বশির আল–মামুন চট্টগ্রাম : তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম যাতে শুরু না করতে পারে তার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে (ডিসি) আদেশ হাতে পাওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে রোববার (৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মণ্ডল, অ্যাডভোকেট একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট নাসরিন সুলতানা ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডিএজি মো. তানিম খান।
পার্বত্য তিন জেলার লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধে ২০২২ সালে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ(এইচআরপিবি) এর পক্ষে রিট করেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরীসহ ২ জন। রিট পিটিশনে বিবাদীরা হলেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ মোট ২৪ জন। দায়ের করা ওই রিট পিটিশন শুনানি নিয়ে আদালত বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বিবাদীরা এখন পর্যন্ত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এবং আদালতে কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করায়, এইচআরপিবির এর পক্ষে আদালতে একটি আবেদন করা হয়। এতে বলা হয় যে, (অক্টোবর ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫) পর্যন্ত ইট উৎপাদন ও ভাটা পরিচালনার মৌসুম। এই সময়ের মধ্যে সারাদেশে লাইসেন্সবিহীন অসংখ্য অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে এবং করতে যাচ্ছে যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত হুমকি স্বরূপ। অবৈধ ইট ভাটাসমূহ যাতে কার্যক্রম শুরু করতে না পারে এ বিষয়ে আদালতে আবেদনটি দাখিল করা হয়।
হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তার আদেশে বলেন, ১ সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসক নিজ নিজ এলাকার অবৈধ ইটভাটার মালিকরা যাতে তাদের কার্যক্রম শুরু না করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং উক্ত কার্যক্রম সম্পর্কে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এছাড়াও যে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে তারা হলেন, জেলা প্রশাসক বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি।
শুনানিতে রিটকারী এইচআরপিবির কৌশলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন যে, অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। এছাড়া তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম যাতে শুরু করতে না পারে সে মর্মে নির্দেশনা না দিলে এসব অবৈধ ইনভাটা পুনরায় আবার এ মৌসুমী কাজ শুরু করবে। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হবে।
Leave a Reply