অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শর্ত সাপেক্ষে কিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়ার আলেমদের শীর্ষ সংগঠন ‘দ্য রাশিয়ান উলেমা কাউন্সিল’। বিদায়ী বছরে উলামা কাউন্সিলের শেষ বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই ফতোয়া ঘোষণা করেন মুফতি ইলদার আলিয়াউতদিনভ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাজধানী মস্কোয় সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর আরটি এবং রুয়েটির’র।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি ইলদার বলেন, মুসলিম সম্প্রদায় ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করতে পারবেন। এটি মুসলমানদের জন্য হারাম নয়। তবে এর জন্য কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। শর্তানুযায়ী কিপ্টোকারেন্সিকে অবশ্যই পণ্য, মুদ্রা বা আর্থিক সম্পদ হওয়ার গুণাবলি থাকতে হবে।
উলামা কাউন্সিলের ফতোয়ার কথা উল্লেখ করে মুফতি ইলদার জানান, মুসলমানদের নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রচার এবং বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। উলামা কাউন্সিল সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে একটি ডিক্রি গ্রহণ করেছে।
মুফতি ইলদার আলিয়াউতদিনভ আরও বলেন, প্রযুক্তি মানুষের জীবনমানকে উন্নতির দিকে পরিচালিত করে। এই কারণেই তারা কিপ্টোকারেন্সির প্রচলন এবং বিনিয়োগের অনুমতির পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে বেশ কয়েকটি প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে। অনুমোদনযোগ্য হওয়ার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি অবশ্যই একটি পণ্য, মুদ্রা বা আর্থিক সম্পদ হতে হবে।
মুসলিম আইনে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত। কিছু আলেম এর ব্যবহার অনুমোদন করেন, যেহেতু এটি সুদ তৈরি করে না। আবার কিছু আলেম এর বিরোধিতা করেছে। কারণ, তারা মনে করছেন এটি জুয়ার সমান এবং এটি অস্তিত্বহীন, যার কারণে এটি প্রতারণার সুযোগ তৈরি করে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে।
তবে মুফতি ইলদার বলেন, তারা জার্মানি, তুরস্ক, জর্ডান এবং মিশরের ইসলামিক বিশেষজ্ঞগণ মুসলিমদের ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রচার এবং বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য দেশগুলোর আলেমদের পরামর্শ দিয়েছেন।
এছাড়া আবাসন লোন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক লোন নিয়ে বাড়ি নির্মাণ বা বন্ধকী ঋণের বৈধতা সম্পর্কে উলামা কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও আলোচনা করবো। আমরা প্রতিটি বিষয়ে স্পষ্ট করতে চাই। তারপরও একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাই।
ওলামা কাউন্সিল হলো রাশিয়ার ‘ইউনিয়ন অফ দ্য মুসলিমস অফ রাশিয়া’ এবং ‘রাশিয়ান কাউন্সিল অফ মুফতিস’ এর সমন্বয়ে গঠিত দেশটির স্থানীয় মুসলিমদের নেতৃত্বদানকারী শীর্ষ সংগঠন। সংস্থাটির ২০২৩ সালের শেষ বৈঠকে ইসলামী আইন এবং শরিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাংকিং, পারিবারিক আইন এবং ব্লকচেইনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়।