October 18, 2025, 2:50 am
শিরোনামঃ
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরবে সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩১৩ সদস্য রাজধানীতে বৃষ্টির মধ্যেই আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা বাংলাদেশে নিউক্লিয়ার মেডিসিনের অগ্রযাত্রা নিয়ে পরমাণু শক্তি কমিশনের সেমিনার পুলিশের লাঠিচার্জে আহত ১০ জুলাই আন্দোলনকারীকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫১০ জন হাসপাতালে ভর্তি  কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে শিশুসহ ১১ রোহিঙ্গা আটক টাঙ্গাইলে সমন্বিত বন্যা সহনশীল কর্মসূচির আওতায় রেড ক্রিসেন্টের অর্থ সহায়তা সুনামগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষাকে গতিশীল করতে ২৯ অক্টোবর মেধা যাচাই পরীক্ষা বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯০ কোটি দরিদ্র মানুষ জলবায়ু বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে : জাতিসংঘ গাজার ‘অভ্যন্তরে গিয়ে’ হামাস সদস্যদের হত্যা’র হুমকি দিলেন ট্রাম্প
এইমাত্রপাওয়াঃ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরবে সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩১৩ সদস্য

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   চলমান অর্থ সংকট মোকাবিলার অংশ হিসেবে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ সদরদপ্তর। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী নয় মাসের মধ্যে বিভিন্ন মিশন থেকে সামরিক বাহিনীর মোট ১ হাজার ৩১৩ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হবে। যারা সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী থেকে নানা দেশ বা অঞ্চলে নিয়োজিত আছেন।

এর আগে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র অবশিষ্ট কন্টিনজেন্টকে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৮০ সদস্যের এ কন্টিনজেন্টের মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন। মাত্র দুই মাস আগে এ কন্টিনজেন্টের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের একমাত্র সর্ব-নারী পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছিল।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চলমান আর্থিক সংকটের কারণে ১৫ শতাংশ বাজেট হ্রাস পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিকল্পনার আওতায় ইউনিফর্মধারী সদস্যদের জন্য বরাদ্দ অর্থ ১৫ শতাংশ কমানো হবে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স কার্যালয়ের (ওএমএ) ভারপ্রাপ্ত সামরিক উপদেষ্টা শেরিল পিয়ার্সের পাঠানো এক চিঠিতে সামরিক সদস্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি জানানো হয়। গত ১৪ অক্টোবর পাঠানো এ চিঠিতে স্বাক্ষর করেন কার্যালয়ের চিফ অব স্টাফ ক্যাপ্টেন লনি ফিল্ডস জুনিয়র এবং খসড়া প্রস্তুত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানবির আলম। ওই কার্যালয়ের মিলিটারি পিস অপারেশন সাপোর্ট শাখার প্রধান হিসেবে তানবির আলম দায়িত্ব পালন করছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য বলেন, ওএমএ হলো জাতিসংঘের সামরিক শাখা। তাই সেখান থেকে সংখ্যা হ্রাস করতে বলা কেবল সামরিক সদস্যদের জন্য হতে পারে।

চিঠিতে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চলমান আর্থিক সংকটের কারণে ১৫ শতাংশ বাজেট হ্রাস পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। এ পরিকল্পনার আওতায় ইউনিফর্মধারী সদস্যদের জন্য বরাদ্দ অর্থ ১৫ শতাংশ কমানো হবে। যদিও এটি সরাসরি সমান হারে জনবল কমানোর নির্দেশ নয়, তবে বাজেট কমায় বাস্তবে মাঠপর্যায়ে শান্তিরক্ষীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

নতুনভাবে ভ্যালু যোগ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সিনিয়র পদে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অংশগ্রহণ। এছাড়া, জাতিসংঘের অন্যান্য মিশনেও কীভাবে আমরা অংশ নিতে পারি সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স কার্যালয় জানায়, এ সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ থাকা পাঁচটি শান্তিরক্ষা মিশনে সদস্যসংখ্যা কমবে। সবচেয়ে বেশি হ্রাস পাবে ‘ইউএনমিস’ বা দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ মিশনে, যেখান থেকে ৬১৭ সদস্য প্রত্যাহার করা হবে। এছাড়া মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের জাতিসংঘ মিশন ‘মিনুসকা’ থেকে ৩৪১, সুদানের আবেই অঞ্চলের জাতিসংঘ মিশন ‘ইউনিসফা’ থেকে ২৬৮, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের জাতিসংঘ মিশন ‘মনুসকো’ থেকে ৭৯ ও পশ্চিম সাহারার জাতিসংঘ মিশন ‘মিনুরসো’ থেকে আট বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রত্যাহার করা হবে।

জাতিসংঘ সদর দপ্তর এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট মিশনগুলোকে এ পরিকল্পনা বিলম্ব না করে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনকে আশ্বস্ত করে ওএমএ’র চিঠিতে বলা হয়, সিদ্ধান্তটি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে চলমান আর্থিক সংকটের কারণে নেওয়া হয়েছে। যদি পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসে, যা বাংলাদেশকে প্রভাবিত করবে, তাহলে ওএমএ যত দ্রুত সম্ভব তা জানাবে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সঙ্গে শান্তি ও সহযোগিতার অভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা কিছু জানতে পারিনি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআইপিএসএস) জ্যেষ্ঠ ফেলো শাফকাত মুনীর জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ কেবল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেনি, বরং এটি বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ স্থাপন এবং কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সৈন্য প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের বাজেটের ঘাটতির কারণে আমাদের শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। তবে এখনই এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সংখ্যা আগের মতো ধরে রাখা নাও যেতে পারে, কারণ মিশনের কলেবর হ্রাস পাবে। তবে নতুনভাবে ভ্যালু যোগ করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সিনিয়র পদে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অংশগ্রহণ। এছাড়া, জাতিসংঘের অন্যান্য মিশনেও কীভাবে আমরা অংশ নিতে পারি সেই বিষয়ে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।’

১৯৮৮ সালে মাত্র ১৫ জন পর্যবেক্ষককে জাতিসংঘের ইরাক-ইরান মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ মিশনে পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বাহিনীর ‘নীল হেলমেট’ পরার যাত্রা শুরু হয়। পরের বছর ১৯৮৯ সালে এতে বাংলাদেশ পুলিশ যোগ দেয়। ১৯৯৩ সালে অংশগ্রহণ শুরু করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফলভাবে প্রায় ৪৩টি দেশ বা অঞ্চলে ৬৩টি শান্তিরক্ষা মিশন সম্পন্ন করেছে। যেখানে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী অংশ নিয়েছেন।

বর্তমানে পাঁচ হাজার ৬১৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী বিশ্বের ১০টি দেশ বা অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে পশ্চিম সাহারায় একটি, সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ছয়টি, কঙ্গোতে নয়টি, লেবাননে একটি ও দক্ষিণ সুদানে চারটি কন্টিনজেন্ট দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া সাইপ্রাস, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা স্টাফ অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন। এসব মিশনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা পেশাদারিত্ব, সাহসিকতা এবং মানবিকতার মাধ্যমে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম মিশন ছিল নামিবিয়ায়। ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত পুলিশের ২১ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা বিশ্বজুড়ে ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান ও মধ্য আফ্রিকা।

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page