অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ২৬ জুন রবিবার সকাল থেকে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আর এ দীর্ঘ ছয় মাসে বাধাহীন ভাবে যানবাহন চলাচল করেছে পদ্মা সেতু দিয়ে। গত ছয় মাসে সেতু থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ৩৯৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা। আর যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯০টি। যা প্রতিদিনের গড় টোল আদায় ২ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯১৭ টাকা। আর প্রতিদিন গড়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৪ হাজার ৭১৮টি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরের দিন ২৬ জুন থেকে জনসাধারণ যানবাহন নিয়ে সেতু দিয়ে চলাচল শুরু করে। যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করছে। শুরুর দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার পর সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
২৬ নভেম্বর হতে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮৬ দিনে সেতু০ দিয়ে ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৫৯০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যা থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ৩৯৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা।
দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচল করছে। ঐসব যানবাহন মাওয়ার শিমুলিয়া, মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও শরীয়তপুরের জাজিরা নৌপথ ব্যবহার করে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা নদী পারাপার হতো। পদ্মা সেতুর টোল আদায় করার জন্য জাজিরা প্রান্তের নাওডোবায় ও মুন্সীগঞ্জ প্রান্তের মাওয়ায় দুটি টোলপ্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। যানবাহন টোল পরিশোধ করে সেতুতে ওঠার জন্য ছয়টি করে টোল বুথ রয়েছে। সেখানে টোল প্রদান করে যানবাহন সেতুতে ওঠে।
জাজিরা প্রান্তে টোল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন ঢাকার দিকে যায়। আর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে টোল দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যায় যানবাহন। পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজটি যৌথভাবে করছে পদ্মা সেতুর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ও কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন। তাদের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে এ কাজটি করছে বাংলাদেশের টেলিটেল কমিউনিকেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আর আদায়কৃত টোলের টাকা জমা হচ্ছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের হিসেবে।
শরীয়তপুরের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আমরা বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী শরীয়তপুর আনা-নেওয়া করি। ২৬ জুনের আগে তা নৌপথে আনা-নেওয়া করতাম। তাতে অনেক ঝুঁকি নিতে হতো। এখন নির্বিঘ্নে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রাকে করে মালামাল পরিবহন করছি। এতে সময় কম লাগছে, ঝুঁকিও তেমন নেই।
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোলপ্লাজার টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান টেলিটেল কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন বলেন, টোলপ্লাজা সার্বক্ষণিক খোলা থাকে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা যানবাহন পারাপার হচ্ছে। মাঝেমধ্যে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। তখন কিছু সময়ের জন্য টোলপ্লাজার সামনে যানজট সৃষ্টি হয়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী রাজন বিশ্বাস বলেন, টোল আদায়ের কাজটি করছে টেলিটেল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতিদিনের আদায়ের হিসাব বুঝিয়ে দেওয়ার পর সেতু কর্তৃপক্ষের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়ে যায়। আর সেতুর কোন প্রান্ত দিয়ে কত যানবাহন পারাপার হয়, কোন প্রান্তে কত টাকা টোল আদায় হয় তা প্রতিদিন ওয়েব সাইডে দিয়ে দেওয়া হয়।
Leave a Reply