বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : ক্লাশ রুম সংকট, পরিবহন ও ক্যাফেটেরিয়ার সমস্যা সমাধান এবং জুলাই বিপ্লব চলাকালীন হামলায় অংশ নেওয়া ছাত্রদের বিচারসহ মোট ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এসব দাবিতে উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আজাদী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, জুলাই বিপ্লব পরবর্তীতে গত ১১ আগস্ট ক্যাম্পাস খোলার প্রথম দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নতুন প্রশাসনের কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করেন। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও একটি দাবিও পূরণ করা হয়নি। পুরো চট্টগ্রামের আন্দোলনের অন্যতম স্পিরিট হিসেবে কাজ করেছে আইআইইউসির শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের প্রতিষ্ঠানেই স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
তারা জানান, দাবিগুলো ছিল শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। এগুলো পূরণ করা সময়সাপেক্ষও নয়। তারপরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এই অধিকারগুলো নিশ্চিত হচ্ছে না। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্তৃক শিক্ষার্থীদের হয়রানি এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করা হয়।
স্মারকলিপি দেওয়া শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অফিস থেকে বেরিয়ে জানান, স্বৈরাচারের দোসরদের ব্যাপারে আগামীকালের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া এবং অন্যান্য সব অধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটা ফল আসবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
আইআইইউসির ইকোনমিক্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের সিরাজুম মনির বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কোনো ভবন নেই। যে কারণে কিছু ক্লাস বিবিএ ডিপার্টমেন্টে, আবার কিছু ক্লাস আবু বকর হলে করতে হয়। বিষয়গুলো আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান না করলে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার আদায়ে আবারো জুলাই বিপ্লবের ন্যায় মাঠে নামবে।
কুরআনিক সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, আমাদের ক্লাস রুমের এতটাই সংকট যে আমরা অনেক সময় মসজিদে, ডিপার্টমেন্ট এর বারান্দায় ক্লাস করতে হয়। এ বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও তাদের সদিচ্ছা না থাকায় এর কোনো সুষ্ঠু সমাধান হচ্ছে না। আমরা অতি দ্রুত এর সমাধান চাই।
এ বিষয়ে জানতে আইআইইউসি উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আজাদীকে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামে এন মোহাম্মদ ফ্যাক্টরিতে ১৩ দফা দাবী আদায়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ১৩ দফা দাবিতে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরিতে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে উপজেলার গোমদন্ডী ফুলতল এলাকায় অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে এই কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন তারা।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- সব ওয়ার্কারের জন্য ৮ ঘণ্টা ডিউটি নির্ধারণ, যথাসময়ে বেতন পরিশোধ, যদি ১২ ঘণ্টা ডিউটি করাতে চায় বাকি ৪ ঘণ্টা ওভারটাইম দেওয়া, জরিমানার সিস্টেমটা বন্ধ করা এবং চাকরি থেকে বের করে দিলে সরকারি নিয়মে ৩ মাস ১৩ দিনের বেতন দেওয়া এবং চাকরির বয়স যদি ২ বছরের বেশি হয় সেই ক্ষেত্রে প্রতি বছরে ১ মাসের করে স্যালারি দেওয়া, দিনের বেলায় এবং রাতের বেলায় ১ ঘণ্টা করে রেস্টের জন্য সময় দেওয়াসহ মোট ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে শ্রমিকেরা।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, কোনো শ্রমিকের ওপর হয়রানি, অত্যাচার ও নিপীড়ন করা যাবে না। শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের ন্যায্য দাবি গুরুত্ব সহকারে মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ জারি করতে হবে।
এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরির সিও মোস্তাক জানান, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রত্যেক সেক্টর থেকে প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে তা নিরসন করা হবে।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। দাবিদাওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে সমস্যার কারণে আন্দোলন করেছে শ্রমিকেরা। সেখানে যানচলাচল স্বাভাবিক আছে।’
চট্টগ্রাম নগরীতে ১৬ এলাকায় পানি সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকায় অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে নগরের ১৬ এলাকার ওয়াসার পানি সরবরাহে বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খাল খনন প্রকল্পের কাজ চলাকালীন সময়ে এঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত সঞ্চালন লাইন দ্রুততম সময়ে মেরামত করা হচ্ছে বলে জানায় ওয়াসা।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিডিএ’র ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক’ প্রকল্পের ঠিকাদার কর্তৃক উন্নয়ন কার্যক্রম চলাকালে অনন্যা আবাসিক এলাকায় অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘এই সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে শহরের বেশিরভাগ অংশে পানি সরবরাহ করা হয়। ফলে বৃহত্তর হালিশহর, আগ্রাবাদ, জামালখান, লালখানবাজার, মাদারবাড়ি, জিইসি, মুরাদপুর, কদমতলী, ধনিয়ালাপাড়া, নয়াবাজার, ২নং গেট, বায়েজিদ, অক্সিজেন, চকবাজার, নন্দনকানন, সিরাজদ্দৌলাহ রোড প্রভৃতি এলাকায় পানি সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত সঞ্চালন লাইন দ্রুততম সময়ে মেরামতের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগরের বেশিরভাগ অংশে এ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়।
Leave a Reply