December 21, 2025, 11:47 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুরের জনজীবন শীতে স্থবির মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারের জানাজা অনুষ্ঠিত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইসির সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান বৈঠক অনুষ্ঠিত সুদানে নিহত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকলেও আমলে নেওয়া হয়নি : সালাহউদ্দিন আহমদ হাদির হত্যাকারী দেশের বাইরে চলে গেছে কি না এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই : পুলিশ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাগেজ কাটা বন্ধে বডি-ওয়ার্ন ক্যামেরা উদ্বোধন সিরাজগঞ্জে বরের জুতা লুকানো নিয়ে সংঘর্ষ-ভাঙচুর-লুটপাট ; ভেঙে গেলো বিয়ে লালমনিরহাট সীমান্তে বিজিবির হাতে বিএসএফ সদস্য আটক পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শীত ও ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন
এইমাত্রপাওয়াঃ

জাপান বাংলাদেশের দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু : জাপান টাইমস- এর নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানকে বাংলাদেশের দীর্ঘকালের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের দুই মাসের মধ্যেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে এই দেশটি তাঁর হৃদয়ের খুব কাছের।
তিনি বলেন, ‘জাপান আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশ তার উন্নয়নের জন্য জাপানের অবিচল সমর্থন পেয়েছে এবং আমাদের স্বাধীনতার পর জাপানের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা পেয়েছে।
জাপান আমাদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে’ শিরোনামে নিজের লেখা একটি নিবন্ধে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন এবং তাঁর চার দিনের টোকিওতে সরকারি সফরের দ্বিতীয় দিন ২৫ এপ্রিল সেদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য জাপান টাইমস’এই নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
তিনি লিখেছেন, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আমার দেশ, বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যে বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে আমি আবার টোকিওতে এসেছি।
তিনি বলেন, ‘আমি মহামান্য স¤্রাট নারুহিতো এবং স¤্রাজ্ঞী মাসাকোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং আমাকে আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকেও শ্রদ্ধা জানাই। শেখ হাসিনা বলেন, আবে ছিলেন বাংলাদেশের একজন মহান বন্ধু।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার লাভের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দেয়া কয়েকটি দেশের মধ্যে জাপান অন্যতম।
তিনি লিখেছেন, এমনকি ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও জাপান অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছে, যা আমরা কখনও ভুলিনি বা ভুলব না। শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল জাপানি স্কুলের শিশুরা তাদের টিফিনের টাকা জমা করে সেই টাকা ঘূর্ণিঝড় এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের লোকদের জন্য সাহায্য করেছিল।
তিনি বলেন, ‘তারপর থেকে জাপান আমাদেও দীর্ঘকালে পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে রয়ে গেছে। জাপান আমার হৃদয়ের খুব কাছের একটি দেশ, ঠিক যেমন এটি আমার পরিবার এবং আমাদের জনগণের কাছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার ছোট বোন শেখ রেহানা জাপানের সাথে বিশেষভাবে সম্পর্কিত কারণ,  সে আমাদের পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের ছোট ভাই শেখ রাসেলের সঙ্গে ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে প্রথম জাপান সফর করেছিল।’
তিনি বলেন, জাপানের প্রতি তাঁর পিতার স্পর্শকারতার উত্তরাধিকার লালন করার পাশাপাশি দেশটির বিস্ময়কর উন্নয়নের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অতএব, আমি জাপানের অমূল্য অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে বারবার এখানে আসি। এগুলো আমাকে এই মহান দেশের ভাবমূর্তির মতো বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য আমার শরীর ও আত্মাকে কাজে লাগাতে এবং আত্মনিয়োগ করতে উৎসাহিত করে। এখন আমি অনুভব করি যে, আমাদের দ’ুদেশের সম্পর্ক একটি ঈর্ষণীয় স্তরে জোরদার করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের ব্যাপক অংশীদারিত্ব থেকে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর বাবা জাপানের উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ এবং জাপানকে মডেল হিসেবে অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি জাপানের জাতীয় পতাকার নকশা দেখেও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। উভয় পতাকাই বাংলাদেশের জন্য গাঢ় সবুজ এবং জাপানের জন্য সাদা রঙের পটভূমির বিপরীতে কেন্দ্রে লাল বৃত্তসহ আয়তাকার।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘তাদের ফিরে আসার পর, তারা প্রায়ই তাদের জাপানের স্মরণীয় অভিজ্ঞতার কথা বলতেন। সেগুলো আমাদের স্মৃতিতে রয়ে গেছে, যা আমাদেরকে এখন আরও বেশি বেদনার্ত করে, সেই ঐতিহাসিক সফরের পর রেহানা এবং আমি ছাড়া আমাদের পরিবারের সকল সদস্যকে মাত্র ২২ মাসের মাথায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

জাপানি বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সাম্প্রতিক ওডিএ ঋণ প্যাকেজে জাপান বাংলাদেশকে অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি সহজ শর্তে ২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দ্বিমুখী দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ২০২১-২০২২অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।’
এছাড়াও তিনি বলেন, ঢাকায় মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ট্রেন লাইন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং আড়াইহাজারে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ জাপান বাংলাদেশের কয়েকটি বড় অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এমআরটি লাইনের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় কাজ করার সময় কিছু জাপানি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞকে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
তিনি নিবন্ধে লিখেছেন, ‘এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার পর্বগুলোর একটি। আমি অনেক দুঃখের সাথে তাদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করছি এবং আবারও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এই দুঃখজনক ঘটনা সত্ত্বেও আমাদের জাপানি বন্ধুরা প্রকল্প থেকে সরে আসেনি বরং এর পরিবর্তে নিষ্ঠার সাথে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ঢাকায় দেশের প্রথম এমআরটি লাইন-৬, স্থাপন করা হয়, যা গত ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমার মেয়াদের গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জনে অনেক দূর এগিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ আর দারিদ্র্য পীড়িত নয়। বরং, এটি এখন উন্নয়নের বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। এখানে দেড় দশকে মাথাপিছু আয় পাঁচ গুণেরও বেশি বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, মানব সম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, কোভিড-১৯ মহামারির আগে, বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রায় এক দশক ধরে গড়ে ৬ দমমিক ৫ শতাংশ এবং ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। শেখ হাসিনা আরো বলেন, যদিও মহামারি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছিল। দেশটি এই মহামারির মুখোমুখি হওয়ার কারণে মানুষের জীবন এবং জীবিকার ভারসাম্যের মধ্যে এর একটি প্রভাব পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলো, আমরা যখন মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার হচ্ছিলাম, ঠিক তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আমাদের উন্নয়নের উপর আঘাত হানে। এর ফলে জ্বালানী, খাদ্য এবং অন্যান্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছে, সেইসাথে সাপ্লাই চেইনের ব্যাঘাত আমাদের মত দেশগুলোকে ভয়ঙ্কর বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতেও সমস্যায় ফেলেছে।
তিনি লিখেছেন, গত বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত  হেনেছিল। এতে অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। পাশাপাশি, ফসল, বাড়িঘর এবং মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মে এবং জুন ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যা বাংলাদেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব অঞ্চলগুলোকে প্লাবিত করে। যার ফলে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। আমাদের সহনশীল লোকরা এই ধরনের দুর্যোগের সাথে জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত।’
তিনি বলেন, সমস্ত বিপদ সত্ত্বেও, বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল এবং বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে রয়ে গেছে। কারণ, বাংলাদেশের উদার নীতি ও আইন বিনিয়োগের জন্য অনুকূল এবং উৎসাহজনক।
এর মধ্যে রয়েছে এফডিআই সম্পর্কিত আর্থিক নীতি, ট্যাক্স সুবিধা, রপ্তানির জন্য প্রণোদনা এবং একটি তরুণ, প্রতিযোগিতামূলক শ্রমশক্তি। তিনি আরো বলেন, ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা একটি আকর্ষণীয় উদ্যোগ যা দেশীয় এবং বিশেষ করে বিদেশী উভয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশ কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। এটি পশ্চিমে ভারতীয় উপমহাদেশকে পূর্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে সংযুক্ত করেছে। প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ে বাংলাদেশের গ্রাহক ভিত্তি ৩ বিলিয়ন।
তিনি বলেন, ‘অতএব, এটি ধীরে ধীরে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। আমাদের উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশে জাপানিদের আরো বেশি বিনিয়োগ দেখে বাংলাদেশ খুব খুশি হবে।’
রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ছয় বছরে বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ১১ লাখ মিয়ানমারের নাগরিককে দেখাশোনা করতে গিয়ে উভয়সঙ্কটে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নিবন্ধে লিখেছেন, ‘গণহত্যার মুখে রোহিঙ্গা নামে পরিচিত এই লোকদের বাংলাদেশ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছিল। তাদের দীর্ঘ উপস্থিতি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন ও জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। এখন তারা বাংলাদেশসহ সমগ্র অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। জাপান, এই অঞ্চলে তার ফলপ্রসু প্রভাবের মাধ্যমে মধ্যস্থতা করতে পারে এবং এই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে সাহায্য করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান উভয়ই শান্তি-প্রিয় দেশ, বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা, টেকসই উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি সমুন্নত রাখতে আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সহযোগিতা এবং বন্ধুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে এবং সমৃদ্ধ হবে।’

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page