অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচিত শহরগুলোর জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা শক্তিশালী করতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ‘উপকূলীয় শহর জলবায়ু সহিষ্ণু’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেশের তিনটি বিভাগের ১০টি জেলার ২২টি পৌরসভায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। ২ হাজার ৫৮০ কোট টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচিত উপকূলীয় শহরগুলোর জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা শক্তিশালী করা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। গত ২২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘কোস্টাল টাউনস ক্লাইমেট রেসিলিন্স’ শীর্ষক প্রকল্পের মোট ব্যয় ২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ৪৩০ কোটি টাকা। বাকি ২ হাজার ১৫০ কোটি টাকা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ। কারণ ব্যাখ্যা করে কমিশন বলেছে, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার নবম অধ্যায়ে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন কৌশল অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনকে নগর উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এ কারণে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
কমিশন আরও জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ৬৬ দশমিক ৫৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ৩০৯ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। ১ হাজার ৪৫ দশমিক ৮০ মিটার সেতু নির্মাণ করা হবে। ১৪০ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার ড্রেইনেজ ও ফ্লাড কন্ট্রোল নির্মিত হবে। ২১টি স্কুল কাম-সাইক্লোন সেন্টার নির্মিত হবে। ৪টি সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বসবে। এসব বাস্তবায়নে ৪ হাজার ১৬৪ জন পরামর্শক নিয়োগ করা হবে।
এ ছাড়া দুটি ওপেন স্পেস (গ্রিন, ব্লু স্পেস, পার্ক) ৩টি নেচার বেস সলিউশন, ২২টি বস্তি উন্নয়ন, ২১টি মাল্টিপারপাস মার্কেট নির্মাণ, ৪টি বাস টার্মিনাল এবং ২৭টি যানবাহন কেনা হবে। চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৯ সালের জুন নাগাদ শতভাগ বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচিত উপকূলীয় শহরগুলোর জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ‘উপকূলীয় শহর জলবায়ু সহিষ্ণু প্রকল্প’ শীর্ষক বিনিয়োগ প্রকল্পটি অনুমোদন করা যেতে পারে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচিত উপকূলীয় শহরগুলোর জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা শক্তিশালী করা এবং একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করতেই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এটি বাস্তবায়িত হলে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচিত উপকূলীয় শহরগুলোর জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীলতা শক্তিশালী হবে।’
Leave a Reply