October 24, 2025, 3:55 am
শিরোনামঃ
ভোট হবে ব্যালটে-ইভিএম বাতিল-ফিরল ‘না ভোট’ ; প্রার্থীর দেশি-বিদেশি আয়ের তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক দেশজুড়ে ভূমি অফিসের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ বাংলাদেশ থেকে কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানিতে আগ্রহী চীন দেশে ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু ; হাসপাতালে ভর্তি ৮০৩ অবাক কাণ্ড ঘটিয়ে কিশোরগঞ্জের সাবেক বিএনপি নেতা যোগ দিলেন আওয়ামী লীগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত ফেসবুকে পরিচয় ; বন্ধুত্বের টানে নাটোরে মার্কিন ব্যবসায়ী তেরি পারসন গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়াতে ইসরাইলকে জাতিসংঘ আদালতের নির্দেশ শত্রুর হামলা থেকে বাঁচতে নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া এআই বিভাগে ৬০০ কর্মী ছাঁটাই করছে ফেসবুক-এর মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা
এইমাত্রপাওয়াঃ

পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হয়ে গঠিত হচ্ছে ‘একটি বড় ইসলামি ব্যাংক’

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের লক্ষ্যে পাঁচটি সংকটগ্রস্ত ইসলামি ব্যাংককে একীভূত করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাকে আর্থিক খাত স্থিতিশীল করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন প্রণীত ব্যাংক রেজোল্যুশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫ এর অধীনে প্রণীত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আনুমানিক ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা দেবে সরকার এবং ১৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে প্রাতিষ্ঠানিক তহবিল ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকে রূপান্তরের মাধ্যমে।

একীভূতকরণের জন্য নির্ধারিত পাঁচটি ব্যাংক হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পুনর্গঠন উদ্যোগ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ব্যয়বহুল লিকুইডেশন বা অবসায়ন প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলা এবং শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা।

একই সঙ্গে এটি বেসরকারিভাবে পরিচালিত ইসলামি ব্যাংকগুলোর গভীর সংকটকেও তুলে ধরেছে, যেগুলোর অনেকগুলোই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কনগ্লোমারেট বা ব্যবসায়িক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যাদের বিরুদ্ধে তহবিল পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সরকারের কমিশন করা ফরেনসিক অডিটে গুরুতর অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখা গেছে— তিনটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতে, বছরের পর বছর দুর্বল তদারকির পর একীভূতকরণই এখন একমাত্র কার্যকর উপায়।

গতকাল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ব্যাংক রেজোল্যুশন সংক্রান্ত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থসচিব মো. খাইরুজ্জামান মজুমদার, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সচিব নাজমা মোবারক এবং এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এছাড়া ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহমেদসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে পরিকল্পনা ও তদারকির জন্য কবির আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈঠক শেষে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং দেড় মাসের মধ্যে বেশিরভাগ কাজ শেষ হবে। আমাদের এই পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আমানতকারীদের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।’

তিনি আরও জানান, অবসায়ন অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বেশি ব্যয়বহুল ও কষ্টকর হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে ব্যাংক কর্মীদের চাকরি সুরক্ষিত থাকবে।

কবির আহমেদ আরও বলেন, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। কারণ, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, যার মধ্যে রয়েছে স্থির বিনিময় হার এবং পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, সরকার আপাতত কোনো দাতা সংস্থার সহায়তা চাইছে না, তবে ভবিষ্যতে তা বিবেচনা করা হতে পারে। নতুন ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করা হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

এ একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে ২ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বোর্ড ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে বৈঠক করেন। গভর্নর সেখানেও ভার্চুয়ালি অংশ নেন। ওই বৈঠকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পরিকল্পনায় সম্মত হয়, তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এর বিরোধিতা করে।

একীভূত হওয়ার জন্য নির্ধারিত চারটি ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী ও সোশ্যাল ইসলামী—এর আগে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। অভিযোগ রয়েছে, তারা বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে শেল কোম্পানির মাধ্যমে তহবিল সরিয়ে নেয়। অন্যদিকে, এক্সিম ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করেছেন নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

২০২৪ সালের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের পুরোনো বোর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন বোর্ড নিয়োগ করে। বৈশ্বিক অডিট ফার্ম দিয়ে করানো ফরেনসিক অডিটে তাদের নাজুক আর্থিক অবস্থার চিত্র উঠে আসে। খেলাপি ঋণের হার দাঁড়ায়—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামীতে ৯৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকে ৯৭ দশমিক ৮ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামীতে ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামীতে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের গত মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে এশিয়ার সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের হার বাংলাদেশে। ২০২৪ সালে মোট ঋণের ২০ দশমিক ২ শতাংশ খেলাপি হয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারে, যা এক বছরে ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে এই অঞ্চলের ‘সবচেয়ে ভঙ্গুর’ হিসেবে স্পষ্ট করে তোলে।#

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page