অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার একটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ অপহরণ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে এ অভিযান চালায় ডিবি। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণের পর টর্চার সেলে নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম।
গ্রেফতার চার জন হলো– নগরীর হেতেমখাঁ এলাকার জোয়াদুল আহাদ খানের ছেলে অপহরণকারী চক্রের সদস্য আরেফিন আহাদ খান সানি (৪২), আজাদ আলীর ছেলে মোস্তাক আহমেদ ফাহিম (২২), নুরুজ্জামানের ছেলে পারভেজ (২৭), আলম সরকারের ছেলে সাব্বির সরকার (২৫)।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় এসব বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করে পুলিশ জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে আরেফিন আহাদ খান সানির বাড়ি হেতেমখাঁয় আটকে রাখা হয়। তাকে অপহরণ করতে সহযোগিতা করে সানির বন্ধু মোস্তাক আহমেদ ফাহিম। অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকার জন্য তাদের টর্চারসেলে দেলোয়ারের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এরপর বিভিন্নভাবে অস্ত্রের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। দেলোয়ারের মোবাইল ফোন থেকে তার আত্মীয়দের অপহরণের বিষয়টি জানানো হয়। উপায় না পেয়ে মুক্তিপণ হিসাবে দেলোয়ার তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছাড়া পেয়ে দেলোয়ার হোসেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ভোর রাত ৪টার দিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে সিআরটি এবং বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে সঙ্গে নিয়ে হেতেমখাঁ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে গ্রেফতার হয় ওই অপহরণ চক্রের চার সদস্য। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র।
পুলিশ আরও জানায়, সানির বাড়ির ছাদের টর্চারসেল থেকে বিপুল পরিমাণে দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করতো। অপহরণের পর সনির বাড়িতে নিয়ে টর্চারসেলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। পরে অপহরণ করা ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো।
তারা একটি সংঘবদ্ধ অহপরণ চক্রের সক্রিয় সদস্য বলেও জানায় পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অপহরণ ও অস্ত্র আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply