অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, এই অবস্থার অবসান না হলে ইউরোপের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং এই জোটের সব সদস্যকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করেছেন। ভিক্টর অরবান যে ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুরোধ জানিয়েছেন সেখানে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের পাশাপাশি বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড ও মাল্টার প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন।
ইউরোপের অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে এ ধরণের প্রস্তাব এর আগেও দিয়েছেন ভিক্টর অরবান, তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী প্রথম থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন যাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় তার দেশও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এর আগে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে গণভোট করেছেন, দেশটির ৯৭ শতাংশ মানুষ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ এক বছর আগে শুরু হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপ ও আমেরিকা। তবে মার্কিন দৈনিক গার্ডিয়ান গত জুলাইয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা উল্টো ফল দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্টের অবস্থান আগের আরও শক্তিশালী হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোতে ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব থাকবে বহু বছর ধরে। ইউরোপকে আরও ২০ বছর ধরে ভুগতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপের বর্তমান আর্থ-সামাজিক সমস্যার পেছনে রয়েছে মার্কিন নীতির অন্ধ অনুকরণ। ইউরোপ মার্কিন আধিপত্যকামী নীতির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর আমেরিকা দূরবর্তী অবস্থানে থেকে নানাভাবে ইউরোপের সমর্থন থেকে ফায়দা নিচ্ছে। মার্কিন নীতির প্রতি ইউরোপের সরকারগুলোর সমর্থনের মূল্য দিতে হচ্ছে ইউরোপের জনগণকে। তাদের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এরিমধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে। পরিস্থিতি এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, ইউরোপের অর্থনীতি ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা করছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী।
Leave a Reply