অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৪ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবসহ বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ও সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে কাঠমান্ডুতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ফলে ঐ হতাহতের ঘটনা ঘটে। নেপালের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ (সোমবার) সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরুর পর বানেশ্বরের সিভিল হাসপাতালে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয় বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়। নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারে নেওয়া ৭ বিক্ষোভকারী মারা গেছেন বলে হাসপাতালের চিকিৎসক দীপেন্দ্র পান্ডে নিশ্চিত করেছেন। ওই হাসপাতালে আরও ১০ জন গুরুতর অবস্থায় আছেন, যাদের মাথায় ও বুকে গুলি লেগেছে এবং আরও ২০ জনের বেশি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালে ৩ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতালের কর্মকর্তা অনিল অধিকারী বলেন, ৫০ জনেরও বেশি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি জানান, এ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেএমসি এবং মহারাজগঞ্জের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালেও একজন করে মারা গেছেন। নিহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
গত সপ্তাহে নেপাল সরকার ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেয়। সরকারের অভিযোগ ছিল, এসব প্ল্যাটফর্ম ভুয়া পরিচয়ে হিংসাত্মক বক্তব্য, ভুয়া সংবাদ ছড়ানো, প্রতারণা এবং অন্যান্য অপরাধে ব্যবহার হচ্ছে।
আজ সোমবার স্কুল-কলেজের পোশাক পরা তরুণ-তরুণীরা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সেসময় সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে। নেপাল পার্লামেন্টের মুখপাত্র একরাম গিরি জানান, বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেও মূল ভবনে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ পরে তাদের বের করে দেয়। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসনের মুখপাত্র মুক্তিরাম রিজাল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় সময় রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ব্যর্থতার অভিযোগ বহুদিন ধরে উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের মধ্য দিয়ে সরকার জনগণের অসন্তোষ দমন করতে চাইছে। প্রায় ৩ কোটি মানুষের দেশ নেপালে ৯০ শতাংশ নাগরিক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।