অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের আবিষ্কারক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল উদ্বোধন এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার মাতারবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে পরিচয় করে দিয়েছেন। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর এখন দৃশ্যমান। তিনি দেশকে স্বপ্নের জায়গায় নিয়ে গেছেন। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও বেশি শক্তিশালী হবে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর দক্ষিণ এশিয়ার সিম্বল হয়ে থাকবে।
দেশের অর্থনীতিতে দুই থেকে তিন বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের তুলনায় পণ্য পরিবহন খরচ ১০ থেকে ২০ ভাগ কমে আসবে। অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত সূচিত হবে। বিপুল সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে। ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। আমরা গর্ব করে বলতে পারব বাংলাদেশে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর আছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে।
দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর হবে মাতারবাড়ি এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে টানাপোড়েন দূর করেছেন শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক হাব হবে মাতারবাড়ি। এখানে সড়ক যোগাযোগ আছে। ভবিষ্যতে রেল যোগাযোগ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। মাতারবাড়িকে সিঙ্গাপুরের মতো করতে গেলে যা যা দরকার সবই করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকলে সব কিছু সম্ভব। চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনীতির লাইফ লাইন, মাতারবাড়ি বন্দরও হবে প্যারালাল অর্থনীতির লাইফ লাইন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়িতে শুরু হয়েছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ি টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ১৬ মিটার বা ততোধিক গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে সক্ষম হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করবে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পার্শ্বে ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পার্শ্বে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দর সুবিধাদি নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউস (বিশ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ হতে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ অংশে ২৭.৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে মাতারবাড়ি বন্দরের সাথে ন্যাশনাল হাইওয়ের সংযোগ স্থাপন করার কাজ চলমান।
Leave a Reply