অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাপান সরকার এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়ন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালীকরণ এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আজ ১৬ লাখ মার্কিন ডলারের একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সহায়তার এই ১৬ লাখ মার্কিন ডলার (২৫০ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণ, প্রয়োজনীয় ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ এবং শরণার্থীদের কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করতে সহায়তা করবে।
এছাড়া এই অর্থসহায়তা বাংলাদেশে বসবাসরত শরণার্থীদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনইচি বলেন, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে জাপানের এই চুক্তি ও অর্থায়ন সংকটময় এক সময়ে এলো; যখন রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থসহায়তার মাধ্যমে সাড়াদান অত্যন্ত জরুরি। প্রকল্পটি ভাসানচর ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি, বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, জাপান এই মানবিক সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে এবং ইউএনএইচসিআরের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি সুম্বুল রিজভি বলেন, ‘জাপান সরকার ও জনগণ রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের কাজকে নিরবচ্ছিন্ন সংহতি ও সমর্থন জানিয়েছেন। তাই ইউএনএইচসিআর তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও পরিশ্রমী। বাংলাদেশের দেওয়া উদারতাপূর্ণ আশ্রয়ে তারা যাপন করতে সক্ষম। তাদের দরকার সামান্য সুযোগ।
চুক্তি অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআর শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত করতে পারবে। যা এই অঞ্চলের প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলায় আরও সক্ষম হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করার মাধ্যমে সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগ, মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
শরণার্থীদের বিশেষ করে নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের নিজ জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য প্রস্তুত করা হবে, যাতে পরিস্থিতি অনুকূল হলে মিয়ানমারে নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য তারা প্রস্তুতি নিতে পারেন।
সংকটের ৮ বছর পর, জাপানের এই সহযোগিতা অত্যন্ত সময়োপযোগী। কারণ ইউএনএইচসিআর এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলো বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের জন্য ২০২৫ সালের যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান) ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করবে।
২০১৭ সালের আগস্টে সংকট শুরুর পর থেকে জাপান বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ইউএনএইচসিআরসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে ২৪ কোটি ৩ লাখ ডলারের (২৪৩ মিলিয়ন) বেশি অর্থসহায়তা প্রদান করেছে।
Leave a Reply