22 Jan 2025, 01:47 pm

উপকুলের ৫০০ কিমির মধ্যে ‘সিত্রাং’ মোংলা-পায়রায় ৭ ; চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদসংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে। তাই মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৮) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।

অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর নৌ-বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, অব্যাহত থাকতে পারে ভারি বৃষ্টি। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল ভোর রাত বা সকাল নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা্ তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেইসঙ্গে ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে বলেও জানান তিনি।

হাফিজুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর নৌ-বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রোববার থেকেই বাংলাদেশে এ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। উপকূলীয় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বইছে দমকা হাওয়া। আবহাওয়া দপ্তর সোমবার উপকূলীয় অঞ্চলে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

রোববার সকালে থেকে সারাদিনই ঢাকার আকাশ মেঘে ঢাকা ছিলো, রাত থেকে ঢাকায় হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবারও আকাশ মেঘে ঢেকে রয়েছে, বেলা বাড়তে বাড়ছে বৃষ্টির মাত্রা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *