অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া চীনের বাজার প্রভাব মোকাবিলায় বিরল খনিজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের সরবরাহ বাড়াতে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তুত-প্রকল্পের পাইপলাইন বাস্তবায়নে সহায়তা করা হবে, যা দেশের খনিজ উত্তোলন ও প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতা বাড়াবে।
চুক্তির আওতায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এমন তথ্য জানানো হয়েছে চুক্তির খসড়া নথিতে।
আলবানিজ বলেন, আমরা ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই এই বিষয়ে কাজ করছি, তবে এই নতুন চুক্তি অংশীদারিত্বকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
একই দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ সাবমেরিন প্রকল্প ‘অকাস’ সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সব কিছু পূর্ণ গতিতে চলছে।
এর আগে এ বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন এই সাবমেরিন চুক্তিটি আমেরিকা ফার্স্ট নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা পর্যালোচনার ঘোষণা দেয়, যা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া তাদের সাবমেরিন কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে। তবে ট্রাম্প সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, অবশ্যই, তারা সাবমেরিনগুলো পাচ্ছে।
বর্তমানে চীন বিশ্বব্যাপী বিরল খনিজ আহরণের প্রায় ৭০ শতাংশ এবং প্রক্রিয়াকরণের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। এই খনিজগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়ি সব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
চীনের সাম্প্রতিক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন চুক্তিকে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চুক্তির ঘোষণার পর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিরল খনিজ কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। পার্থ-ভিত্তিক কোম্পানি আরাফুরা রেয়ার আর্থস এর শেয়ার ৭ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ইলুকা সম্পদ এর শেয়ার ৩ শতাংশ এর বেশি বৃদ্ধি পায়।
বৈঠকের আগে অস্ট্রেলীয় কোম্পানি লিনাস রেয়ার আর্থস-এর শেয়ারমূল্যও বেড়ে যায়। কোম্পানিটি কয়েক বছর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছ থেকে একটি চুক্তি পেয়েছিল এবং বর্তমানে টেক্সাসে একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে।
হোয়াইট হাউস প্রকাশিত চুক্তির কাঠামোতে বিস্তারিত তথ্য না থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দুই দেশের জন্যই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
অস্ট্রেলিয়া বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রধান খনিজ সরবরাহকারী হলেও, প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে দেশটি এখনো চীনের ওপর নির্ভরশীল যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রও।
এই নতুন চুক্তিকে তাই চীনের প্রভাব থেকে সরবরাহ শৃঙ্খল বৈচিত্র্যকরণের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।