অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : হাসপাতাল থেকে রক্ত নিয়ে এইডস ও হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে ১৪ শিশু। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কানপুরে।
ভূক্তভোগী এসব শিশুদের সকলেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এবং এ কারণেই তাদের নিয়মিত রক্ত দিতে হতো।
এঘটনায় কানপুরের লালা লাজপত রাই (এলএলআর) সরকারি হাসপাতালের গাফলতি ছিলো বলে জানিয়েছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে ১৪ জন শিশু হেপাটাইটিস বি, সি এবং এইচআইভি-এর মতো রোগে সংক্রমিত হয়েছে। থ্যালাসেমিয়ার পাশাপাশি জটিল এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ওই শিশুরা এখন আরও বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রক্তদানের সময় বিভিন্ন সংক্রামক রোগের যেসব পরীক্ষা করা হয়, তা নিয়ম মেনে করা হয়নি। এর ফলে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা হেপাটাইটিস, এইচআইভির মতো রোগে সংক্রমিত হয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত সংক্রমণের কোনও উৎস পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের পেডিয়াট্রিকস বিভাগের প্রধান ও নোডাল অফিসার ড. অরুণ আর্য বলেছেন, ‘এটি উদ্বেগজনক ঘটনা। রক্ত পরিবর্তনের সময়ে এই ধরনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। আপাতত হেপাটাইটিস আক্রান্ত রোগীদের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। এইআইভি আক্রান্তদের কানপুরে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের নিয়েই উদ্বেগ রয়েছে বেশি। শিশুরা এমনিতেই জটিল রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। নতুন রোগে সংক্রমিত হওয়ায় তাদের বিপদ আরও বেড়ে গেছে। রক্ত ট্রান্সফিউশনের সময় চিকিৎসকদের উচিত শিশুদের হেপাটাইটিস বি-র টিকা দেওয়া।’
সংবাদমাধ্যম বলছে, কানপুরের ওই হাসপাতালে ১৮০ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী নিয়মিত রক্ত পরিবর্তন বা ব্লাড ট্রান্সফিউশনের জন্য আসেন। প্রতি ছয় মাস অন্তর তাদের সমস্ত সংক্রামক রোগের জন্য পরীক্ষা করা হয়। এটিকে স্ক্রিনিং বলা হয়।
সম্প্রতি আক্রান্ত ওই ১৪ শিশু স্থানীয় জেলা সদর ও বেসরকারি হাসপাতালে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করে। সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়। আক্রান্তদের বয়স ৬ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ৭ জন হেপাটাইটিস-বি, ৫ জন হেপাটাইটিস-সি এবং ২ জন এইচআইভি-তে আক্রান্ত হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী এসব শিশু কানপুর শহর, দেহাত, ফারুখাবাদ, আউরাইয়া, ইটাওয়া এবং কনৌজসহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেবা নিতে এসেছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তরপ্রদেশ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করবেন। শিশুরা কোথায় হেপাটাইটিস এবং এইচআইভি রোগে সংক্রমিত হয়েছে সেই স্থানটিও খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে তদন্ত দল।’
Leave a Reply