22 Dec 2024, 04:07 pm

ঝিনাইদহে ৪৪১ কালাজ্বর রোগী শনাক্ত ; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

এম কবীর, ঝিনাইদহ : ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় ৪৪১ জন কালাজ্বর রোগী পাওয়া গেছে। তবে এ সংখ্যা দিনে দিনে কমে আসছে। ঝিনাইদহে স্থানীয় পর্যায়ে অবহিতকরণ এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। গত ৬ নভেম্বর সকাল ১১ টায় ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হল রুমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় কালাজ্বর নির্মূল কর্মসূচির আয়োজনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র এডভাইজার ডাঃ মিজানুর রহমান,ডিপিএম,সিডিসি ডাঃ বিল্লাল হোসেন,জাতীয় কালাজ্বর নির্মূল প্রকল্পের ডাটা ম্যানেজার পংকজ ঘোষ,বিশা্ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডাঃ ফারহানা, ঝিনাইদহ সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ডাঃ ফারজানা ইয়াসমিন এবং ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এম এ কবীর। উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ নাজিম জোয়ার্দ্দার, প্রকাশ চন্দ্র শর্মা,শামীম আহম্মেদ বাবু,কাজল কুমার বিশ্বাস, এবং এম এস আমিন (লিটন)। সভায় জানানো হয় ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর স্কুল পাড়ার বিজয় দাস (৪৭) গত প্রায় দেড় বছর যাবৎ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। (বিজয় দাস শহরের আলফালাহ হাসপাতাল সংলগ্ন একটি সেলুনে চুল কাটার কাজ করেন।) এ উপলক্ষে রোগীর বসবাস এলাকায় তিন দিনের কর্মসূচী ঘোষনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কর্মসূচীর প্রথম দিনে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রোগী সনাক্তকরণ, পরীক্ষাকরণ এবং অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বলা হয়, কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব এখনো ঝিনাইদহ জেলায় রয়েছে। প্রতি বছরই কালাজ্বরের রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত বছর দুই জন কালাজ্বরের আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে এক জনের বাড়ি ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর স্কুল পাড়ায়, অন্য জনের বাড়ি মহেশপুর উপজেলার রুলি গ্রামে। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলা কালাজ্বর প্রবণ বলে চিহ্নিত। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ শ্রভ্রা রাণী জানান, ঝিনাইদহ জেলায় কালাজ¦র নির্মূলে কাজ চলছে তবে মহেশপুর উপজেলার রুলি গ্রামে কালা জ¦রে আক্রান্ত রোগীর বিষয়ে তথ্য নিয়ে পরে জানানো যাবে।

জানা যায়, বিৃটিশ ভারতে ১৮২৪ সালে যশোর জেলায় প্রথম কালাজ্বর শনাক্ত হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। ১৮২৪ থেকে ১৮২৭ এই চার বছরের মধ্যে ৭৫ হাজার মানুষ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তবে যশোর জেলায় সর্বশেষ ২০১৬ সালে একজন কালাজ্বরের রোগী পাওয়া যায়। তিনি বলেন, শুধু ঝিনাইদহ জেলা নয় দেশের ২৬ জেলার ১০০ উপজেলা কালাজ্বরপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত।

সভায় বলা হয়, গত বছর (২০২১) সারা দেশে ৯৯ জন কালাজ্বর রোগী শনাক্ত হয়। তার মধ্যে চার জন মারা যান। চলতি বছরের এ পর্যন্ত সারা দেশে ৪২ জন কালাজ্বর রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন এক জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন জাতীয় কালাজ্বর নির্মূল প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কালাজ্বর মুক্ত করা হবে।

সভায় জানানো হয় কালাজ্বরের বাহক বেলে মাছি (স্যান্ডফ্লাই) স্যাঁতসেঁতে জায়গায় থাকে এবং লাফিয়ে চলে। এ মাছি কালাজ্বরের জীবাণু বহন করে। সুস্থ মানুষকে কামড় দিলে সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়। দ্রুত সময়ে চিকিৎসা না করলে রোগী মারা যায়। একটি ইনজেকশনে কালাজ্বর সেরে যায়। ব্যয়বহুল হলেও সরকার বিনা মূল্যে কালাজ্বরের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। কালাজ্বরের লক্ষণ হলো, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বর, প্লিহা বড় হয়ে পেট ফুলে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা ও দেহের শক্তি কমে যাওয়া।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 4462
  • Total Visits: 1408902
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1675

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ১৯শে জমাদিউস-সানি, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৪:০৭

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
      1
23242526272829
3031     
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018