অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের প্রখর রোদে দাঁড় করিয়ে সংসদ সদস্য মুজিবুল হক মুজিবের জন্মদিন পালন করেছেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার (৩১ মে) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী আল ফারাবী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রোদে শতাধিক শিক্ষার্থীকে দাঁড় করিয়ে তার জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
জন্মদিনের ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রখর রোদে বিদ্যালয়ের মাঠে দাঁড় করিয়ে বারান্দায় স্লোগান দিচ্ছেন গুণবতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হক মাসুদ ও গুণবতী ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক রিহান। এ সময় গুণবতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আরেক নেতা পাবেলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্লোগান শেষে স্থানীয় এমপির জন্মদিনের কেক কাটা হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবক জানান, তাদের সন্তানরা সবাই মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। তাদের এভাবে প্রখর রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা একেবারেই উচিত হয়নি। যদিও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দাবি, শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় এসেছেন অনুষ্ঠানে। তাদের জোর করা হয়নি।
এ বিষয়ে গুণবতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হক মাসুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজে থেকেই এসেছে। তাদের জোর করা হয়নি।
গুণবতী ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক রিহান বলেন, আমরা গুণবতী আল ফারাবী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অনুমতিতে অনুষ্ঠানটি করেছি। আমরা বেশি সময় নেইনি। একটা কেক কাটলাম আর মিনিট দশেকের মতো স্লোগান দিয়ে মুজিব ভাইয়ের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি।
তবে শিক্ষার্থীদের প্রখর রোদে দাঁড় করানোর বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন গুণবতী আল ফারাবী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আজ এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র কমিটির মিটিংয়ে ছিলাম। স্কুলে এসেছি বিকেলে। এসে শুনি জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। আমাদের সভাপতির কাছে তারা অনুমতি নিয়েছিল- এটাই শুনেছি। তবে শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল কি না, জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাকিনা খাতুনকে বেশ কয়েকবার ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে জন্মদিন পালন করতে পারবে, তাতে কোনো বাধা নেই। তিনি যেহেতু চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অভিভাবক, তার জন্মদিন পালন করা যেতেই পারে। তবে আমার কাছ থেকে কেউ অনুমতি নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল কি না, আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে তারপর তাদের নির্দেশনা দেব।
Leave a Reply