অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনেও মানুষের ঢল নেমেছে রাজধানীর অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র জাতীয় চিড়িয়াখানায়। রোববার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টার আগে থেকেই চিড়িয়াখানায় প্রবেশর জন্য দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উপস্থিতি আরও বাড়তে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এদিন দুপুর ১২টার পর চিড়িয়াখানা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। ঈদের দিন রাজধানীতে রোদ, বৃষ্টির লুকোচুরি ছিল। সেই রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চিড়িয়াখানায় মানুষের উপচেপড়া ভির ছিল। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন আকাশ মেঘলা ও ঠান্ডা বাতাস বইছে। আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় এদিন দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
চিড়িয়াখানাগামী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকায় বাসগুলো মিরপুর বিসিআইসি কলেজ পর্যন্ত এসে যাত্রী নামিয়েছে। মিরপুর সনি সিনেমা হলের বিপরীত থেকে অন্য রুটের বাসগুলোও চিড়িয়াখানার যাত্রী পরিবহন করেছে। বিনোদনকেন্দ্রটির সামনের আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা দেয়। ফুটপাতে হকারদের ভিড় থাকায় দর্শনার্থীদের হেঁটে চিড়িয়াখানায় যেতে বেগ পেতে হয়েছে।
এদিন মানুষের ভিড় অনেক বেশি থাকায় চিড়িয়াখানার প্রধান ফটকসহ সবক’টি ফটক খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপরও ভেতরে প্রবেশ করতে চিড়িয়াখানার মূল ফটকের সামনে হাজারো মানুষকে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
ভিড় ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করেও ভিড়ের মধ্যেই পড়তে হয়েছে দর্শনার্থীদের। বানর, বাঘ, সিংহ, জিরাফসহ বিভিন্ন খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে পছন্দের পশুপাখিকে দেখার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে তাদের। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার পার্কে শিশুদের ট্রেনে ভ্রমণ, বিভিন্ন দোলনায় চড়তেও শিশুদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।
ঈদ বিনোদনে দর্শনার্থীদের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয় চিড়িয়াখানার বানর, ময়ূর, বাঘ, সিংহ, হরিণ ও জেব্রার খাঁচা। জলহস্তি আর জেব্রার ঘরে জন্ম নেওয়া নতুন দুই অতিথি এবং বছরজুড়ে চিড়িয়াখানা জন্ম নেওয়া অসংখ্যা হরিণ শাবক দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ দিয়েছে। চিড়িয়াখানায় সম্প্রতি আনা পেলিকেন্ট, লামা, ক্যাঙ্গারু ও আফ্রিকান সিংহ ছাড়াও হাতি, চিতা, উল্লুকের খাঁচাগুলোর সামনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়।
সাভার থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছে ১০ বছর বয়সী ফারিয়া। তার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। শিশু ফারিয়া জানায়, ক্যাঙ্গারু, উট আর বাঘ দেখে তার অনেক ভালো লেগেছে।
ফারিয়ার বাবা আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমি বিদেশে থাকি। দীর্ঘদিন পর ঈদের ছুটিতে দেশে এসেছি। ভেবেছিলাম চিড়িয়াখানায় ভিড় হবে না, তবে এসে দেখি প্রচুর ভিড়।’
তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে বিনোদনকেন্দ্রের সংকট। যেগুলো আছে তার মধ্যে চিড়িয়াখানা সেরা। ছুটির দিনে ঘুরতে যাবো এমন ফাঁকা জায়গাও নেই। চিড়িয়াখানায় কম খরচে প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া যায়, আবার বিদেণি প্রাণীও দেখতে পাওয়া যায়।’
এর আগে শনিবার ঈদের দিন প্রায় এক লাখ মানুষ চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যান বলে জানা গেছে। তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন এ সংখ্যা এক লাখের বেশি বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘ঈদের দিন প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে চিড়িয়াখানায় এক লাখের মতো দর্শনার্থী প্রবেশ করেন। তবে আজ সকাল থেকেই দর্শনার্থীর ভিড়। আজ এ সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ভোগান্তি এড়াতে দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপত্তার এবং সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য আলাদা প্রবেশ পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থী ও প্রাণীর নিরাপত্তায় টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Leave a Reply