মার্কিন–কানাডীয় বিশ্লেষক রবার্ট ফ্যান্টিনা
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : একজন মার্কিন-কানাডীয় বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একটি অগণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং এই সংস্থার কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার এখন জরুরি।
মার্কিন-কানাডীয় বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবাধিকারকর্মী রবার্ট ফ্যান্টিনা বলেছেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে অগণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। জাতিসংঘের কাঠামোর মৌলিক পুনর্বিবেচনা অপরিহার্য।”
পার্সটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্যান্টিনা উল্লেখ করেন- যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে নিজের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ এগিয়ে নিতে নিরাপত্তা পরিষদকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে, যার ফলে বহু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের নীতি দুর্বল হয়েছে।
তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র বহুবার জাতিসংঘের বিরুদ্ধেই ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করেছে এবং জাতিসংঘ-সংশ্লিষ্ট যেসব সংস্থা তাদের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সেসব সংস্থার বাজেট কেটে দেওয়া বা স্থগিত করেছে। ফ্যান্টিনা বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ তুলনামূলকভাবে বেশি গণতান্ত্রিক হলেও এর কোনো কার্যকর নির্বাহী ক্ষমতা নেই এবং এর সিদ্ধান্তগুলো প্রায়ই নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়।
এই বিশ্লেষক যুদ্ধ প্রতিরোধ বা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে জাতিসংঘের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সংস্থা এমনকি গাজা উপত্যকায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এক প্রকাশ্য গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফ্যান্টিনা নিরাপত্তা পরিষদকে এমন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করেন, যা কোনোভাবেই জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রকৃত প্রতিনিধি নয়।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ভেটো ক্ষমতা বিলুপ্ত করা কাঠামোগত সংস্কারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা হলো- এই ভেটো ক্ষমতাই যেকোনো পরিবর্তনের প্রধান বাধা। তার মতে, কার্যকর বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হলো জাতিসংঘের পরিবর্তে একটি নতুন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করা।