27 Apr 2024, 03:19 am

নামায সম্পর্কে কোরআনের আয়াত ও হাদীসে রসুল (সঃ) এর বাংলা অর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

“নিশ্চয়ই নামায অশ্লীল অসৎকাজ থেকে মানুষকে বারণ করে।” (সূরা ঃ আনকাবুত ঃ আয়াত ঃ ৪৫)

“নিশ্চয় যাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং নেক আমল করিয়াছে। আর (বিশেষভাবে ) নামাযের পাবন্দী করিয়াছে এবং যাকাত আদায় করিয়াছে তাহাদের রবের নিকট তাহাদের সওয়াব সংরক্ষিত রহিয়াছে। আর না তাহাদের কোন আশংকা থাকিবে এবং না তাহারা চিন্তিত হইবে। (সুরা- বাকারাহ আয়াত- ২৭৭)।

১. হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) ফরমাইয়াছেন ঃ যেই লোক নামাযের হেফাজত করে না (অর্থাৎ নামায আদায় করে না) রোজ কেয়ামতে সেই ব্যক্তি মুক্তি পাইবে না এবং মুক্তির সনদপত্রও পাইবে না। তদুপরি যে কোন প্রকার নুরও (জ্যোতি) লাভ করিবে না। বস্তুত সে ফেরাউন, কারুন, হামান ও মুনাফিক উবাই ইবনে খলফের সহিত জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হইবে। (মুসনাদে ইমাম আহমদ)
২. হযরত মায়া’য ইবনে জাবাল (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) আমাকে দশটি অছিয়ত (উপদেশ) প্রদান করিয়াছেন, উহার প্রথমটি হইতেছে, আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কাহাকেও শরীক করিও না, যদিও তোমাকে কাটিয়া টুকরা টুকরা করা হয় কিংবা তোমাকে আগুনে জ্বালানো হয়। আর উহার দ্বিতীয়টি হইতেছে তুমি কোন অবস্থায়ই ফরজ নামায পরিত্যাগ করিবে না। যেহেতু যেই ব্যক্তি ইচ্ছা করিয়া ফরজ নামায ছাড়িয়া দিবে আল্লাহ তা’আলা তাহার কোন দায়িত্বই গ্রহণ করিবেন না। (তিবরানী)।
৩. একদা হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) মসজিদে নববীতে ফজর নামাযের পরে এরশাদ ফরমাইয়াছেন, আজকে রজনীতে দুইজন ফেরেশতা আগমন করতঃ তাহাদের সঙ্গে আমাকে নিয়া পথ চলিল। পথিমধ্যে আমি প্রত্যক্ষ করিলাম যে, একটি লোক মাটির উপর শুইয়া রহিয়াছে এবং অন্য একজন লোক তাহার মস্তকের দিকে দাঁড়াইযা অতি জোরের সহিত মাথায় পাথর দ্বারা আঘাত করিতেছে, ইহাতে তাহার মস্তক ঢূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া যাইতেছে এবং পাথর খানা ছুটিয়া দূরে গিয়া পতিত হইতেছে। তৎপর আঘাতকারী লোকটি পাথর খানা নিয়া আসিবার মধ্যে চূর্ণ বিঢূর্ণ মস্তক জোড়া লাগিয়া যাইতেছে, আঘাতকারী লোকটি পাথর নিয়া আসিয়া পুনরায় শায়িত লোকটির মস্তকে পাথর ছুড়িয়া মারিতেছে এবং মস্তক চূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া যাইতেছে, এইরূপ ঐ লোকটি বারংবার পাথর নিক্ষেপ করিতেছে এবং চূর্ণ বিচূর্ণ মস্তক জোড়া লাগিয়া যাইতেছে। অতঃপর আমি ফেরেশতা দুইজনকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, এই লোকটি পরিচয় কি? এবং তাহার অপরাধ কি? জওয়াবে ফেরেশতাদ্বয় বলিলেন, এই লোকটি ফরজ নামায আদায় না করিয়া শুইয়া থাকিত। (বোখারী শরীফ)
৪. হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) ফরমাইয়াছেন ঃ যে লোক এক ওয়াক্ত নামায ছাড়িয়া দিল, তাহার ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি যেন লুট হইয়া গেল। (ইবনে মাজা)
৫. হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) এরশাদ ফরমাইয়াছেন ঃ মুসলমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্যের বিষয় হইতেছে একমাত্র নামায। (মেশকাত)
৬. হযরত  রাসুলুল­াহ (সঃ)  এরশাদ  করিয়াছেন,  যে  লোক  জানিয়া বুঝিয়া (ইচ্ছাকৃতভাবে) নামায কায়েম করে নাই, রোজ কেয়ামতে আল্লহ তা’আলা তাহার সহিত অতি রাগের সহিত কথা বলিবেন। (তারগীবে মুনজেরী)
৭. হযরত রসুলুল্লাহ (সঃ) ফরমাইয়াছেন ঃ আমার উম্মাতের মধ্যে হইতে আট শ্রেণী লোকের প্রতি রোজ কেয়ামতে আল্লাহ তা’আলা অধিক নারাজ হইবেন। তাহাদের চেহারা অত্যাধিক কুশ্রী ও ভীষণ আকৃতি ধারণ করিবে। হাশর ময়দানে সকল লোক তাহাদিগকে অতি ঘৃণার নজরে দেখিবে। উহাদের ভিতরে এক শ্রেণী নামায তরককারীগণ হইবে। ইহাদের প্রতি সর্বাপেক্ষা বেশি পরিমাণে শাস্তি দেওয়া হইবে। নামায তরককারীদিগকে আগুনের পোশাক পরিধান করাইয়া আগুনের শিকল দ্বারা বাঁধিয়া আগুনের কোড়া দ্বারা শাস্তি দেওয়া হইবে। তাহাকে সম্বোধন করতঃ বেহেশত বলিতে থাকিবে, হে হতভাগ্য ব্যক্তি! তুমি আমার দিকে অগ্রসর হইও না। আর জাহান্নাম তাহাকে সম্বোধন করতঃ বলিতে থাকিবে, তুমি আমার দিকে আস, আমি তোমারই অপেক্ষায় রহিয়াছি। ইহা বলিয়া জাহান্নাম স্বীয় লেলিহান জিহবা বাহির করতঃ তাহাকে টানিয়া লইয়া নিজের উদরের মধ্যে নিয়া যাইবে। অতঃপর সেই লোক চিরকাল তথায় আজাব ভোগ করিতে থাকিবে। জাহান্নামের অগ্নির তেজ দুনিয়ার অগ্নি হইতে বহুগুণে বেশি হইবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 16849
  • Total Visits: 655994
  • Total Visitors: 2
  • Total Countries: 1122

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
  • ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
  • ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:১৯

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
2930     
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018