অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। সঙ্গে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রনায় ত্রাহি অবস্থা। ফলে বেড়েছে চার্জার ফ্যানের চাহিদা। এ অবস্থায় প্রচণ্ড গরমে কিছুটা স্বস্তি পেতে বিকল্প খুঁজছে মানুষ। ফলে বেড়েছে চার্জার ফ্যানের (রিচার্জেবল ফ্যান) চাহিদা। নামিদামি ব্র্যান্ডসহ কোনো সাধারণ শোরুমেই এখন মিলছে না চার্জার ফ্যান। এই চাহিদাকেই পুঁজি করে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্সের দোকানে এখন দেড় থেকে দুইগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে চার্জার ফ্যান। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে চার্জার লাইট ও ফ্যানের চাহিদা বৃদ্ধিতে ১ হাজার টাকার ফ্যান ৩-৪ হাজার কিংবা কোন কোন ফ্যানের দাম ৭-৮ হাজার টাকাও হাঁকাচ্ছেন দোকানিরা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, মোটা মুনাফার লোভে সংকট তৈরি করা হচ্ছে। দোকান, শোরুমে যা ও পাওয়া যাচ্ছে, সরবরাহ কমের কথা বলে সেগুলোর জন্য কয়েকগুণ বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীসহ সারা দেশের ফ্যানের বাজার পরিস্থিতি একই রকম। চার্জার ফ্যান নিয়ে ক্রেতাদের এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার যেন কেউ নেই। মাঠে দেখা যায়নি কোনো সরকারি তদারককারী কোনো সংস্থার তৎপরতা। বিক্রেতারা দিচ্ছেন না কোন ক্যাশমেমো কিংবা স্লিপ। সরবরাহ ঘাটতির অভিযোগে দাম বৃদ্ধি, বলছেন দোকানীরা। আর আমদানীকারকদের অভিযোগ ডলার সংকটে এলসি করতে না পারায় সৃষ্টি হচ্ছে এমন পরিস্থিতি।
গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট ও নবাবপুর মার্কেটের একই চিত্র। সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের কয়েকটি দোকানের বিক্রয়কর্মী ও মালিকদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, আগে ৮ ইঞ্চির ফ্যান ২ হাজার টাকা বিক্রি হতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। ১২ ইঞ্চির ফ্যানের দাম ছিল ৩ হাজার টাকা, তা এখন ৫ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আবার ১৬ ইঞ্চি ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার টাকায়, যার পূর্ব মূল্য ছিল ৪ হাজার টাকা। ১৮ ইঞ্চি ফ্যান ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৯ হাজার টাকা। আবার ব্র্যান্ড ভেদে হাজার টাকা কম-বেশিতেও বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের এই অভিযোগ সম্পর্কে ইতোমধ্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অবগত জানিয়েছে, অভিযোগ উপবিভাগের উপপরিচালক মাসুম আরেফিন বলেন, মহাপরিচালক ইতোমধ্যে সারা দেশে তদারকি কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে সব সময় সব কিছুতেই সরকারের মনিটরিং দিয়েই কি ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ?
ব্যবসায়ীদের নীতি নৈতিকতা আর মূল্যবোধের অবক্ষয় আর সামাজিক অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতামূলক দর্শনের কারনে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া উপ কমিটির সহকারী সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম কবির। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধহীন সমাজ ব্যবস্থার কারনে একশ্রেনীর ব্যবসায়ীরা মানুষের চাহিদাকে পূঁজি করে ভোক্তাকে হয়রানী করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের নীতি নির্ধারকমহল দায় এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Leave a Reply