April 7, 2025, 3:00 am
এইমাত্রপাওয়াঃ
আমাদের সাইটে নতুন ভার্ষনের কাজ চলছে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ; কৃষিকে বাঁচাতে প্রয়োজন পরিকল্পিত চাষাবাদ  

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা তার খাদ্যচাহিদাকে ছাড়িয়ে যাবে- এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। তবে, এ শঙ্কা পেছনে ফেলে কয়েক দশক ধরেই আন্তর্জাতিক কৃষি উৎপাদন কমেনি, বরং উধ্র্বমূখী হয়েছে।

মূলত সার, কীটনাশক, উন্নত প্রযুক্তি ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত আবিষ্কারের মাধ্যমেই কৃষি উৎপাদনের গতি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। তবে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ গতি কিছুটা কমে যাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ফসল বিন্যাস, পরিকল্পনা অর্থাৎ বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদকেই কৃষি উৎপাদনের গতি অব্যাহত রাখার একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন অনেকে।

দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, অধিকাংশ সময় কোনো ফসল চাষের আগে জমিটি ওই ফসলের জন্য উপযুক্ত কি না তা পরীক্ষা করা হয় না। এর ফলে কৃষক আশানুরূপ উৎপাদন ও উপার্জন থেকে বঞ্চিত হন।

আন্তর্জাতিক গবেষণামূলক জার্নাল নেচার জিওসায়েন্সের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কোন জমিতে কোন ফসল লাগাতে হবে, তা নির্ধারণ করে আবাদ করলে যে ফল পাওয়া যাবে তা দিয়ে আরও ৮২৫ মিলিয়ন মানুষের খাদ্যচাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এমনকি পানির ব্যবহার ১০ শতাংশ কমিয়েও এমন উৎপাদন সম্ভব।

অন্যদিকে, নেচার ফুডের একটি গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শস্যোৎপাদন আরও কমে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২১ শতকের শেষের দিকে ভুট্টার ফলন ৬-২৪ শতাংশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্তমানে চাষাবাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অপরিকল্পনা লক্ষ্য করা যায় অনুন্নত দেশগুলোতে। লন্ডনভিত্তিক প্রকৃতি উন্নয়ন সংস্থ্যা রয়াল সোসাইটি বলছে- বিশ্বব্যাপী ধান, আলু, কাসাভা, সরগম বা জোয়ার চাষের ক্ষেত্রে পরিকল্পনার অভাব সবচেয়ে বেশি।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ধান, কাসাভা ও জোয়ার চাষ ক্ষুদ্র কৃষকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। আর এক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো, এ ধরণের কৃষকরা অধিকাংশ সময় ফসলের সর্বাধিক ফলনের চেয়ে আবহাওয়ার দিকে বেশি গুরুত্ব দেন।

আবহাওয়ার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার অন্যতম কারণ হলো- এসব ফসল দিয়ে ক্ষুদ্র কৃষকরা পরিবারের বাৎসরিক চাহিদা মেটান। কোনো বছর আবহাওয়া খারাপ থাকলে এবং ওই বছর উৎপাদন কম হলে পুরো পরিবারকে বিপদে পড়তে হয়।

দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, লাখ লাখ ক্ষুদ্র কৃষক চাইলেও তাদের চাষাবাদের ধরণ পাল্টাতে পারবেন না। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক দিকগুলোর কারণে ধনী দেশগুলোর কৃষিভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চাষাবাদ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে বাধ্য হতে পারে।

যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্টা, যার ফলন গরমে খুব একটা ভালো হয় না। কিন্তু বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে এখন ফসলটির জিনগত পরিবর্তন নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

এদিকে, ব্রাজিলের মোট চাষযোগ্য জমির অর্ধেকরও বেশিতে সয়াবিনের চাষ হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশটির সয়াবিনখাতও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আবার, কফি উৎপাদনকারীদেরও বৈশ্বিক তাপমাত্রার সঙ্গে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হচ্ছে।

আবার বলা হচ্ছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি শুধু ক্ষতিই করবে না, এর কিছু সুবিধাও থাকতে পারে। রাশিয়া, কানাডা, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম অংশের রাজ্যগুলো গমের উৎপাদন বাড়াতে পারে। কারণ, গম ভুট্টার তুলনায় অধিক উত্তাপ ও খরা সহনশীল।

আবার ভারত ও পশ্চিম আফ্রিকার উষ্ণ অঞ্চলগুলোও এর সুবিধা পেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যদি অতিবৃষ্টি দেখা দেয়, তাহলে এসব অঞ্চলে ধানের উৎপাদন বাড়বে।

যদিও এ ধরনের পূর্বাভাসগুলো এখনো অনুমাননির্ভর ও অনিশ্চিত, তারপরও কৃষকদের উচিৎ আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন ফসলের কার্যকরী চাষাবাদ সম্পর্কে জানা। কারণ, নিশ্চিতভাবেই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কৃষিকে এমনভাবে প্রভাবিত করবে যা হয়তো আমরা কল্পনাও করতে পারি না। দ্য ইকোনমিস্ট

আজকের বাংলা তারিখ

April ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  


Our Like Page