অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল মাত্র তিন মাস ক্ষমতায় থাকার পর আজ শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। এ বিষয়ে রয়্যাল ডিক্রি জারি করা হয়েছে। ফলে আগামী বছরের শুরুতেই দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হলো।
কম্বোডিয়ার সঙ্গে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষের মধ্যেই থাই পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত এলো। এবারের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত এবং প্রায় ছয় লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। ডিক্রিতে বলা হয়, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের জন্য নতুন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে এ পরিষদ ভেঙে দেওয়া হলো।
গত সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করেন। এরপর ভুমজয়থাই পার্টির নেতা আনুতিন চার্নভিরাকুল দেশটির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর আনুতিন ঘোষণা দেন, তিনি নিম্নকক্ষ ভেঙে দিয়ে ২০২৬ সালের শুরুতেই নির্বাচন করবেন। ধারণা করা হয়েছিল, তিনি অন্তত বড়দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। কিন্তু তার আগেই এ পদক্ষেপ নিলেন।
রয়্যাল গেজেটে আনুতিনের পাঠানো প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু সরকার হিসেবে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নানা চ্যালেঞ্জে জর্জরিত হওয়ায় সরকার দক্ষতার সঙ্গে এবং স্থিতিশীলভাবে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। সুতরাং, এর উপযুক্ত সমাধান হলো হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ভেঙে দেওয়া এবং নতুন সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা।
থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেই হিসাবে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টে আনুতিন লিখেছেন, তিনি জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চান। থাইল্যান্ডে এ ধরনের মন্তব্য সাধারণত ইঙ্গিত দেয়, প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং নতুন নির্বাচনের পথ তৈরি হচ্ছে।
কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছরের গ্রীষ্মে আনুতিন ফেউ থাই পার্টির সঙ্গে জোট ত্যাগ করেন।
তিন মাসের সংক্ষিপ্ত মেয়াদে আনুতিনকে সামলাতে হয়েছে কম্বোডিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সামরিক সংঘাত। পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রতারণা চক্রের ঘাঁটিতে অভিযানের পর শত শত মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে ঢুকে পড়ে। অক্টোবর মাসে প্রয়াত হয়েছেন দেশটির সাবেক রানি সিরিকিত। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেই তাকে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে।