অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আমেরিকার আরব ভাষার মিডিয়া ‘আল-হুরা’ টিভি চ্যানেল ইরাকের প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় কর্তৃপক্ষকে অবমাননা করার বিরুদ্ধে ইরাকিদের ব্যাপক বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অর্গানাইজেশন মার্কিন সমর্থনপুষ্ট এই মিডিয়ার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা দিয়েছে।
আল-হুরা আমেরিকান টিভি ২০০৪ সালে আরবি ভাষায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই নেটওয়ার্কের আর্থিক সংস্থানগুলোর একটি বড় অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস দ্বারা সরবরাহ করা হয়। এই নেটওয়ার্কটি ইরাকে অস্থিরতা বিস্তারে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে এসেছে এবং সম্প্রতি সব মহলের পক্ষ থেক অবরুদ্ধ হওয়ার ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে৷ পার্সটুডে অনুসারে, ইরাকি কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অর্গানাইজেশন এই দেশের মিডিয়ার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য সরকারী সংস্থা হিসাবে সোমবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ঘোষণা করেছে যে এই আমেরিকান মিডিয়ার কার্যক্রম তিন বছরের জন্য স্থগিত করা হবে। ইরাকের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও প্রতীকের অবমাননার প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।এই খবর ঘোষণার পর ইরাকি কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অর্গানাইজেশন এক বিবৃতিতে আমেরিকান মিডিয়ার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে।
আল-হুরা টিভি ইরাকের ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে একটি জাল প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরে এবং এই দেশে তথাকথিত ধর্মীয় দুর্নীতির মামলার তদন্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ইরাকি কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অর্গানাইজেশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি ঘটলে আমেরিকার এই টিভি চ্যানেলের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ইরাকি কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অর্গানাইজেশন আরও উল্লেখ করেছে যে এই প্রতিবেদনের দ্বারা প্রভাবিত সকলেই এই আমেরিকান নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এই সংস্থাটি এই বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে যে এই আমেরিকান মিডিয়ার প্রতিবেদনটি মিডিয়া গবেষণা ও গবেষণার নীতি থেকে অনেক দূরে এবং প্রতিবেদনের অনেক ক্ষেত্রে পেশাগত কাজের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘আল-হুরা’-এর প্রতিবেদনে ইরাকে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইরাকের প্রতিরোধকামী সংগঠন হাশদ আস-শাবি ঘোষণা করেছে যে আল-হুরা টিভি ‘একটি প্রতিকূল সংবাদ নীতি’ অনুসরণ করছে। ইরাকের আসাইব আহল আল হক আন্দোলনের মহাসচিব কায়েস আল-খাজালিও এই প্রতিবেদনটিকে “আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতির বিপজ্জনক লক্ষণ হিসাবে অভিহিত করেছেন।
ইরাকের সুন্নি ধর্মীয় সংগঠনগুলোও বলেছে, এই প্রতিবেদন সম্পূর্ণ ‘মিথ্যা’। আমেরিকান আল-হুরা নেটওয়ার্ক যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরাক দখলের পর কাজ শুরু করে। ইরাকি গণমাধ্যমের ঘোষণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এই মিডিয়া ব্যবহার করে ধর্মীয় কর্তৃত্ব এবং ইরাকি জনগণের মূল্যবোধ ও বিশ্বাসকে দুর্বল করতে চাইছে। ইরাকের মিডিয়া বিশ্লেষকদের মতে আল-হুরা নেটওয়ার্কের কর্মকাণ্ডকে ইরাকি জনগণের হৃদয়ে বিভাজন ও হতাশা তৈরি করতে এবং কিছু দেশের সাথে বিশেষ করে ইরানের সাথে ইরাকের কৌশলগত সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য একটি শীতল যুদ্ধের তৎপরতা হিসেবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।
Leave a Reply