস্ত বা নিস্পৃহ-নির্বিকার থাকবে,এমনটি ভাবনায় নেয়া ঠিক হবে না। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোথাও সিভিল সোসাইটি ‘কানে দিয়েছি তুলো, পিঠে বেঁধেছি কুলো’ অবস্থানে নেই। আসলে শিল্পী-সাহিত্যিক-চিন্তক বুদ্ধিজীবীদের দেশভাবনা দুনিয়ার কোথাও কখনও থেমে থাকে না। ভাবনাগুলো প্রকাশের আগেপিছে ‘ভয়’ নাগরিক সমাজের সদস্যদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে রাখে। যারা লেখালেখি করেন, তারা এখন ‘সেলফ-সেন্সরশিপ’ নামের পরাবাস্তব অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত। চাঁছাছোলা লেখালেখির কারণে সরকারের কোপানলে পড়ে দেশ ছেড়েছেন অনেকে। একটি সরল বাক্য লিখতে গিয়েও ভয় পান। কারণ, বাক্যটির ভুল ব্যাখ্যা হতে পারে বা শাসকরা ভুল ব্যাখ্যা করতে চাইলেই করতে পারে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের গিলোটিন মাথার ওপর। লিখতে বসে সত্তরবার একটি বাক্য কাটাছেঁড়া করা আর কলম কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলার চাইতে না লেখাই ভালো। তাই কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিকের লেখায় ধার নেই। কার্টুনিস্টরা কার্টুন আঁকা ছেড়েছেন। চিত্রকররা প্রতিবাদী আঁকাআঁকি ছেড়েছেন। সবার সামনে অসংখ্য উদাহরণ লেখায়-আঁকায়-কথায় পান থেকে চুন খসার পরিণাম কী হতে পারে। সাবেক সেনাশাসক এরশাদের ‘স্বৈরশাসন’কালেও কামরুল হাসান কার্টুন এঁকেছিলেন ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’।
ভয় সংক্রামক। সাংবাদিকরা নাগরিক সমাজের প্রথম সারির সদস্য। তাদের কি কোনো ভয় দেখানো হয়েছে? নাকি তারা নিজেরাই অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিতে ভয় পেয়েছেন? এই স্বতঃস্ফূর্ত, স্বতঃপ্রণোদিত ভয় কোথা থেকে আসে, কেন আসে,সেই প্রশ্নটি করার দায়িত্বও নাগরিক সমাজের। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সিভিল সোসাইটির সেরা অংশ মনে করা হয়। নাগরিক সমাজের কোনো উদ্যোগে এই সময়ে (এক-দুইজন হাতেগোনা সুপরিচিত অ্যাক্টিভিস্ট শিক্ষককে বাদ দিলে) প্রায় কেউই অংশগ্রহণ করেন না। কারণ সুস্পষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দলীয়করণ, শিক্ষকদের ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে মাত্রাছাড়া নীতি-নৈতিকতাবর্জিত অংশগ্রহণ,পদ-ক্ষমতা-আর্থিক সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদির সমন্বয়ে সিংহভাগ হয়ে আছেন বশংবদ। ভিন্নমতের সংখ্যালঘুরা ভয়ভীতিতে ডুবে থাকেন।
এগুলো আক্ষেপ। হতাশার ক্লান্তিকর প্রকাশ। আক্ষেপ বা হতাশায় মাথা চাপড়ানোও সিভিল সোসাইটির দায়িত্বের অংশ নয়। তারা দিগ্দর্শক ও দিগ্দর্শন। তারা পথপ্রদর্শক। যা সত্য তাকে সত্য বলা, যা উচিত তাকে উচিত বলাই তাদের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি করে তোলে। নব্বইয়ের গণভ্যুত্থানে এরশাদের বিদায় এবং গণতন্ত্রের সম্ভাবনা নির্মাণের পেছনে সিভিল সোসাইটিই ছিল সবচেয়ে বড় অনুঘটক। ১৯৯০ সালের আগস্ট থেকে শুরু করে শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, আবৃত্তি শিল্পীগোষ্ঠী এবং নারীদের প্রায় সব ধরনের সংগঠন সরকারের অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সারাদেশে গণনাটক, পথনাটকের জোয়ার বইয়ে দিয়েছিল। ভোটের অধিকার গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত এবং এই বিষয়ে কোনোই ছাড় নেই, ধারণাটি সেই সময়ে জোরদার হয় সিভিল সোসাইটির দ্বারাই। ১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সব শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন। সাংবাদিকরা টানা ৯ দিন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেননি। নভেম্বরের শেষ দিনে সংবাদকর্মী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সংবাদপত্র মালিক সমিতিও লাগাতার ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন। সে সময় বুদ্ধিবৃত্তিক পেশাজীবীরা জনমনে সম্মান, আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। পথপ্রদর্শক হিসেবে সম্ভাবনা ও প্রত্যাশার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময় প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাওয়া নাগরিক সমাজ ২৩ বছর পর সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার বদলে উল্টো মৃতপ্রায় হয়ে ওঠা কী ইঙ্গিত দেয়?
১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ভাষাতত্ত¡ সমাজ, বাংলাদেশ বাংলা শিক্ষক সমিতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ যৌথভাবে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বক্তৃতামালা’র আয়োজন করে। প্রবন্ধের বিষয় ছিল বাঙালি জাতি, বাংলা ভাষার ক্রমবিকাশ, বাংলার সংস্কৃতি, লোকসংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। সেখানে অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক ‘বাঙালি জাতি’ শিরোনামে একটি সুদীর্ঘ ও সুলিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন। প্রবন্ধে তিনি বাঙালির চরিত্র বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে লেখেন, ‘বাঙালির জাতীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে দেশী এবং বিদেশী সব ঐতিহাসিকই মূলত দুটি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছেন। এক. বাঙালি কল্পনা-প্রবণ, ভাবালু, সৌন্দর্যানুরাগী, স্পর্শকাতর, দুর্বলচিত্ত, আরামপ্রিয়, অলস, চিন্তাশীল, ভাবুক, কবি-স্বভাব, ইত্যাদি। দুই. বাঙালি কলহপ্রিয়, ঈর্ষাপরায়ণ, পরশ্রীকাতর, অদূরদর্শী, ভীরু, সাহসহীন, স্ত্রীস্বভাব, হুজুগে ইত্যাদি। প্রথমটি বাঙালির গুণের দিক আর দ্বিতীয়টি দোষের দিক হিসাবে বর্ণিত হয়েছে।’
প্রবন্ধকার বলেছেন, প্রথমটি গুণের দিক হিসাবে বর্ণিত। আমাদের জানা নেই, দুর্বলচিত্ত, আরামপ্রিয়, অলস এগুলোও কী করে গুণবাচক বৈশিষ্ট্য হতে পারে। তবে একেবারে শেষে গিয়ে প্রবন্ধকার বলেন, ‘আমাদের স্মরণ রাখা উচিত যে, জাতীয় চরিত্র বা জাতীয় বৈশিষ্ট্য অমোঘ নিয়তির মতো কোনো দুর্লঙ্ঘ্য ব্যাপার নয়; জাতীয় সাধনা ও জাতীয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতীয় চরিত্র বা জাতীয় বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব এবং পৃথিবীর অনেক জাতি তা করতে সক্ষমও হয়েছে।’
এক সময়ের নোটোরিয়াস ইউরোপ কিভাবে দৃশ্যত আজকের সভ্য জগতের উদাহরণ হয়ে উঠেছে তাও সবার জানা। কিন্তু সমস্যা হলো, বাঙালির চরিত্রে সভ্যতার ছোঁয়া কতটা লেগেছে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্দেহের কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনাচরণে নিহিত। আমাদের শিক্ষায়, জীবনযাপনে, রাজনীতিতে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে কোথাও কি জীবনকে সুন্দর করার, উন্নত করার, মহত্তর করে তোলার সামান্য আয়োজনও আছে? হ্যাঁ, ছিল একসময়। আমাদেরই লেখকেরা এসব বিষয় নিয়ে প্রচুর লিখেছেন। তবে এখন সে সব নির্বাসনে। আর তাই জেগে ওঠার এখনই সময়।
লেখক : এম এ কবীর, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি।
Leave a Reply