November 10, 2025, 9:45 pm
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা মাগুরা গনপূর্ত অফিসে বিয়ের দাবি নিয়ে নড়াইলের শরিফা খানমের অনশন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় ৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকার ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশন জিহাদ ঘোষণা করেছে : ইসি আনোয়ারুল ইসলাম একটি মহল নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে : বিএনপি মহাসচিব দেশের ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি সুপ্রিম কোর্ট ও অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ ঝিনাইদহের নতুন ডিসি আব্দুল্লাহ আল মাসউদ লক্ষ্মীপুর রোগী সেজে হাসপাতালে চুরির দায়ে ৭ নারী গ্রেফতার রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনীর ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইন ; বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ
এইমাত্রপাওয়াঃ

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ইরানের প্রতিবেদন প্রকাশ

ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থীদের উপর দমনপীড়ন যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পার্সটুডে জানিয়েছে, গতকাল (রোববার) ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনটি দুইটি অংশে বিভক্ত—

১. জাতীয় পর্যায়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন

২. আন্তর্জাতিক ও সীমান্তপারের মানবাধিকার লঙ্ঘন

যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন : প্রতিবেদনের প্রথম অংশে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে। এতে বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যেমন:

  • জীবনের অধিকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও নিরাপত্তা লঙ্ঘন
  • বন্দিদের অধিকার লঙ্ঘন
  • মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা
  • বৈষম্য ও কাঠামোগত বর্ণবাদ
  • অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন
  • নারীর অধিকার লঙ্ঘন
  • আত্মহত্যা, বৈষম্যমূলক সম্পদ বণ্টন ও আর্থসামাজিক বৈষম্য।

দ্বিতীয় অংশে (আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন) ৪টি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • গাজায় গণহত্যায় ইসরায়েলি শাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন,
  • সীমান্তপারের সামরিক অভিযান ও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা,
  • একতরফা নিষেধাজ্ঞা ও জবরদস্তিমূলক পদক্ষেপ,
  • আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার।

একটি অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ সামরিক আক্রমণে অংশ নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদাহরণ।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার সুরক্ষার দাবি করে, বাস্তবে দেশটির অভ্যন্তরে সরকার যে নীতি অনুসরণ করে তা এসব দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দেশটির আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য, বন্দিদের অবস্থা, নাগরিকদের ব্যক্তিগত জীবনে নজরদারি ও গোপনীয়তা লঙ্ঘন—সবই ওয়াশিংটনের ভণ্ডামিপূর্ণ মানবাধিকার দাবিকে প্রকাশ করে।

যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় ও পুরোনো দৃষ্টান্ত হলো বর্ণবাদ ও লিঙ্গবৈষম্য। আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের প্রতি আচরণ, বন্দিদের অবস্থা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ—সবকিছুই প্রমাণ করে যে ওয়াশিংটনের মানবাধিকার রক্ষার দাবিগুলো ভুয়া ও প্রতারণামূলক।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ ও লিঙ্গবৈষম্য দীর্ঘদিনের এক গভীর সংকট। দেশটির ইতিহাস থেকেই স্পষ্ট, বর্ণবাদ আমেরিকার সমাজ-রাজনীতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। পাশাপাশি, দেশে ক্রমবর্ধমান সহিংস অপরাধ ও অস্ত্র ব্যবহারের সংস্কৃতি নাগরিকদের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার  অর্থাৎ নিরাপত্তার অধিকার, সেখানে বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

আরেকটি গুরুতর দিক হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব ও গোপন তথ্য ফাঁসকারী নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন। যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতেও অমানবিক অবস্থা বিরাজ করছে; বিপুল সংখ্যক বন্দি এবং কঠোর জীবনযাপনের চিত্র বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তের বাইরে মানবাধিকার লঙ্ঘন : প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসজুড়েই অন্য দেশে সামরিক হামলা, বেসামরিক হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের নজির বিদ্যমান।
ভিয়েতনাম, ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইয়েমেনে মার্কিন আগ্রাসন এবং গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা লাখো নিরপরাধ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

আবু গারিব ও বাগরাম কারাগারের ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন, তথাকথিত ‘ড্রোন হামলা’র নামে বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ, এবং গুয়ানতানামো বে-তে অভিযোগহীন অনির্দিষ্টকালের আটক—সবই আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

এছাড়া, বিশ্বব্যাপী নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারি কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন : যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র হিসেবে যুক্তরাজ্যেরও মানবাধিকার রেকর্ড কালো ইতিহাসে ভরা, বিশেষ করে উপনিবেশবাদী আমলে এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনের প্রথম অংশে (জাতীয় পর্যায়) ১২টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে:

  • জীবনের অধিকার লঙ্ঘন,
  • শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা হরণ,
  • অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন,
  • জনসেবার বাজেট হ্রাস,
  • নারীদের ও কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশি সহিংসতা,
  • বর্ণবাদ ও বৈষম্য,
  • স্বাস্থ্য অধিকার লঙ্ঘন,
  • মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন,
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার,
  • নারী ও কন্যাদের প্রতি সহিংসতা,
  • শিশু অধিকার লঙ্ঘন,
  • কারাগারের অনুপযুক্ত পরিবেশ

দ্বিতীয় অংশে (আন্তর্জাতিক ও সীমান্তপারের মানবাধিকার লঙ্ঘন) দু’টি প্রধান শিরোনাম এসেছে:

১. বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে মানবাধিকার লঙ্ঘন– যেমন বিপজ্জনক পদার্থ, নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বর্জ্য রপ্তানি, ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চনা ইত্যাদি;

২. গাজায় গণহত্যায় অংশগ্রহণ ও সমর্থন।

প্রতিবেদনটি বলছে- যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নিজেদের মানবাধিকারের রক্ষক দাবি করলেও, তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি ও আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। ইরানের মতে, এসব দেশ মানবাধিকারের নীতি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। প্রকৃত মানবাধিকার রক্ষায় দ্বৈত মানদণ্ড পরিহার করে সবার জন্য সমান ন্যায় নিশ্চিত করাই মূল চ্যালেঞ্জ।

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page