অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি সামরিক ঘাঁটি থেকে ডজনখানেক সামরিক বিমান সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের সম্ভাব্য থেকে হামলা বিমানগুলোকে থেকে রক্ষা করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইসরাইল-ইরান সংঘাতে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন।
প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবির ওপর বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৫ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কাতারের আল-উদেইদ ঘাঁটির রানওয়ে থেকে প্রায় সব সামরিক বিমান অদৃশ্য হয়ে গেছে।
এর মধ্যে গত ৫ জুনের ছবিতে ঘাঁটিতে কমপক্ষে ৪০টি সামরিক বিমান দেখা গেছে। যার মধ্যে ছিল, হারকিউলিস সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং গোপন নজরদারি বিমানও। কিন্তু ১৯ জুনের ছবিতে মাত্র তিনটি বিমান দেখা যায়।
কাতারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বৃহস্পতিবার জানায়, চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনা ও সতর্কতার অংশ হিসেবে ঘাঁটিতে প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘাঁটিতে থাকা সকলকে ‘বাড়তি সতর্কতা’ অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের অন্যতম মিত্র ইসরাইলের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধে জড়ালে ওই অঞ্চলের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ইরান পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
র্যান্ড করপোরেশনের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ও সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মার্ক শোয়ার্জ বলেন, আল-উদেইদ ঘাঁটি ইরানের খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় সেখানকার সামরিক সদস্য, অবকাঠামো ও বিমান অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এমনকি বোমার টুকরার আঘাতেও এসব যুদ্ধবিমান ‘অভিযান পরিচালনায় অক্ষম’ হয়ে পড়তে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক এই মার্কিন জেনারেল জানান, জুনের শুরুর দিকে বিমানগুলোকে সরিয়ে হয়তো ঘাঁটির হ্যাঙ্গারে রাখা হয়েছে, অথবা অন্য অঞ্চলের নিরাপদ ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সামরিক সদস্যই হোক বা সরঞ্জাম, উভয়কেই ঝুঁকি থেকে রক্ষার দায়িত্ব মার্কিন বাহিনীর।
মার্কিন সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে ইরানে ইসরাইলের প্রথম দফা হামলার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এরইমধ্যে আরো একটি বিমানবাহী রণতরী পাঠানো হয়েছে এবং আকাশেও যুদ্ধবিমানের তৎপরতা বেড়েছে।
এএফপি’র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৭টি সামরিক জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে গেছে।
এর মধ্যে ২৫টি গত বুধবার রাত পর্যন্ত ইউরোপেই অবস্থান করছিল, মাত্র দুটি বিমান ফিরে গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।