অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বাংলাদেশের বাতাসে দূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। মনুষ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে বিভিন্ন জনবহুল শহর, এমন সব তথ্য উঠে আসেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয় দূষণ বন্ধে নগরীতে অভিযান শুরু করেছে। চেষ্টা চলছে গাড়ির কালো ধোঁয়া রোধ করার। কিন্তু সারাদেশে এখনো ভাটাগুলোতে চলছে ইট তৈরির কার্যক্রম। যেখানে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা থাকলেও অধিকাংশ ইটভাটারই সেগুলো নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য এবং পবার মাঠ পর্যায়ের তথ্য মতে ড্রাম চিমনির ভাটাসহ দেশে বর্তমানে ইটভাটার সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। যার প্রায় ৫০ ভাগই অবৈধ। এসকল ইটভাটায় আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ড্রাম চিমনি ও ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনির ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। বেশিরভাগ ইটাভাটাই নিয়মবহির্ভূতভাবে স্থাপন করা হয়েছে লোকালয় তথা মানুষের বসতবাড়ি, গ্রাম-গঞ্জ, শহর বন্দরের অতিসন্নিকটে, কৃষি জমিতে, নদীর তীরে, পাহাড়ের পাদদেশে। ইটভাটাগুলো থেকে নির্গত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ইটভাটার সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি ধুলা-ময়লা উড়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। ইটভাটাসৃষ্ট দূষণ পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি উৎপাদন ও ফল-মূলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত এবং গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করছে। রাজধানী ঢাকার আশপাশে সাভার, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনো অবৈধ ইটভাটায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাতাস। আর দূষণে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
আবু নাসের খান
এমন অবস্থায় মাঠ পর্যায়ে পরিবেশ অধিদপ্তর শক্ত অভিযান চালাচ্ছে বলে জানালেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: নয়ন মিয়া। তবে ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’-পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান মনে করেন, ইটভাটাগুলোতে এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করার সময় এসেছে। নইলে মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এমন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ একসময়ে দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি বয়ে আনবে।
Leave a Reply