শুক্রবার (৩১ মে) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিরসনে করণীয় বিষয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এই ছায়া সংসদ আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কেউ তাঁর সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করেই ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ বাদ দেওয়ার পরিবর্তনটি করা হয়েছিল বলে জানান আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘পাসপোর্টকে আরও মানসম্পন্ন করা এবং খরচ কমানোর জন্য জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান এই কাজটি করেছে বলে আমাকে জানানো হয়েছিল।’
যদিও ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ছয় মাস আগে নতুন পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। কোনো মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিষয়টিকে নিয়ে নানা আলোচনা চালাচ্ছে। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ‘নিউজটা বের করেছেন এমন সময়, যখন ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাতটা হলো। সেটা যখন তুঙ্গে, এই সময় কোনো স্বার্থন্বেষী মহল এটা জোরেশোরে তুলে ধরলেন। কবে আমরা এটা করেছি। আর হঠাৎ করে এটা নিউজ হয়ে আসলো।’
তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সময় সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি শোনার পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন কল করে জানতে পারেন ছয় মাস আগে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বিবিসিকে বলেছিলেন, এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এক বছর আগে এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করা হয়েছে ছয় মাস আগে।
বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কথাটি ২০২১ সালের মে মাসের দিকে নতুন ই-পাসপোর্টে বাদ দেওয়ার কথা জানা যায়। এ নিয়ে ওই সময় ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন তখন আরও বলেছিলেন, নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকার কারণে বাংলাদেশিরা ইসরায়েলে যেতে পারবে না।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যখন বাংলাদেশের পাসপোর্টের পরিবর্তনের বিষয় তুলে ধরে টুইট করা হয়, তখনই বিষয়টি নজরে আসে। এর জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বক্তব্যও দেওয়া হয়। বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন নেই। বাংলাদেশ দুই রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে।
যদিও মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে স্বাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার লিখিতভাবে ইসরায়েলের স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে। সেই থেকেই ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের পক্ষে বাংলাদেশ অবস্থান।
শুক্রবার ছায়া সংসদের সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী। ‘মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজ দলের বিপক্ষে জয়ী হয় স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ দল। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ঝুমুর বারী, এ কে এম মঈনুদ্দিন, একরামুল হক ও মাসুদ করিম। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
Leave a Reply