22 Feb 2025, 10:20 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশে কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টিতে। গত দুই বছরে এমন হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ১৬ হাজার। কেবল ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটিপতি হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৭ হাজার ৯৭০টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানত ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪টি। এসব হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ১০ কোটি টাকা। এরমধ্যে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি হিসাবে। শুধু কোটি টাকার ওপরে এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ১২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। আর কোটি টাকার ওপরে এক লাখ এক হাজার ৯৭৬টি হিসাবে জমার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার বেশি আমানতের হিসাব ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯৫ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।

অন্যদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ১৬৭টি। যেখানে জমার পরিমাণ এক লাখ ৮০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটির ১১ হাজার ৯৪৫টি হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

এছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা রয়েছে তিন হাজার ৮৪৫টি, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১৮৩৩টি, ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ১৪৩টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৮৮৭টি আমানতকারীর হিসাব।

আর ৩০ কোটি থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৭২টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩১৫টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৫৭৭টি। তাছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা এক হাজার ৭৬২টি। এসব হিসাবে দুই লাখ ২৯ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা জমা রয়েছে।

 

বাংলাদেশে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬ কোটিপতির ব্যাংক হিসাব চলমান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্বাধীনতার সময় আমির আলীর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। তার বাবা অসিম উদ্দিন ছিলেন দিনমুজুর। বাড়ি-ঘর ছিল না তাদের। আমির আলীর জীবন কেটেছে মানুষের বাড়িতে আশ্রিত থেকে। যুদ্ধের সময় বাবার সঙ্গে বিভিন্ন জনের বাড়িতে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।

তারপর দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যে আমির আলী মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করতে পারেননি। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্বাধীন দেশেও নিজের একটা ঘর ছিল না তার। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কল্যাণে এখন নিজের ঘর হয়েছে আমির আলীর। নিজের একটা স্থায়ী আবাসস্থল পেয়ে তিনি মুক্তির আনন্দ লাভ করেছেন। খুশি হয়ে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনে হচ্ছে ৫২ বছর পর স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পেলাম।

আমির আলীর বয়স এখন প্রায় ৬৭ বছর। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার বসবাস। বড় ছেলে দিনমজুর ও ছোট ছেলে রিকশাচালক। বিয়ের পর থেকে পরিবার নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন তিনি।

আমির আলী বলেন, দেশ স্বাধীন হলো, বিয়ে করলাম, সংসার হলো। বাড়ি-ঘর না থাকায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকতাম। নিজে একটি রিকশা কিনে চালানো শুরু করলাম। তবে দিন এনে দিন খাওয়া সংসারে যে আয় হতো তা দিয়ে নিজের একটা ঘর আর করতে পারিনি। ২০০৪ সালে আমাকে রাস্তায় বেঁধে রিকশাটিও নিয়ে যায় দুষ্কৃতিকারীরা। পরে আর রিকশা কিনতে পারিনি। তাই দিনমুজুরের কাজ শুরু করি। সারাদিন কৃষি শ্রমিক হিসেবে যে আয় হতো তা দিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিন চলছিল। আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার পর স্ত্রী পৈত্রিক সূত্রে সামান্য কিছুর জমির মালিক হয়। কিন্তু স্ত্রীর ভাইয়েরা মিলে সেই জমির অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়।

আমির আলীর ছেলে ফুল মিয়া বলেন, গৃহহীন হওয়াটা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। স্থানীয়রা আমাদের বিভিন্নভাবে অবহেলা করতো শুধু ঘর-বাড়ি না থাকার কারণে। এখন প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে ভিটে মাটির ব্যবস্থা হওয়ায় পরবর্তী প্রজন্ম ভূমিহীন অপবাদ মুক্ত হলো।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, আমির আলীরদের কষ্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুভব করেছেন বলেই তাদের জন্য গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়াপাড়া গ্রামে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। তারা এখন গৃহহীনের অপবাদমুক্ত। নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪২টি পরিবারের পাশাপাশি গাজীপুরে এ পর্যন্ত ১৮১৭টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ২২ মার্চ গাজীপুর জেলাকে গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন ।

 

 

সরকারী ঘর পেয়ে ৫২ বছর পর স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পেলেন গাজীপুরের আমির আলী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ‘আগে ভাঙ্গা ঘরে থাকছি বৃষ্টি আইলে মাতায় পানি পড়ছে, ঘর পাওনের পর ওহন আরামে ঘুমাই’ এভাবেই কথাগুলো বললেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়নের শেকেরকুড়া গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মানিকজান বেওয়া (৭০)। একই আশ্রয়নের অপর বাসিন্দা জয়তন নেছা (৬৫) বলেন, একটা ঘরের লাইগা কত কানছি, ওহন ঘর পাইয়া খুব খুশি অইছি। আল্লাহ শেখ হাসিনারে অনেক দিন বাঁচাইয়া রাহুক’।
মানিকজান বেওয়া ও জয়তন নেছা মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রীর ঘর পেয়ে যেন মহা খুশি। জয়তন নেছা আগে ঢাকায় বাসা বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতেন। বছরে দুই একবার গ্রামে আসলে মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে থাকতেন। আর মনে মনে ভাবতেন এখন বয়স বাড়ছে অন্যের বাড়িতে আর কত দিন থাকবেন। নিজের একটি মাথা গুজার ঠাঁই দরকার। তাই শেষ বয়সে নিরপদে থাকার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে ঘর চাইলে পেয়ে যান মুজিব বর্ষের প্রধান মন্ত্রীর উপহারের ঘর। শুধু মাইনকজান আর জয়তন নেছা নন। উপজেলার এমন ৬৯৫টি ভুমি ও গৃহহীন পরিবার  মাথা গুজার ঠাঁই পেয়ে আনন্দিত হয়েছেন।

সূত্রে জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে নালিতাবাড়ী উপজেলাকে ভুমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার লক্ষে এ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৬৯৫টি পরিবারের মাঝে ২ কক্ষ বিশিষ্ট, ১টি বারান্দা, ১টি  টয়লেট ও ১টি রান্নাঘরসহ সেমিপাকা ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৬৩টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০টি, তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ৫০টি, তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ৫৭টি ও চতুর্থ পর্যায়ের ৪৭৫টি সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বুধবার (২২ মার্চ) নালিতাবাড়ী উপজেলাকে ভুমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, নালিতাবাড়ী উপজেলায় কয়েকটি ধাপে ৬৯৫টি পরিবারের মাঝে মুজিবর্ষের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই উপজেলাকে ভুমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, নালিতাবাড়ীতে বুধবার চতুর্থ পর্য়ায়ের ৪৭৫টি ঘর প্রধান মন্ত্রী সারাদেশের ন্যায় একযোগে উদ্বোধন করবেন। এ উপজেলাকে ভুমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার জন্য আরো ২২০টি পরিবারের মাঝে মুজিব বর্ষের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব মিলে এ উপজেলায় মুজিবর্ষের ঘর পাচ্ছেন ৬৯৫টি পরিবার। এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলাকে ভুমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত  ঘোষণা করতে সকল প্রস্তুতি চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে ইউএনও জানান।

 

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ৬৯৫ গৃহহীন পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৩৪ জেলে পরিবারকে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এই উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ অধ্যক্ষ মো. মহিব্বুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এসএম রাকিবুল আহসান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনা পারভীন সীমা। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় এসব জেলে পরিবারকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য এই বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।

 

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বিকল্প কর্মসংস্থানে ৩৪ জেলে পরিবারকে গরুর বাছুর প্রদান

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারত থেকে জ্বালানি আনতে ‘ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনকে’ দুই দেশের জন্য একটি মাইলফলক অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ভিডিও কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে এ পাইপলাইনের উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

পাইপলাইনটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ভারত থেকে পাইপলাইনে বাংলাদেশে তেল আশা শুরু হলো। আগে রেলে ওয়াগনে ভারত থেকে তেল আসতো বাংলাদেশে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন আমাদের দুই বন্ধু প্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা উন্নয়নের একটি মাইলফলক অর্জন। এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।

আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ পাইপলাইনের মতো আগামী দিনেও আরও সফলতা বাংলাদেশ-ভারত উদযাপন করবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে আমরা একই সঙ্গে কাজ করবো।

এই পাইপলাইনের সুফলের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ চালুর ফলে দুই দেশের জনগণ নানাভাবে উপকৃত হবে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যখন বিশ্বের অনেক দেশ জ্বালানি সংকটের মুখোমুখি। এই পাইপলাইনটি আমাদের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, এই পাইপলাইনে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে ব্যয় ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। উত্তরাঞ্জলের ১৬ জেলায় ডিজেলের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালের আঠারো সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আমি, আমরা ভার্চ্যুয়ালি এই প্রকল্পের কাজ শুরু করি। ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অংশে পড়েছে ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার, ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার।

প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, ভাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমাদের হাজার বছরে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবাধ প্রবাহ। ঐতিহাসিক ও ভৌগলিক সেতুবন্ধ দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ট থেকে ঘনিষ্টতর করেছে।

ক্রমাগত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতা আরও গভীর হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক সম্ভবনাকে আমরা বাস্তবে রূপদান করেছি। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সমস্যগুলো একে একে আমরা সমাধান করেছি। যোগাযোগ স্থাপন করেছি, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার আমরা ঘটিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি এবং ভারতের কাছ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পাচ্ছি। সেইসঙ্গে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি। দুই দেশের জনগণের কল্যাণে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক সেটাই আমরা চাই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে সেটাকে আমরা কার্যকর করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঠিক রেখে দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা কাজ করে যেতে চাই।  আমরা চাই আমাদের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হোক।

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমি চাই ভারতের বিনিয়োগকারীরাও এখানে বিনিয়োগ করুক। আমরা দুই দেশই তাতে লাভবান হবো।

ভারত থেকে বাংলাদেশের ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যুত ক্ষেত্রে উপ-আঞ্চলিক পর্যায়সহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আরও কয়েকটি উদ্যোগ বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কৃতজ্ঞ, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার এবং জনগণ অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। শুধু তাই না এক কোটি বাঙালি শরনার্থীকে স্থান দেওয়া, খাবারের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া এবং অস্ত্র দেওয়া এসব সহযোগিতা ভারতের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বাহিনীর অভিযানে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।

১৯৭৫ সালের পর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে ভারতের সরকার ও জনগণের কাছে ঋণী। আমরা দুই বোন তখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমাদের আরও আত্মীয় স্বজন যারা বেঁচে গিয়েছিল তারাও ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। কাজেই আমি ভারতের কাছে, ভারতের জনগণের কাছে, সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।

যৌথ এ পাইপলাইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারত প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বক্তব্য রাখেন।

‘মৈত্রী পাইপলাইন’ চালু একটি মাইলফলক অর্জন : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য  ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, চোখ খুললেই দেশের সর্বত্র উন্নয়ন চোখে পড়ে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, গ্রামের দুর্গম রাস্তাও সব পাকা হয়ে গেছে। সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সম্মান ও মর্যাদায় পৃথিবীতে অনন্য উচ্চতায় তুলেছেন। এই উন্নয়নের বাংলাদেশকে আজ সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে। তাই, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।

শনিবার (১৮ মার্চ) টাঙ্গাইলের মধুপুরে মহিষমারা ইউনিয়ন ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘যুবসমাজকে অবক্ষয় থেকে রক্ষা করে দক্ষ মানবসম্পদ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তরুণদেরকে খেলাধুলায় আরো উৎসাহিত করতে হবে। সুস্থ বিনোদন তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফি উদ্দিন মনি, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান, মধুপুর পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, গোপালপুর পৌরসভার মেয়র রকিবুল হক ছানা, সাবেক মধুপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মীর ফরহাদুল আলম মনি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, মহিষমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহি উদ্দিন মহির, আলোকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান সিদ্দিক, মির্জাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

চোখ খুললেই দেশের সর্বত্র উন্নয়ন চোখে পড়ে : কৃষিমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দুঃসাহসিক চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বড় দার্শনিক। তার চিন্তাভাবনা এখন দেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে রংপুর নগরীর আরডিআরএস ভবনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা ও রংপুর বিভাগ উন্নয়ন সমস্যা, সম্ভাবনা ও সুপারিশ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়নে আবুল বারকাতের তিনটি মেগা পরিকল্পনা উত্থাপন করেন। যেগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে উচ্চতর গুণমানসম্পন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কৃষি সমবায় গঠন করা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেন, এই তিন মেগা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে রংপুর অঞ্চলে অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে। রংপুর অনেক সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও রেমিট্যান্স আয় বাড়াতে হবে। তবেই দেশব্যাপী উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

সেমিনারে অধ্যাপক হান্নানা বেগমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোরশেদ হোসেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম প্রমুখ।

সেমিনারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

বঙ্গবন্ধু দুঃসাহসিক চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন : অর্থনীতি সমিতির সভাপতি

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি ও তার মিত্ররা পেছনে টেনে না ধরলে দেশ আরও এগিয়ে যেতো।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে একটি রাজনৈতিক অপশক্তি প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।  বিএনপি ও তার মিত্ররা সেই অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তারা যদি বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির চাকাকে পেছনে টেনে না ধরতো, দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেতো।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে  আজ সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন চত্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কথা বলেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, সমস্ত অপশক্তিকে দমন করে, সব প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনায় আজ শপথ নেয়ার দিন।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা, যার ধমনীতে-শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবহমান, যার কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর কন্ঠ প্রতিধ্বনিত হয়, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে চলেছে এবং জাতির পিতার জন্মদিন ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সার্থকতা এখানেই যে, পাকিস্তান আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।’

মন্ত্রী এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

বক্তৃতায় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ও তার মিত্ররা ‘পলিটিক্স অভ ডিনায়াল’ এবং ‘পলিটিক্স অভ কনফ্রন্টেশন’ অর্থাৎ সবকিছুতে না বলা ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে। তাদের রাজপথের সংঘর্ষের রাজনীতি আজ সুপ্রিম কোর্টের বারান্দায় পৌঁছে গেছে। সেখানে আইনজীবীদের নির্বাচনে তারা ব্যালট ছিনতাই করেছে।’

‘আমরা একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সমাজে বসবাস করি এবং এখানে দায়িত্বশীলদের সমালোচনা হবে, বিতর্ক হবে। কিন্তু সবকিছুতে না বলার রাজনীতির যে অপসংস্কৃতি, তা দূরীভূত হওয়া প্রয়োজন’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের সকলেরই লক্ষ্য হবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাহলেই আমরা দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে পারবো।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ সভায় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত কবি রফিক আজাদের ‘এই সিঁড়ি’ কবিতার আবৃত্তি পরিবেশিত হয়।

বিএনপি ও তার মিত্ররা পেছনে টেনে না ধরলে দেশ আরও এগিয়ে যেতো : তথ্যমন্ত্রী