অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর এর দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছে ভারত। তবে এই অভিযোগকে সরাসরি ও দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি এই হামলাকে ‘সাজানো নাটক’ বা ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন বলে উল্লেখ করেছেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, ‘কাশ্মীরে যা ঘটেছে, তার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের কোনও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই। আমরা ভারত সরকারের আনা অভিযোগকে জোরালোভাবে অস্বীকার করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, এটি একটি সাজানো হামলা। ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন—অর্থাৎ এমন একটি অভিযান, যা নিজেরা চালিয়ে অন্যকে দায়ী করা হয়।’
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামের একটি গোষ্ঠী। ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, এই গোষ্ঠী পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তইয়্যেবার সঙ্গে সম্পর্কিত।
তবে খাজা আসিফ বলেছেন, ‘আমরা কাশ্মীরি কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। কাশ্মীরে যে আন্দোলন চলছে, তা স্থানীয় এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।’
এদিকে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এই ঘটনায় ভারতের প্রতিক্রিয়াকে ‘শিশুসুলভ ও অভ্যাসগত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত প্রতিটি ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। অতীতেও তারা এভাবে আমাদের দোষারোপ করেছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারত সরকারের এই অভিযোগ একটি কৌশলগত রাজনৈতিক চাল হতে পারে। একইসঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত এবং কাশ্মীর ইস্যুতে সুর চড়ানো—সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। ভারত একে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে চিহ্নিত করলেও পাকিস্তান বরাবরই বলে এসেছে, এটি কাশ্মীরিদের স্বাধীনতাকামী আন্দোলন।