23 Jan 2025, 03:58 pm

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত লালমনিরহাটের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

 অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  কনকনে ঠান্ডা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের মানুষ। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে জনজীবনে।

সূর্যের উত্তাপ না থাকায় শীতের তীব্রতাও অনেক বেশি।

ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। সেই সাথে দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে শিশু ও বয়স্কদের। গত কয়েকদিন থেকে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১১ ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে।

রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,  আজ সকাল ৯ টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,  কনেকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী  মানুষ। শীতে কষ্ট পাচ্ছে গৃহপালিত পশুপাখিরাও। কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের দিনমজুর মোহাম্মদ আলী (৫০) বলেন, এই কনকনে ঠান্ডা আর বাতাসের কারণে গতকাল কাজে যাইনি। আজকেও মনে হচ্ছে যাওয়া হবে না। এ ঠাণ্ডায় বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না আর মাঠে গিয়ে কীভাবে কাজ করব? টেনশনে আছি দুইদিন পর এনজিওর কিস্তি পরিশোধের তারিখ আছে।

একই এলাকার আমিনুল ইসলাম (৪০) বলেন, ঠাণ্ডায় অবস্থা খুব খারাপ। রাতে ও দিনে সব সময়ই বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। রাতে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে বাসায় ছোট বাচ্চাকে নিয়ে সমস্যায় আছি।

বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আজগর আলী (৪২) বলেন, টানা প্রায় এক মাস ধরে শীত প্রকট হওয়ায় জমিতে  বীজতলাসহ আলুর ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করেও ফসল রক্ষা করা যাচ্ছে না। আলুর গাছ আর বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

অন্যদিকে, লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা। এ বিষয়ে, লালমনিরহাটের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আব্দুল মোকাদ্দেম বাসস’কে বলেন, আমরা প্রতিবছরই এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করে চলেছে।

তিনি বলেন, এসময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায়  যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তারা দ্রুতই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি রয়েছে। রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। শিশুদের কোনোভাবেই ঠান্ডা লাগানো যাবে না।

তিনি নবজাতক শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার বলেন, ‘প্রতি বছরই এ এলাকায় শীতের দাপট অনেক বেশি থাকে। তাই ঠান্ডার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল মানুষের মাধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 5769
  • Total Visits: 1512501
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1698

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ২২শে রজব, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৩:৫৮

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018