November 19, 2025, 4:43 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভার উন্নয়ন কাজে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মনিটরিং ঝিনাইদহের মহেশপুরে সড়কে ডাকাতি রোধে পুলিশের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ মাগুরায় এসডিএফ এর আয়োজনে জেলা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক স্টেকহোল্ডার কর্মশালা আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সুষ্ঠু ভোটের জন্য আচরণবিধি মেনে চলা জরুরি : প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি : বিএনপি মহাসচিব দেশের সব মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান বন্ধের ঘোষণা কেউ ভোট হাইজ্যাক করতে চাইলে যুবক হয়ে বিস্ফোরিত হবো : জামায়াতের আমির দেশের মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১শ’৮৩ জন
এইমাত্রপাওয়াঃ

নতুন পাট পণ্য আবিস্কার ও বিদেশে বাজার খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  সোনালী আঁশ বিদেশে রপ্তানি করে উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার সম্ভাবনাকে গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন পাটজাত পণ্য আবিস্কার এবং বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পরিবেশ বান্ধব পণ্যের (দেশে এবং বিদেশে) বিশাল বাজার থাকায় রপ্তানি বাড়াতে নতুন পাটজাত পণ্য আবিষ্কার এবং বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে বের করুন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি পাটকল ও ‘বহুমুখি পাটপণ্য মেলা-২০২৪’ এর উদ্বোধনকালে ভাষণে একথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ঘাষণা করেন তাঁর সরকার কৃষি ও রপ্তানি পণ্য হিসাবে পাটের জন্য প্রনোদনা প্যাকেজ দেবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক বাজার আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। পাটের বহুমুখী উৎপাদন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাট কৃষিপণ্য, আবার শিল্পের কাঁচামাল। রফতানিও হয়। এটি কৃষিরও প্রণোদনা পায় না, আবার রফতানিরও প্রণোদনা পায় না। আমি পরিবেশবান্ধব এ পণ্যটিকে কৃষিজাত ও রফতানিমুখী পণ্যের স্বীকৃতি এবং প্রণোদনা দেব।
প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তা ও দেশ উভয়ের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পাট খাতের যথাযথ যতœ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি পাটের সাথে জড়িত সবাইকে বলছি, আমি একটি সম্পদ আপনাদের কাছে হস্তান্তর করেছি ,এর যতœ নিন। এর সঠিক ব্যবহারে আপনি এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।’
তিনি যারা পাটকলের ইজারা পেয়েছেন তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলার আহবান জানিয়ে বলেন, তারা এই খাতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আনবেন এবং মিলগুলি যৌথভাবে পরিচালনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা পাটকলগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালনায় নজর রাখবেন।
তিনি বলেন, সোনালী আঁশ, সোনার বাংলা গড়ে তোলায় বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের সমৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। জাতির পিতার ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় সহায়ক হবে। এজন্য পাটের বহুমুখী ব্যবহারে নানা উদ্যোগ নেবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক পাটকল অলাভজনক ছিল। সেগুলো বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দিয়েছি। সম্পূর্ণ নগদ টাকা হাতে দেইনি। পারিবারিক সঞ্চয় করে দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বৈজ্ঞানিকরা গবেষণা করে পাটের জন্ম রহস্য উদ্ভাবন করেছেন। আমি তাদের সুযোগ করে দিয়েছি। তাতে পাটের গুরুত্ব বেড়েছে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার হয়। পাটের ফার্নিচার ও আসবাবপত্র বানানো যায়। গাছের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়েছে। এটি পরিবেশবান্ধব পণ্য হওয়ায় আমাদেরও সুযোগ বেড়েছে। এ পাট শিল্পকে কিভাবে আরও প্রসার করা যায় তার সুযোগ করে দিয়েছি। পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে পারলে রফতানির পথ সুগম হবে। রফতানিমুখী পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশ আর এগোতে পারেনি। আমাদের সম্পদ সীমিত। এটাকে কাজে লাগাতে জাতির পিতা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই পাটকে কাজে লাগাতে বঙ্গবন্ধুই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছেন। পাট আমাদের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারে। একে বলা হয় সোনালী আঁশ। পাট যেমন কৃষিপণ্য অন্যদিকে এটি ইন্ডাস্ট্রির কাঁচামাল। কিন্তু এটি পরিবেশবান্ধব পণ্য। পাটের কোনো কিছুই ফেলা যায় না। পাটের সব কিছুই কাজে লাগে। কৃষক যে ক্ষেতে পাট চাষ করে, সেটায় আবার ধান চাষ করে। কারণ পাট পাতা পঁচে মাটির উর্বরতা বাড়ায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০টি মিলের মধ্যে ছয়টি চালু করায় ১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বাকি ১৪টি মিল চালু হলে আরও ২৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
নতুন খোলা ছয়টি পাটকল, যেগুলি বিজেএমসি দ্বারা ইজারা দেয়া হয়েছিল কিন্তু এখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে সেগুলি হচ্ছে- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কেএফডি জুট মিলস লিমিটেড, নরসিংদীর ঘোড়াশালে বাংলাদেশ জুট মিলস, সিরাজগঞ্জের রায়পুরে জাতীয় জুট মিলস লিমিটেড, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং যশোরের রাজঘাটে কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড এবং খুলনার খালিশপুরে দৌলতপুর জুট মিলস লি.।
প্রধানমন্ত্রী পাট খাতের উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য ১১ ক্যাটাগরিতে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং ৯টি পাট সংশ্লিষ্ট সমিতির হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
তিনি পরে পাটপণ্য মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিািটর সভাপতি গোলাম দস্তগীর গাজী এবং বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিেেজএমএ) চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ স্বাগত বক্তৃতা করেন। জাতীয় পাট দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

 

রপ্তানিযোগ্য পাট পণ্যের উৎপাদনে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন পন্য আবিস্কার ও নতুন বাজার তৈরীর দায়িত্ব আপনাদের। পাট পণ্যকে বহুমুখিকরণ এবং এ থেকে আর কি কি তৈরী করা যায় সে বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ২০০২ সালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। জেডিপিসি’র মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রায় ৬৫০ জন বেসরকারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। এই উদ্যোক্তাগণ প্রায় ২৮২ ধরনের পাটের তৈরি পণ্য বাজারজাত এবং রপ্তানি করছে। বর্তমানে কাঁচাপাট রপ্তানিতে প্রতিটনে সম্ভাব্য আয় হয় ৭০০-৮০০ ইউএস ডলার, ট্রেডিশনাল পাটের সুতা রপ্তানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য আয় ১০০০-১২৫০ ইউএস ডলার, পাটপণ্য রপ্তানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য ২০০০-৩০০০ ইউএস ডলার আর ভেলু এ্যাডেড বহুমুখী পাটপণ্য রপ্তানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য ৮০০০- ১২০০০ ইউএস ডলার আয় করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাটের সুতা, বস্তা, চট, কার্পেট পণ্যের পাশপাশি পাট দিয়ে পর্দার কাপড়, কুশন কভার, কার্পেট, শাড়ি ই তৈরি হয়। গরম কাপড় তৈরির জন্য উলের সঙ্গে মিশ্রণ করা যায়। পাটখড়ি থেকে উন্নতমানের কার্বন তৈরি হচ্ছে। পাটের আঁশ থেকে প্রসাধনী, ওষুধ, রং তৈরি সম্ভব। বাঁশ এবং কাঠের বিকল্প হিসেবে পার্টিকেল বোর্ড, কাগজের ম- ও কাগজ তৈরিতেও পাটখড়ি ব্যবহৃত হয়।
সম্প্রতি পাট থেকে জুট পলিমার তৈরির পদ্ধতি আবিস্কৃত হয়েছে, যা দিয়ে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি সোনালি ব্যাগের ব্যবহার দ্রুত প্রসারের উদ্যোগ গ্রহণেরও আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পখাত বিবেচনায় পাটশিল্প এখনও বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প। প্রতিবছর কাঁচাপাট, প্রচলিত পাটপণ্য এবং বহুমুখী পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। এদেশের পাট বিশ্বের অন্যতম নামকরা শিল্প কারখানা বিএমডব্লিউ,মার্সিডিজ বেঞ্জ, টয়োটা, রেনল্ট,ভলভো,অডি, ডেইমলার এ ব্যবহ্রত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ৯১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পাটের সম্ভাবনাকে যদি আমরা সম্পূূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারি, তবে আমাদের রপ্তানি আয় অনেক বেড়ে যাবে।’

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page