অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাস শেষ হতে না হতেই আল-আকসা মসজিদকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ লেবানন এবং সিরিয়ার গোলান থেকে নতুন নতুন ফ্রন্টের প্রতিরোধ মোকাবেলার বিপদের মধ্যে রয়েছেন।
ওই বিপদের মুখেআল-আকসায় সংঘর্ষ এড়াতেই তিনি উগ্র ইহুদিবাদীদেরকে রমজান মাসের সমাপ্তি পর্যন্ত আকসা মসজিদে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। নেতানিয়াহুর ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন তাঁরই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী বিন গাভিরসহ আরও বহু উগ্রপন্থি নেতা। কিন্তু রমজান শেষ হতেই আবার নতুন করে সেখানে উত্তেজনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
পবিত্র রমজান মাসের শুরু থেকেই আল-আকসা মসজিদসহ তার আশেপাশে এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে ইহুদিবাদী সেনাদের সংঘাত লেগেই ছিল। ওই সংঘাত চরমে উঠেছিল ইহুদিবাদীরা যখন আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায়রত মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়। আকসা মসজিদে হামলা চালানোর প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ লেবানন এবং গাজা উপত্যকা থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনে শত শত রকেট নিক্ষেপ করা হয়।
ওই ঘটনায় নেতানিয়াহু আকসা মসজিদ থেকে ইহুদিবাদী সেনাদের পিছু হটাতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেইসঙ্গে রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত ইহুদিদেরকে আকসা মসজিদে ঢুকতে নিষেধ করেছিলেন। এই ঘোষণার আগে অবশ্য ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদেরকে রমজানের শেষ দশকে আল-আকসা মসজিদে হামলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভেতরে ও বাইরে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে আল-আকসা মসজিদের প্রতি সমর্থন ও এই মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় যারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে সেইসব ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের প্রতি সকল প্রতিরোধ ফ্রন্টের ঐক্যবদ্ধ সমর্থনের কারণে নেতানিয়াহু পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তখনও রমজান মাস শেষ হওয়ার পর পুনরায় ইহুদিবাদী হামলা ও আগ্রাসন শুরু হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি ধারণা করা হয়েছিল। অবশেষে সেই সম্ভাবনাই বাস্তবে রূপ নিলো। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনে (শনিবার) ইসরাইলি হানাদার বাহিনী আকসা মসজিদের আর-রাহমা গেইটের মোসাল্লায় হামলা চালায় এবং ওই দরজা ভেঙে মসজিদের অবমাননা করে। ওই হামলার প্রতিবাদে প্রতিরোধ গোষ্ঠিগুলো সমবেতভাবে হুশিয়ারিমূলক প্রতিক্রিয়া জানায়। ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইহুদিবাদীদের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেছেন: এর অর্থ হল দখলদার বাহিনী আকসা মসজিদের পবিত্র স্থানগুলির বিরুদ্ধে ধর্মীয় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। আল-আকসা মসজিদের ফিলিস্তিনি, আরব এবং ইসলামি পরিচয় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ওই যুদ্ধ থামবে না। অপরদিকে প্রতিরোধ শক্তিগুলোও ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিহত করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুতরাং আল-আকসা মসজিদকে ঘিরে উত্তেজনা দানা বাঁধবে-এটাই স্বাভাবিক।
Leave a Reply