July 31, 2025, 6:15 am
শিরোনামঃ
বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মহেশপুরে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্মারকলিপি প্রদান ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিশ্ব মানবপাচার দিবস উপলক্ষে মতবিনিময় সভা ঝিনাইদহে ত্রিশ গ্রামের দশ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে ; বিএডিসির খাল এখন কৃষকের মরণ ফাঁদ তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সমস্যা মেটাতে কমিটি গঠন : ধর্ম উপদেষ্টা  ৫ আগস্ট কোনো ধরনের নিরাপত্তার সমস্যা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র সংস্কারের চাহিদা চেয়ে প্রাইমারি স্কুলগুলোতে চিঠি আওয়ামী লীগ এমপির কাছ থেকেও ৫ কোটি টাকার চাঁদা নিয়েছে আটক রিয়াদ ও তার দল একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু বিশ্ব মানব পাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে যশোরে র‌্যালি ও আলোচনা সভা নওগাঁয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ 
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

বিশুদ্ধ নিয়ত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত ও হাদীসে রসুল (সঃ) এর বাংলা অর্থ

মহান আল­াহ তা’আলা বলেন-“তাদেরকে এ ছাড়া অন্য কোনো নির্দেশ করা হয়নি, তারা বিশুদ্ধ মনে আন্তরিকতার সাথে মহান আল­াহর ইবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত প্রদান করবে। এটাই সঠিক ধর্ম।” (সূরা ঃ বাইয়্যেনা ঃ আয়াত ঃ ৫)
মহান আল­াহ তা’আলা আরো বলেন- “তোমাদের কোরবানীর পশুর রক্ত-মাংস কিছুই মহান আল­াহর কাছে পৌছে না। বরং তার কাছে তোমাদের তাকওয়া পৌছে অর্থাৎ মহান আল­াহ ভীতি।” (সূরা ঃ হজ্জ ঃ আয়াত ঃ ৩৭)

১. আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে বলতে শুনেছি, প্রত্যেক কাজের ফলাফল তার নিয়্যত অনুযায়ী হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি যে নিয়্যতে কাজ করবে সে তা-ই পাবে। সুতরাং যার হিজরত মহান আল­াহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য হয়েছে। তার সে হিজরত (নিয়তের কারণে) মহান আল­াহ এবং তদীয় রাসুল (সঃ)-এর সন্তুষ্টির জন্যেই হয়েছে বলে গণ্য হবে। আর যার হিজরত দুনিয়ার কোনো জিনিস পাওয়ার জন্য হয়, তবে তার হিজরত দুনিয়া লাভের উদ্দেশ্যে হয়েছে বলে গণ্য হবে। অথবা কোন রমণীকে বিবাহের জন্যে যার হিজরত করে, তবে তার হিজরত রমনীকে পাওয়ার উদ্দেশ্যে হয়েছে বলেই গণ্য হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
২. উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল­াহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম বর্ণনা করেছেন-একটি সৈন্যদল কা’বা শরীফের উপর হামলা করতে যাবে। যখন তার সমতল ভূমিতে পৌছবে তখন তাদের পুর্বের ও পরের লোকজনসহ ভূমিকে ধসিয়ে দেয়া হবে। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল­াহু আনহা বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে মহান আল­াহর রসূল সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! তাদের পূর্বের ও পরের লোকজনকে কি কারণে ধসিয়ে দেয়া হবে? অথচ তাদের মধ্যে অনেক লোক এমনও থাকবে যারা অন্যায়কারীদের দলভূক্ত ছিল না। রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম উত্তরে বললেন- তাদের পূর্বের ও পরের লোকজনদেরকে ভূমিতে ধসিয়ে দেয়া হবে। তারপর তাদের নিয়্যত অনুযায়ী তাদেরকে পুনরায় জীবিত করা হবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৩. হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল­াহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম বর্ণনা করেছেন- মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত নেই। কিন্তু জিহাদ ও নিয়ত থাকবে। যখনই তোমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাক দেয়া হবে, তখনই তোমরা বের হয়ে যাবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত আবূ আবদুল­াহ জাবির ইবনে আবদুল­াহ আল আনসারী রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা কোন এক যুদ্ধে রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম-এর সাথে ছিলাম, তখন তিনি ইরশাদ করেছেন, মদীনায় এমন কিছু লোক রয়েছে তারা সর্বদা তোমাদের সাথেই থাকে। তোমরা যে স্থান অথবা যে ময়দান অতিক্রম কর সেখানেই তারা থাকত। তাদেরকে রোগে বন্দী করে রেখেছে। অন্য বর্ণনায় আছে, তাঁরা সওয়াবের সময় তোমাদের সাথে শরীক হবে।
ইমাম বোখারী (রঃ) এই হাদিসটি হযরত আনাস রাদিয়াল­াহু আনহু হতে এভাবে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- আমরা তাবুক যুদ্ধ হতে নবী করীম সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম-এর সাথে ফিরে আসার পর তিনি ইরশাদ করেছেন- মদীনায় এমন একশ্রেণীর লোক রয়েছে- যারা আমাদের সাথে আসেনি এবং কোন ময়দানও অতিক্রম করেনি। তারপরও তারা আমাদের সাথেই আছে। আদেরকে বিশেষ ওজর বন্দী করে রেখেছে।
৫. হযরত আবী ইয়াযীদ মা’আন ইবনে আখনাস রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি স্বীয় পিতা এবং তার দাদা সকলেই সাহাবীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। তিনি বলেন- আমার পিতা ইয়াযীদ রাদিয়াল­াহু আনহু কিছু স্বর্ণমুদ্রা সাদাকার উদ্দেশ্যে বের করলেন। তিনি উহা মসজিদের এক ব্যক্তির নিকট জমা রাখলেন। আমি গিয়ে সেগুলো নিয়ে আসলাম। উহাতে আমার পিতা বললেন, মহান আল­াহর কসম! আমি তোমাকে দিবার ইচ্ছা করিনি। আমি তখন বিস্তারিত রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম-এর নিকট বর্ণনা করলাম। তিনি (সা) বললেন, হে ইয়াযীদ! তুমি যে নিয়্যত করেছ তার সাওয়াব তোমার। হে মা’আন! আর তুমি যা নিয়েছ তা তোমারই। (বোখারী শরীফ)
৬. হযরত আবূ মুসা আবদুল­াহ ইবনে বাইস আ-আশয়ারি রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম-এর খিদমতের প্রশ্ন করা হলো- কোন ব্যক্তি বীরত্ব দেখানোর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, আবার কেউ আত্মস¤মান ও বংশগত মর্যাদা দেখানোর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, আবার কেউ বা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে। এদের মধ্যে মূলতঃ কোন লোকটি মহান আল­াহর পথে যুদ্ধ করে রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম বলেন, যে ব্যক্তি কেবলমাত্র মহান আল­াহর কালিমা বড় সমুন্নত করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে সেই কেবল মহান আল­াহর পথে যুদ্ধ করে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৭. হযরত আবূ ইসহাক সা’দ ইবনে আবূ ওয়াক্কাস রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, যিনি বেহেশতের শুভ সংবাদ প্রাপ্তদের মধ্যে একজন। তিনি বলেন- বিদায় হজ্জ্বের বছর আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি বললাম, ইয়া  রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! আমার রোগের অবস্থা তো আপনি দেখছেন। আর আমি একজন ধনী লোক। আমার ওয়ারিস একমাত্র কন্যা হবে। তাহলে আমি কি আমার সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ সাদকা করে দিব? তিনি সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম উত্তরে বললেন, না। আমি আবার বললাম, ইয়া রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! তাহলে অর্ধেকটা দিব? তিনি সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম বললেন, না। আমি পুনরায় প্রশ্ন করলাম, ইয়া রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! তাহলে তিন ভাগের এক ভাগ দেই। তিনি সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম উত্তরে বললেন, তোমার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ দান কর। আর এটাই অনেক বেশি অথবা অনেক বড় দান। তোমার ওয়ারিসদেরকে সম্পূর্ণ সম্বলহীন অবস্থায় না রেখে তাদেরকে সচ্ছল করে রেখে যাওয়াই উত্তম। যেন তাদেরকে মানুষের নিকট হাত পাততে না হয়। তুমি মহান আল­াহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যাই খরচ কর না কেন, এমনি কি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দিবে তার বিনিময় তোমাকে অবশ্যই দেয়া হবে। আবূ ইসহাক রাদিয়াল­াহু আনহু বলেন- আমি বললাম- ইয়া রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! আমি কি আমার সাথীদের হিজরতের পর মক্কায় থেকে যাব? তিনি বললেন, তুমি থেকে গিয়ে মহান আল­াহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যে যে কাজই কর না কেন তাতেই তোমার মান-মর্যাদা অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে। খুব সম্ভবত তুমি থেকে যাবে। তখন অনেক লোক তোমার দ্বারা লাভবান হবে, আর অনেক লোক তোমার দ্বার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে মহান আল­াহ! আমার সাথীদের হিজরত সুসম্পন্ন কর এবং তাদেরকে পেছনের দিকে ফিরিয়ে দিয়ো না। কিন্তু সা’আদ ইবনে খাওলা  রাদিয়াল­াহু  আনহু  অবশ্যই  করুণার পাত্র। মক্কায় তার ইন্তেকাল হলে রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম সমবেদনা প্রকাশ করেন। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৮. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল­াহ তা’আলাই তোমাদের শরীর ও চেহারার প্রতি তাকাবেন না, বরং তোমাদের অন্তর ও কর্মের প্রতি তাকাবেন। (মুসলিম শরীফ)
৯. হযরত আবূ বাকরা নুফাই ইবনে হারিস সাকাফী রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করীম সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম ইরশাদ করেছেন- যখন দু’জন মুসলমান ব্যক্তি তাদের তরবারি নিয়ে পরস্পর মারামারি করে তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামী হবে। হযরত আবূ বাকরা রাদিয়াল­াহু আনহু প্রশ্ন করলেন, ইয়া রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম! হত্যাকারী দোযখবাসী হওয়াটা বুঝলাম, কিন্তু নিহত ব্যক্তি দোযখবাসী হওয়ার কারণ কি? রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম উত্তর দিলেন- এর কারণ হচ্ছে- সে ব্যক্তি নিজের প্রতিপক্ষকে হত্যার কামনা করেছিল। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
১০. হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম এরশাদ করেছেন, পুরুষের জামাতবদ্ধ হয়ে নামায পড়ার সাওয়াব তার বাজারে অথবা ঘরে নামায পড়ার চেয়ে ২০ গুণের বেশি। কারণ যখন কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযু করে, শুধু নামায পড়ার নিয়তে মসজিদে আসে এবং নামায পড়া ছাড়া অন্য কোন কিছু তাকে উদ্বুদ্ধ করে না। সে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করার পূর্বে পর্যন্ত তার প্রতি কদমে মর্যাদা বাড়তে থাকে এবং তার একটি করে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। সে মসজিদে প্রবেশ করার পর থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষায় থাকে অতক্ষণ পর্যন্তই সে নামাযের মধ্যেই গণ্য হবে। আর নামাযের পর নামাযী ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত কাউকে কোন কষ্ট না দিয়ে নামাযের নির্দিষ্ট স্থানে ওযুসহ বসে থাকে ফেরেশতাগণ ততক্ষণ পর্যন্ত তার জন্যে এ বলে দোয়া করতে থাকে যে, হে মহান আল­াহ! তার তাওবা কবুল কর। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
১১. হযরত আবূ আব্বাস আবদুল­াহ ইবনে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব রাদিয়াল­াহু আনহু হতে বর্ণিত, রসুলুল­াহ সল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম তার মহান সত্ত¡া ও পরাক্রমশালী প্রতিপালকের নিকট হতে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন- মহান আল­াহ পাক ভাল কাজ ও মন্দ কাজ লিখে দিয়েছেন। তারপর তা পরিস্কারভাবে বর্ণনা করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি কোন নেক কাজের নিয়ত বা ইচ্ছা করে অথচ তা করে না, মহান আল­াহ আ’আলা তাকে একটি পূর্ণ নেকির সাওয়াব দান করেন। আর যদি নিয়্যতের পর উক্ত কাজ করে ফেলে, তবে মহান আল­াহ তা’আলা তাকে ১০ থেকে ১০০ গুণ পর্যন্ত এমন কি তার চেয়েও বেশি সাওয়াব দান করেন। আর যদি কোন মন্দ কাজের নিয়্যত করে অথচ তা না করে তবে মহান আল­াহ তা’আলা তার পরিবর্তে একটি পূর্ণ সাওয়াব দান করেন। আর যদি নিয়্যত করার পর সেই মন্দ কাজটি করে ফেলে তবে মহান আল­াহ তা’আলা একটি মাত্র গুনাহ লিখেন। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)

আজকের বাংলা তারিখ



Our Like Page