বশির আল-মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) ৭৫ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্তরা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থক। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ছাত্রাবাসে অবৈধ প্রবেশ, কক্ষ দখল, মারধর, নিষিদ্ধ থাকার পরও রাজনীতিতে যুক্ত থাকাসহ বিভিন্ন কারণে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার বিজ্ঞপ্তি আকারে তা প্রকাশ করা হয়। দুই বছর থেকে ছয় মাসের বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। এ ছাড়া আরও ১১ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবককে মুচলেকা দিতে হবে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) এই শাস্তি কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর আগে রবিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ৮৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ও চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীনের স্বাক্ষর রয়েছে। ৮৬ জনের মধ্যে যারা ইতিমধ্যে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন করছেন, তাদের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ১৭ জন বিডিএসের শিক্ষার্থী।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীন বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪ জন ইন্টার্ন রয়েছেন। তাদের শাস্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। ১২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চমেক একাডেমিক কাউন্সিল এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে।’
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ১১ সেপ্টেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চমেক কর্তৃপক্ষ। এই কমিটির প্রধান ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান। এক মাসের বেশি সময় ধরে অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে কমিটি। এর আগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্ররা নানা অভিযোগ জমা দেন। আওয়ামী লীগের আমলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরও ক্যাম্পাসে রাজনীতি করা, ছাত্রাবাসে অবৈধ প্রবেশ, হল দখলসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে কমিটি।
চমেক সূত্র জানায়, শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে সাত জনকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে একবার একাডেমিক কাউন্সিল বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছিল। পুনরায় তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। ওই শাস্তির পাশাপাশি নতুন শাস্তি কার্যকর করা হবে। ৮৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় সাত জনকে। ১৫ জনকে দেড় বছরের জন্য, ৩৯ জনকে এক বছরের জন্য, ১৪ জনের জন্য ছয় মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। ১১ জনের কাছ থেকে অভিভাবক ও নিজের মুচলেকা নেওয়া হবে।
Leave a Reply