অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঝিনাইদহ জেলায় শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তীব্র শীতে ঝিনাইদহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
হাড় কাঁপানো শীতে জেলার দিনমজুর, শ্রমিক ও ছিন্নমূল মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে।
শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জেলাব্যাপী ঘন কুয়াশা পড়েছে। সেই সঙ্গে বয়ে যাচ্ছে উত্তরের হিম শীতল বাতাস। বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা চরমে পৌঁছেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহে শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানুয়ারি মাস জুড়েই থাকতে পারে শীতের তীব্রতা।
শনিবার সকাল ৯ টায় জেলা শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে বের হয়েছেন দিনমজুর শ্রমিকরা। শীত বেড়ে যাওয়ায় শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না তারা। এতে শ্রমিকদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আনারুল, বিশারত বিশ্বাস ও তরিকুল ইসলাম জানান, কাজের সন্ধানে ভোরবেলা শহরে এলেও কাজের সন্ধান পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। কাজের জন্য যারা শ্রমিকদের নিয়ে যান তাদের উপস্থিতি কমে গেছে। শীত বেশি হওয়ায় মানুষ কাজের জন্য শ্রমিক নিচ্ছেনা ।
শহরের চুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডের চা দোকানী বিল্লাল হোসেন জানান, ফজরের নামাজ পড়ে হাঁটাহাঁটি করার পরে অনেকেই দোকানে চা নাস্তা করতে আসতেন। শীতের কারনে কম মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন। যে কারণে চায়ের দোকান ও ছোট ছোট হোটেলগুলোতে বেচাকেনা কমছে ।
জেলা শহরের পায়রা চত্বরে ভ্রাম্যমাণ শীতের কাপড়ের দোকানী আশরাফুল ইসলাম জানান, ডিসেম্বরের শেষদিকে শীতের প্রকোপ কমলেও জানুয়ারির শুরুতেই তীব্র শীত পড়তে শুরু করেছে। গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ ও ছিন্নমূল মানুষেরা কম দামে গরম কাপড় কিনছেন। শিশু, বয়স্কসহ সব বয়সের মানুষের গরম কাপড়ের বেচাকেনা বেড়েছে।
গরম কাপড় কিনতে আসা জাহানারা খাতুন বলেন, বাড়িতে শিশুদের শীতের কাপড় আছে। তারপরও শীত বেশি হওয়ায় আরও কিছু কাপড় কিনতে এসেছি। কাপড়ের দাম বেড়েছে। কিন্তু না কিনে তো উপায় নেই।
ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পার্কের পাশে ঝালমুড়ি বিক্রেতা দাউদ মিয়া জানান, শীতের কারণে শহরে মানুষের ভিড় নেই। বেচা বিক্রি কম। শিশু-কিশোর ও ঘুরতে আসা মানুষেরা ঝালমুড়ি পছন্দ করেন। কিন্তু শীতের কারণে মানুষের উপস্থিতি কমেছে ।
শিশুকুঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বাসস’কে জানান, শীতের কারণে চলাফেরায় কষ্ট পাচ্ছে মানুষ। এ সময়ে অসচ্ছল ও ছিন্নমূল মানুষদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। সাধ্যমত শীতবস্ত্র বিতরণ করার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার।
ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বাসস’কে বলেন, শীত বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানুয়ারি মাস জুড়েই শীতের তীব্রতা থাকতে পারে। এ সময়ে শিশু ও বয়স্কদের সতর্কতার সঙ্গে যত্ন নেয়া উচিত। ঠাণ্ডা ও বাসি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় গরম কাপড় পরিধান করার বিকল্প নেই।
Leave a Reply