06 May 2024, 03:12 am

ঝিনাইদহের সফল কৃষি উদ্যেক্তা সাব্বিরুল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : দেশে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে আবাদি জমি। ঠিক সেই সময়ে নতুন করে কৃষিতে যুক্ত হচ্ছে অনাবাদি জমিও। আবার সম্ভাবনার এই কৃষি খাতে উদ্যেক্তা হয়ে উঠছেন অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক। যারা কৃষিতে যুক্ত করছে অনেক আধুনিক প্রযুক্তি। তেমনই এক যুবক ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের কৃষি উদ্যেক্তা সাব্বিরুল ইসলাম (৩৫)। নিজে অর্জন করেছেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। তবে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হয়েও তিনি বেছে নিয়েছে সভ্যতার এই প্রথম পেশা। কৃষি কাজের জন্য পৈত্রিক ৩ বিঘা জমির সাথে বর্গা নিয়েছেন আরো ১০ বিঘা জমি। গড়ে তুলেছেন অপ্সরা এগ্রো নামে একটি মেগা প্রজেক্ট। তার এই প্রজেক্টে চাষ হচ্ছে ড্রাগন, মালটা, পেয়ারা, শীতকালীন ও বারো মাসি সবজি বরবটি, ফুলকপি, পাতাকপি,মিষ্টিকুমড়া, সবুজ শাক, পেয়াজ,রসুনসহ নানাবিধ ফসল। আবার এই প্রজেক্টে কর্মসংস্থান হয়েছে অন্য ২০জন শ্রমজীবি মানুষের।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে এ বছর শুধুমাত্র কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮০ একর জমিতে ৪০ জনেরও বেশি চাষি চাষ করছেন ড্রাগন। ২০১৪ সালে প্রথম ড্রাগন চাষ করেন কৃষক বোরহান উদ্দিন। উপজেলার খামার মুন্দিয়া গ্রামে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি এই চাষে আগ্রহী হন ফুল ও স্ট্রবেরি চাষি বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আশরাফ হোসেন স্বপন। তিনিও একই বছর ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারা এনে ২৫ শতক জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। এরপর শিবনগর গ্রামের সুরোত আলী ১৭ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। স্থানীয় বাজারসহ রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় এ ফলের চাহিদা অনেক। প্রচুর পুষ্টি গুণ সম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি ও রক্তের কোলেস্টরেল কমায়। সাব্বিরুল ইসলাম জানান, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই তার এই কৃষি উদ্যোগ। নিজের কর্মের পাশাপাশি প্রতিদিন ২০ জন বেকার যুবকের কর্মের সুযোগ করে দিতে পারছেন এটাই তার ভালোলাগা।
বর্তমানে তিনি নরেন্দ্রপুর মাঠে ১০ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন ড্রাগন, বাকি ৩ বিঘাতে রয়েছে পেয়ারা, মালটা ও সবজি। বিভিন্ন সময় সাথী ফসল হিসেবে পিয়াজ, রসুন ও অন্যান্য চাষাবাদ করে থাকেন। তিনি এ পেশায় নিযুক্ত হবার আগে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে আর এস এম হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পরিবার থেকে প্রথমদিকে নিরুৎসাহিত করা হলেও এখন সবাই তাকে সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসাবে দেখছেন। শ্রীরামপুর গ্রামের চাষী গোলাম কিবরিয়া জানান, তিনি ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সানবান্ধা মাঠে ২০১৭ সালে ২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেন। প্রথম বছরে খরচ হয় ৫ লাখ টাকা। এক বছর পর ৬ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেন। খরচ বাদে ওই বছর তার ১ লাখ টাকা লাভ থাকে।
কালীগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, উপজেলার দুইজন চাষি ক্যাকটাস প্রজাতির এ ফলের চাষ প্রথম শুরু করেন। তাদের দেখাদেখি এখন অনেকে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। লাভজনক এ ফসলের চাষে আমরা তাদের প্রশিক্ষণসহ কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছি। এই উদ্যোক্তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে স্থানীয় চাহিদা পুরণের পর বিশ্ব বাজারে রপ্তানি করবেন তার এই কৃষি পণ্য । কর্মসংস্থানের পাশাপাশি উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই পেশাকে নিয়ে যেতে চান বিশ্ব দরবারে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2844
  • Total Visits: 699878
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1125

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ ইং
  • ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:১২

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018