20 May 2024, 04:06 am

চীনে স্কুলের পাঠ্যবইয়ে ‘করোনা যুদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্কুল পাঠ্যবইয়ে শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনা মহামারিকে মোকাবিলা করা এবং তারপর সেই যুদ্ধে সরকারের বিজয় অর্জন সম্পর্কিত একটি অধ্যায় যুক্ত করেছে চীন; আর এ ইস্যু নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশটির বিভিন্ন অনলাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ভিডিও শেয়ারিং সম্পর্কিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকের চীনা সংস্করণ ডাওইনে সম্প্রতি একটি ভিডিও কন্টেন্ট ভাইরাল হয়েছে। সেই কন্টেন্টের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বিবিসি জানিয়েছে, সম্প্রতি চীনের স্কুলগুলোর অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে সাম্প্রতিক করোনা মহামারি ও তা মোকাবিলার যুদ্ধে চীনের ক্ষমতাসীন সরকারের বিজয় সম্পর্কিত একটি প্রবন্ধ সংযোজন করেছে দেশটির স্কুল পাঠ্যপুস্তক কর্তৃপক্ষ।

চীনের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রন সম্পর্কিত সরকারি প্রতিষ্ঠান পিপল’স এডুকেশন প্রেসে ছাপানো সেই ইতিহাস বইয়ে ছাপানো হয়েছে প্রবন্ধটি। তবে দেশটিতে চলমান বিতর্কের মূল কারণ—মহামারি মোকাবিলায় চীনের সরকারের এককভাবে বিজয় দাবি।

অধ্যায়টিতে বলা হয়েছে— কমিউনিস্ট সরকার সবসময়ই জনগণের জীবন ও স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং এই নীতির আওতায় নেওয়া বিভিন্ন সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে সরকার ‘চুড়ান্ত বিজয়’ অর্জন করেছে।

অনলাইনে যারা বিতর্কে জড়িয়েছেন, তাঁদের দাবি— পাঠ্যপুস্ককের সঙ্গে বাস্তব সত্যের কোনো মিল নেই।

ফেসবুকের চীনা সংস্করণ ওয়াইবোর এক ব্যবহারকারী করোনা মাহমারি সংক্রান্ত সেই প্রবন্ধের কপি শেয়ার করে সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘কীভাবে আপনারা এসব ছাইপাঁশ লিখতে পারলেন। গত তিন বছর আমাদের যে ভয়াবহ যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে— এই প্রবন্ধের প্রতিটি অক্ষর দিয়ে যন্ত্রণাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে।’

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।

তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি ঘোষণার পর থেকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশজুড়ে দিনের পর দিন লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, প্রতিদিন কয়েকবার বাধ্যতামূলক করোনা টেস্ট— প্রভৃতি কঠোর সব নিয়ম জারি করে চীনের সরকার।

মহামারির প্রথম বছর ২০২০ সালে অবশ্য বিশ্বের প্রায় সব দেশের সরকার এসব নীতি নিয়েছিল— তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২২ সালের শুরুর মধ্যেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশ করোনা বিষয়ক বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু করে। এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল চীন।

এদিকে দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ লকডাউন-কোয়ারেন্টাইন জারি থাকায় সীমাহীন ভোগান্তিতে থাকা চীনের সাধারণ জনগণ ২০২২ সালের নভেম্বরের দিকে দেশজুড়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। জনগণ বিক্ষোভ শুরু করার পরপরই যাবতীয় বিধিনিষেধ শিথিল করে চীনের সরকার।

এক ব্যবহারকারী সেই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে নিজের পোস্টে লিখেছেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ কীভাবে শেষ হলো— সেই অংশটি প্রবন্ধে নেই কেন?’

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4685
  • Total Visits: 751507
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1127

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ ইং
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১১ই জ্বিলকদ, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, ভোর ৪:০৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018