27 Nov 2024, 12:12 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গ–সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আইনি মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠায় আইন মন্ত্রণালয়।

আজ দুপুরে আইনি মতামত দেওয়ার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এই দলগুলো নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা আর এই নামে রাজনীতি করতে পারবে না।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় সভায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন ওই জোটের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হলো।

আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া এখন বিপদের কারবার। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কিছু বললে আবার রাইটস টু ফ্রিডম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবীর আদালত অবমাননার মামলার শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আজ এই মন্তব্য করেন।
সাত আইনজীবীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
সাত আইনজীবীর বিষয়ে দিন পিছিয়ে ২২ আগস্ট ধার্য করে আজ আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
গত ১২ জুন সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবীকে আদালত অবমাননার মামলায় ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
সাত আইনজীবী হলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফাহিমা নাসরিন, মো. আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও গাজী কামরুল ইসলাম। এই সাত আইনজীবী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিভিন্ন গুরুত্বাপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের দুইজন বিচারপতি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে এই সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা।
শুনানি নিয়ে গতছর ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে আদালত অবমাননার আবেদনে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সে বিষয়ে নিজেদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে এই সাত আইনজীবীকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টায় আপিল বিভাগে (১ নম্বর কোর্টে) হাজির হতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ধার্য তারিখে তারা আদালতে হাজির হন।
আদালত অবমাননার আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে গত বছরের ২৭ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করা হয়। বিচারপতিদের নিয়ে ব্যানার-লিফলেটসহ বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের মিছিল-অবস্থানের ছবিও আবেদনে যুক্ত করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়া এখন বিপদের কারবার : প্রধান বিচারপতি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক সেক্রেটারি জেনারেল স্টেফানো সানিনো বলেছেন, ইইউ বাংলাদেশের সাথে রয়েছে। সংকট উত্তরণেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহযোগিতা করবে।
আজ বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে সাক্ষাতে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত মাহবুব সালেহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৮ সালে সরকারের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত, সাম্প্রতিক সময়ে রিট ও শেষে সর্বোচ্চ আদালতের রায়সহ ঘটনাপ্রবাহ সবিস্তারে উল্লেখ করেন।
হাছান মাহমুদ জানান, দুর্বৃত্তরা অসৎ উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে, যা অনেক ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। যারা হত্যাকান্ড, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে  বিচারের আওতায় আনা হবে।
সেক্রেটারি জেনারেল স্টেফানো সানিনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হতাহত ও হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যাক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে ও দ্রুত বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে বলেন, ‘সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং আন্তরিক।’
হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবদান ও বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে একসঙ্গে কাজ ত্বরান্বিত করার আশা প্রকাশ করেন।

সংকট উত্তরণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পাশে রয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্টেফানো সানিনো

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   বাংলাদেশের বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আজ (বৃহস্পতিবার ১ আগস্ট) ১ টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তাদের ডিবির গাড়িতে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এর আগে সকালের দিকে আটক সমন্বয়কদের পরিবারের লোকজনকে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়। ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) আজহার মুকুল ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।

ছয় সমন্বয়ক হলেন- মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।

এর আগে গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে শনিবার (২৭ জুলাই) মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকেও ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।

ডিবির দাবি, তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই তাঁদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এরপর থেকে তাঁরা মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আছেন।

এরপর রোববার (২৮ জুলাই) রাতে ডিবি হেফাজতে থেকেই সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। তাদের সই করা লিখিত বার্তায় বলা হয়, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত-নিহত হয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।’

এদিকে, ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে গত সোমবার হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন দুই আইনজীবী। তাঁরা হলেন আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার রিটের ওপর হাইকোর্টের এই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি হয়। আদালতের গতকালের কার্যতালিকায় রিটটি আদেশের জন্য ১০ নম্বর ক্রমিকে ছিল।

আদালত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, অসুস্থতার কারণে বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়েছেন। এ জন্য গতকাল শুনানি হয়নি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করল ডিবি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের ৯ তলায় পুলিশ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আদাবর থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম শুয়ে কাতরাচ্ছেন। তার পুরো শরীরেই গুরুতর আঘাতের চিহ্ন,কোথাও কোথাও নীল হয়ে ফুলে ওঠা জখম। মাথা ও কানে মোট সেলাই পড়েছে ৪৭টি। ১৯ জুলাই সকাল ১০টায় তিনি আদাবর থানায় দায়িত্ব শেষ করে পায়ে হেঁটে কাচপুরের বাসায় সিভিল ড্রেসে ফিরছিলেন। যাত্রাবাড়ী থানাথীন কাজলা এলাকায় পৌঁছালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ৪-৫ জন তার পথ রোধ করে হাতে থাকা শপিং ব্যাগ চেক করে তার সরকারি ইউনিফর্ম দেখেই ‘পুলিশ পেয়েছি’ বলে মধ্যযুগীয় কায়দায় রড,লাঠি,হকিস্টিক দিয়ে নির্মমভাবে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। এক পর্যাযে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
বুধবার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমনই মর্মস্পর্শী দৃশ্য।
রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বাসসকে জানান,এই হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৩৭৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়ে ভর্তি হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ছিলেন ৮৯ জন, আইসিউতে ৪জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখানে চিকিৎসাধীন মাসুদ পারভেজ নামে একজন মারা গেছেন। এখনো এই হাসপাতালে ২৭ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে এখানে ১৭ জনের অপারেশন হবে। সব মিলিয়ে সারাদেশে সহিংসতায় ১ হাজার ১৩১ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহত হন।
এ আন্দোলনে প্রাণ হারান তিন পুলিশ সদস্য। তারা হলেন-ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের(ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগের নায়েক গিয়াস উদ্দিন,নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই মোক্তাদির।
রফিকুল ইসলামের পাশের বিছানায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ট্রাফিক ওয়ারি জোনের পুলিশ সার্জেন্ট সৈয়দ মাসুদুর রহিম। তাঁর ভেঙেছে ডান হাত,মাথায় ১১টি সেলাই। ঘটনার দিনের দুঃসহ নৃশংস স্মৃতি বাসসের এই প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরতে গিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আহত পুলিশ সার্জেন্ট রহিম।
তিনি বলেন,১৯ জুলাই সকালে ওয়ারিতে আমার স্পেশাল অন ডিউটি ছিল। ডিউটিতে যাওয়ার জন্য আমি আফতাব নগরের সি-ব্লকের বাসা থেকে বের হয়ে ই-ব্লকে পৌঁছলে আমাকে কয়েকজন আন্দোলনকারী পথ রোধ করে,তারা বলে সামনে যাওয়া যাবে না,আমি তাদের বললাম ভাই আমার তো ডিউটি আছে। তারা আমার ওপর ক্ষেপে গেল- এসময় আমি বিপদ বুঝতে পেরে মোটর সাইকেল ঘুরিয়ে বাসায় ফেরার চেষ্টা করলে কেউ একজন পেছন থেকে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে। পরে আমি মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌঁড়ে পাশের একটি ডাচবাংলা ব্যাংকে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেখানের কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারিনি। এসময় আন্দোলনকারীদের কেউ একজন আমার মাথার হেলমেট খুলে ফেলে এবং তারা আমাকে লোহার রড,বাঁশের লাঠি,হকিস্টিক দিয়ে এলোপাথারি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে ব্যাংকের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। তারা যাওয়ার সময় আমার মোটরসাকেলটি পুড়িয়ে দেয়। খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির আরেক পুলিশ সদস্য মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৮ জুলাই রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের(বিটিভি) সামনে মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম স্যারের নেতৃত্বে আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। আমরা রামপুরা ব্রীজ থেকে একটু এগিয়ে গেলেই আন্দোলনকারীরা ককটেল নিক্ষেপ করলে আমার বাম হাতে লেগে ঝলসে যায়। এসময় ইটের আঘাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এসময় আন্দোলনকারীরা আমাকে এলাপাথারি পেটাতে থাকে। আমার মাথায় ১৪ টি সেলাই লেগেছে। রামপুরায় ডিউটির সময় অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। কারো হাত ভেঙেছে,কারো চোখে ইটের আঘাত লেগেছে। ১৮ জুলাই রামপুরা বিটিভি ভবনের সামনে ডিউটি ছিল কনস্টেবল সোহেল মিয়ার। তিনি জানালেন- ‘আন্দোলনকারীরা এক পর্যায়ে তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। আমাকে হঠাৎ পেছন দিক থেকে হামলা করে এলোপাথারি মারতে থাকে। এসময় ওরা বলে পুলিশ পাইছি মার মার- একবারে মেরে ফেল’। আমি এক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে আমার সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার মাথায় ও হাতে ৪০টি সেলাই লেগেছে।

 

ডিএমপির সদ্য বদলীকৃত অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ বলেছেন,যারা পুলিশকে হত্যা করেছে,সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে,স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে,যারা এসবের নেতৃত্ব দিয়েছে,অর্থ আদান-প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেখানেই থাকুক না কেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ডিবি প্রধান বলেন,গত ২৮ অক্টোবরে আমরা রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও বিচারপতির বাসভবনে হামলার চিত্র দেখেছি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এর আড়ালে আমরা দেখলাম রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও পুলিশকে টার্গেট করা হয়েছে। পুলিশ মারতে পারলেই ১০ হাজার টাকাও তারা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

রাজারবাগ হাসপাতালে সহিংসতার চিহ্ন নিয়ে কাতরাচ্ছে পুলিশ 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দমন-পীড়ন, ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গাইবান্ধায় ‘রিমেম্বারিং দ্য হিরোস কর্মসূচি’ পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার কাদির এন্ড সন্স তেলের পাম্পের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে আদালতের সামনে যায়। কিন্তু আদালতের মূল ফটক আটকে দিয়ে আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ সদস্যরা। সেখানে বাধার সম্মুখীন হলে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পুরাতন জেলখানার গোলচত্বরের দিকে রওনা হয়। কিন্তু গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মিছিলটি আবারও বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।

প্রায় একঘণ্টা পর বিক্ষোভকারীরা আবারও গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সড়কের দুই পাশে শত-শত যানবাহন আটকা পরে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দিয়েছে জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের বেশকিছু আইনজীবী ও স্থানীয় অভিভাবক।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভকারীরা একত্রিত হয়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করতে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

 

 

কোটা আন্দোলন ; গাইবান্ধায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক গোপালগঞ্জ  জেলার মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আপন দুইভাই নিহত ও অটোরিক্সা চালক আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ডোমরাকান্দি নামক স্থানের লাম-মিম হোটেলের সামনে ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্টো ব-১১-৮৫৭৪)  এবং একই দিক থেকে আসা ট্রাক (ঢাকা মেট্টো: ট- ১৩-০০৬৭) অটোরিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী আপন দুইভাই বশার শেখ (৪০) ও খায়ের শেখ (৩৫)  নিহত হন। এছাড়া, অটোরিকশা চালক হাসান শেখ (২৮) গুরুতর আহত হন।
পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে এবং আহত অটোরিকশা চালককে চিকিৎসার জন্য রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করে। নিহতরা উপজেলার বিশ্বম্ভরদী গ্রামের রাহেন শেখের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
মুকসুদপুর থানার ওসি আশরাফুল আলম জানান, বরইতলা থেকে রাজৈরগামী ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সাকুরা পরিবহন এবং একই দিক থেকে আসা ঢাকাগামী একটি ট্রাকের মাঝখানে পড়ে যায় এবং দুর্ঘটনা ঘটে। এতে করে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা যাত্রী আপন দুইভাই নিহত হন এবং চালক গুরুতর আহত হন।
পুলিশ,  লাশ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছে এবং আহত অটোরিকশা চালককে চিকিৎসার জন্য রাজৈর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি, তবে ঘাতক বাস ও ট্রাক আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইভাই নিহত