23 Nov 2024, 09:48 am

আগামী বছর ডিসেম্বরে দেশে চালু হবে দুটি ‘স্মার্ট হাইওয়ে’

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আগামী ডিসেম্বরে দেশের প্রথম স্মার্ট হাইওয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করা হবে এবং দ্বিতীয়টি আগামী বছরের (২০২৪) ডিসেম্বরে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যে এক্সপ্রেসওয়েটি জয়দেবপুরকে রংপুরের সাথে সংযুক্ত করবে। প্রাথমিকভাবে এর লক্ষ্য সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তারা বলেছেন, উভয় মহাসড়কই ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস) যুক্ত করে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে যানবাহন শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, নজরদারি ক্যামেরা, স্বয়ংক্রিয় নম্বর প্লেট শনাক্তকরণ ক্যামেরা, গতি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া এবং পরিবর্তনশীল মেসেজিং সাইন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সওজ-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এম তানভীর সিদ্দিক বলেন, ৩৮ কিলোমিটার ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হবে প্রথম স্মার্ট হাইওয়ে যেখানে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে আইটিএস সম্পূর্ণভাবে ইনস্টল করা হবে।

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক সিদ্দিক বলেন, ১২৬ কোটি টাকার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার কোইকার (কেওআইসিএ) সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সওজ কর্মকর্তাদের মতে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তায় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ২৫০ কিলোমিটার জয়দেবপুর-রংপুর মহাসড়কে প্রযুক্তিটি চালু করার কাজ চলছে।

কর্মকর্তারা বলেন, সরকার সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসাবে গতি এবং ওজন সীমা অতিক্রমকারী যানবাহন শনাক্ত করার প্রযুক্তি এনেছে, যা সীমা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য যথাযথ প্রমাণ হাজির করবে এবং এতে কর্তৃপক্ষ উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহাসড়কের নজরদারি জোরদার করতে পারবে।

জয়দেবপুর-রংপুর স্মার্ট হাইওয়ে দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এসএএসইসি)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের অংশ যা একটি এসএএসইসি করিডোর হিসাবে বিবেচিত হবে।

এসএএসইসি গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা।

বাংলাদেশি অবকাঠামো সংস্থা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স (এনডিই) এবং চাইনিজ ফার্ম ফাইবার হোম টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজিস কোম্পানি লিমিটেডকে জয়দেবপুর-রংপুর স্মার্ট হাইওয়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং আরএইচডির সাথে চুক্তির আওতায় বাংলাদেশী আইটি ফার্ম ন্যাশনাল টেককে যথাক্রমে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেওয়ের কাজ দেয়া হয়েছ।

এনডিই ইনফ্রাটেক, এনডিই-এর একটি উদ্যোগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ এস এ হুসেন বলেছেন, আমরা আমদানি করা হার্ডওয়্যার এবং সরঞ্জামগুলো স্থাপনের জন্য অর্ডার দিয়েছি এবং আমরা আশা করছি ডিসেম্বর ২০২৪ সালের মধ্যে (জয়দেবপুর-রংপুর মহাসড়কের) কাজটি শেষ করতে পারব।

তিনি বলেন, শহরের মিরপুর এলাকার পাইকপাড়ায় একটি কেন্দ্রীয় ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (টিএমসি) স্থাপন করা হবে এবং কেন্দ্রের তিনটি আঞ্চলিক টিএমসি থাকবে টাঙ্গাইলের পাকুল্লা, বগুড়ার মোকামতলা এবং রংপুরের ইসলামপুরে।

রিয়াদ বলেন, কেন্দ্রগুলো আইটিএস সিস্টেমের মাধ্যমে পুরো হাইওয়ে পর্যবেক্ষণ করবে। দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য বাধা শনাক্ত করার জন্য দ্রুত এবং যথাযথ পদক্ষেপের জন্য আইটিএসের একটি ‘ভেহিক্যাল ডিটেকটিভ সিস্টেম (ভিডিএস)’ থাকবে।

তিনি বলেন, হাইওয়ে বরাবর নজরদারি ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে টিএমসি কর্মীরা মহাসড়কে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করার সুযোগ পাবে এবং স্বয়ংক্রিয় নম্বর প্লেট রিকগনিশন (এএনপিআর) ক্যামেরাগুলো তাদের ট্র্যাফিক নিয়ম লঙ্ঘনকারী বা লোড এবং গতি সীমা অতিক্রমকারী যানবাহন শনাক্ত করতে সহায়তা করবে।

রিয়াদ বলেন, প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গতি শনাক্তকরণ সিস্টেমের মাধ্যমে গতি শনাক্ত করতে সহায়তা করবে। এলইডি-সক্ষম ভেরিয়েবল মেসেজিং সাইন (ভিএমএস) হাইওয়ের ধারে গ্যান্ট্রিগুলোতে ইনস্টল করা হবে, যা যানবাহনগুলোকে রাস্তায় কোনো বিপদ বা অস্বাভাবিক জিনিস সম্পর্কে আগাম বার্তা দেবে।

উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, সড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা সড়ক পরিবর্তনের নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন হলে, পরিবর্তনশীল মেসেজিং সাইনগুলোতে লাইভ বার্তার মাধ্যমে সমস্ত যানবাহনকে অবিলম্বে অবহিত করা হবে।তিনি বলেন, অনুমতির বাইরে লোড বহনকারী ট্রাকগুলোকে আটকাতে হাইওয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে একটি ওয়ে ইন মোশন (ডব্লিউআইএম) সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

বিশেষজ্ঞদের সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ দেশ যেখানে ওভারলোডেড ট্রাক সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। রিয়াদ বলেন, স্থায়ী এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনগুলোর ইনস্টলেশনকে এই বিষয়ে প্রয়োগের জন্য সর্বোত্তম সমাধান হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং আইটিএস এই সুবিধা প্রদান করে।

এনডিই ইনফ্রাটেক কর্মকর্তা বলেন, কোনো ট্রাক নির্ধারিত সীমার বেশি পণ্য বহন করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণের জন্য টাঙ্গাইলের পাকুল্লা, বগুড়ার মহাস্থানগড় এবং রংপুরের ইসলামপুরে তিনটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপন করা হবে।

রিয়াদ বলেন, ট্রাকগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশনগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য করা হবে। যদি কোনো ট্রাক অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি পণ্য বহন করে, তবে স্টেশনের প্রস্থান গেটওয়ে খোলা হবে না। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সমস্ত মহাসড়কে আইটিএস প্রয়োজন, যাতে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে, সিস্টেমের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 8622
  • Total Visits: 1275787
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২০শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৯:৪৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018