November 12, 2025, 11:17 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত অপমানজনক ব্যবস্থা থেকে বিশ্বের বেরিয়ে আসার সূচনায় ‘এশিয়ান সেঞ্চুরি’

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গত কয়েক দশক ধরে “এশিয়ার উত্থান” বা “এশিয়ান সেঞ্চুরি” ধারণাটি বৈশ্বিক কৌশলগত আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

এই ধারণাটি এশিয়া মহাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ বাড়ানোর একটি নতুন এবং সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ।

একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আমেরিকার ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব ব্যবস্থার পতনের প্রতিবেদনগুলো “এশিয়ান সেঞ্চুরি” ধারণাকে জোরালো করেছে।

সাম্প্রতিক দশকে জাপান, চীন, ভারত এবং ইরানসহ বৃহৎ এশীয় শক্তিগুলোর সাফল্যের বর্ণনা থেকে এই ধারণার মূল উৎপত্তি।

“এশিয়ান সেঞ্চুরি” সম্পর্কে প্রভাবশালী অনুমান তৈরি করা হয়েছে যদিও এটি প্রতীয়মান হয় যে প্রাসঙ্গিক প্রবণতাগুলো কেবল এই মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে না বরং কাঠামোগত এবং আদর্শিক মাত্রাগুলো তাতে অন্তর্ভুক্ত করে।

“এশিয়ান সেঞ্চুরি” আসলে এশিয়ান হয়ে ওঠার ফল। এশিয়ান হওয়া এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ক্রমগতভাবে তাদের অতুলনীয় সাধারণ অর্থনৈতিক ও সভ্যতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে একত্রিত হচ্ছে।

ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক ভিন্নতা বাদ দিলে আজকের এশিয়ার মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আর তা হলো এ অঞ্চলে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সভ্যতাভিত্তিক মিল বন্ধন।

নতুন শতাব্দীতে এশিয়া বাণিজ্য, মূল্যের শৃঙ্খলা, উৎপাদন এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের মতো বিভিন্ন অর্থনৈতিক মাত্রায় একটি সুপারলজিক আন্তঃসম্পর্কিত ব্লকে পরিণত হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে, ২০৪০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক ভোক্তা ও বৈশ্বিক মধ্যবিত্ত থেকে এশিয়ার অংশ ৩৯.৫৪ শতাংশে পৌঁছাবে, যেখানে ২০১৭ সালে এই অংশ ছিল ২৮.৪০ শতাংশ।

বিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমা বিশ্ব অর্থনৈতিক, সামরিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্য চাপিয়ে দেয়ার একটা প্রবণতা ছিল। কিন্তু একবিংশ শতাব্দী শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য এশিয়ার অনুকূলে এতটাই ঝুঁকে পড়ে যে  অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তির মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র ইউরোপ-আটলান্টিক থেকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে স্থানান্তরিত হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে বলা যায় যে ১৯৮০ এর দশক থেকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তারের মাধ্যমে প্রাচ্যের দিকে একটি কৌশলগত পরিবর্তন শুরু হয়েছে এবং ২০৫০ সাল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকলে এশিয়া বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হবে।

বলা যায় যে ২০৫০ সালের মধ্যে চারটি বড় বৈশ্বিক অর্থনীতির মধ্যে তিনটিই এশিয়া মহাদেশ থেকে হবে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গ দেবে চীন, ভারত ও জাপান। আর এইভাবে বিশ্ব পশ্চিম থেকে প্রাচ্যে ক্ষমতার পুনর্বণ্টনের মুখোমুখি হচ্ছে।

এশিয়ার উত্থান মানে বৈশ্বিক বিষয়ে পশ্চিমাদের প্রভাবের অবসান নয়। এর অর্থ হচ্ছে প্রাচ্যের উপর পশ্চিমের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেষ্ঠত্বের অবসান।

নতুন বিশ্বে এশিয়ার দেশগুলো আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নির্ভরশীল, দুর্বল নয় এবং তারা কারো পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। পরিবর্তে তারা ধীরে ধীরে এমন শক্তি হয়ে উঠেছে যে অনেক ক্ষেত্রে পশ্চিমা আধিপত্যবাদী শক্তি থেকে স্বাধীনতা উপভোগ করে।

এখানে ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধের কথা বলা যেতে পারে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একদিকে রাশিয়া ও চীন এবং অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতবিরোধ এবং পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিতাড়িত করার বিষয়ে ইরানের কর্মকাণ্ড থেকে এটি স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

ইরান বিশ্বকে দেখিয়েছে যে নিজেদের জাতির উপর ভরসা করে পশ্চিমা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যা সামরিক ও আদর্শিক আধিপত্যকে অতি সহজেই খর্ব  করা সম্ভব।

প্রকৃতপক্ষে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান বিশ্বে বিশেষ করে এশিয়ায় প্রতিরোধের আদর্শ এবং দাম্ভিক শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অক্ষ সংজ্ঞায়িত করার মাধ্যমে বিশ্বব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য একটি নতুন প্রতিরোধ অক্ষ তৈরি করেছে।

এটি এমন একটি ধারণা যা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীনে অনেক দেশে এমনকি লাতিন আমেরিকার মতো অন্যান্য মহাদেশেও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে।

বর্তমানে, চীন এবং ইরানসহ এশিয়ান শক্তিগুলো বর্তমান বিশ্বব্যবস্থাকে এমনভাবে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে যা পশ্চিমের নয় বরং নিজ জাতির স্বার্থ, মূল্যবোধ এবং নিয়মনীতিগুলোকে প্রতিফলিত করছে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রায়িসি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

এই কারণে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সক্ষম হবে না বা নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুকও হবে না। কারণ অতীতের মতো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নেতৃত্বের ভূমিকা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার কাছে জোরপূর্বক ব্যবস্থা থাকবে না। এরপর ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ মত বিরোধের কারণে দেশটি বৈশ্বিক পুলিশির ভূমিকা পালনের সুযোগ পাবে না এবং এমন কি জনসমর্থন পাবে না।

ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী এর আগে মার্কিন নেতৃত্বের পতনের প্রেক্ষাপটে এর ভবিষ্যত দৃশ্যের ব্যাখ্যা করেছেন। তার মতে, “যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে তার সামরিক উপস্থিতি বন্ধ করতে বাধ্য হবে। এই মুহূর্তে মার্কিনীদের বিশ্বের অনেক জায়গায় ঘাঁটি আছে; আমাদের অঞ্চলে, ইউরোপে, এশিয়ায়, বিশাল জনসংখ্যাসহ সামরিক ঘাঁটি আছে। এমনকি যেসব দরিদ্র দেশে তাদের ঘাঁটি রয়েছে তাদের কাছ থেকে তারা টাকা নেয়। তাদেরকে মার্কিনীদের খরচ জোগাতে হয়।  আর মার্কিনীরা তা দিয়ে খাওয়া-দাওয়া এবং ফূর্তি করে! এটার শেষ আছে।  বিশ্বজুড়ে আমেরিকার উপস্থিতি শেষ হয়ে যাবে।”#

 

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page