22 Nov 2024, 07:26 am

নিষেধাজ্ঞা শেষে সরগরম বরিশালের ইলিশের মোকাম

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম এখন ইলিশের মোকামটি। ব্যস্ততা ফিরে এসেছে শ্রমিকদের মধ্যে।

শনিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে ইলিশ বোঝাই নৌকা, ছোট ট্রলার, স্পিডবোট আসতে শুরু করে পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মণ এসেছে এ মোকামে।

সেখানে কয়েকজন ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমদানি হওয়া ইলিশের মধ্যে ডিমওয়ালা ও ডিম ত্যাগ করা দুটি রয়েছে। এরমধ্যে আগে মজুদ করা ইলিশও রয়েছে। মোকামে ইলিশে আসলেও দাম বেশ চড়া।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের এক আড়তদার জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা গোপনে ইলিশ ধরেছেন। চরাঞ্চলের কিছু এলাকায় প্রকাশ্যে সেটি বিক্রি হয়েছে। যেসব জায়গায় জেলেরা প্রকাশ্যে বিক্রি করতে পারেনি সেখানে কিছু ব্যবসায়ী কম দামে ইলিশ কিনে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে তাদের মজুদ করা ইলিশও মোকামে এসেছে।

জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য জহির সিকদার বলেন, ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মণ ইলিশ এসেছে। এরমধ্যে ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশই বেশি।

সেখানকার ব্যবসায়ী জহির সিকদার জানান, নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইলিশ ধরা হয়েছে। বাবুগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের মেঘনা, কালাবদর, গজারিয়া, লতা, তেতুলিয়া, মাসকাটা, জয়ন্তী, আড়িয়ালখা ও নয়াভাঙ্গুলীসহ বিভিন্ন নদীতে মাছ শিকারের খবর পাওয়া গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে কয়েকদিন জেলেরা নদীতে নামতে পারেননি।

তিনি জানান, মোকামে সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজির বড় সাইজের ইলিশের মণ গেছে ৬০ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে এক হাজার ৫০০ টাকা। তবে এ সাইজের ইলিশের আমদানি ছিল খুব কম। এক কেজি সাইজের ইলিশের মণ ৪৪-৪৫ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা। মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের। আড়তদাররা এ সাইজের ইলিশকে বলেন এলসি সাইজ। মোকামে এ ইলিশের মণ বিক্রি হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা। প্রতি কেজির পাইকারি দাম ৯০০ টাকা। ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজন সাইজের ইলিশকে স্থানীয় ভাষায় ভ্যালকা বলা হয় ইলিশ মোকামে। আজ ভ্যালকার মণ ছিল ৩২ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজির দাম ছিল ৮০০ টাকা। গোটরা আকারের (২৫০ গ্রাম থেকে ৩৫০ গ্রাম) প্রতি মণ ১৪ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ৩৫০ টাকা। পাইকারি থেকে হাত বদল হয়ে খুচরা বাজারে ১৫০-২০০ টাকা দাম বেড়ে যায় খুচরা বাজারে।

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালন হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে প্রতিদিন অভিযান চালানো হয়েছে। তবে অবাধে ইলিশ শিকার ও বিক্রির ব্যাপারে তেমন অভিযোগ আসেনি। এ ধরণের পরিস্থিতি নজরে পড়েনি।

তিনি জানান, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নদ-নদীতে এক হাজার ২৯৪টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সময় ৫৪০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদায় করা হয় পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। অভিযানে জব্দ করা হয়েছে পাঁচ হাজার কেজি ইলিশ ও ১৬ লাখ মিটার জাল।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 9068
  • Total Visits: 1266554
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ১৯শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৭:২৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
18192021222324
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018