অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে কোনো বাধা রইলো না। আসামিদের ফাঁসি কার্যকরে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন জেল কোড অনুযায়ী কিছু প্রক্রিয়ার শেষে এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হবে। এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি গত বুধবার (৫ জুলাই) রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছেছে।
২০০৮ সালে নিম্ন আদালতে মামলার রায় ঘোষণার পর থেকেই রাবি শিক্ষক তাহের হত্যা মামলার দুই মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। তারা হলেন, রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিন এবং নিহত ড. এস তাহেরের বাসার তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলম।
এর আগে ফাঁসির রায় ও উচ্চাদলত থেকে সর্বশেষ আদেশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এ দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি এই প্রাণ ভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন। তার কাগজপত্র গত বুধবার (৫ জুলাই) রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে পৌঁছায়। তাই সর্বশেষ প্রক্রিয়ায় আবেদন নাকচের পর এই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই। এখন রাজশাহী কারা কর্তৃপক্ষ এই দুই আসামির ফাঁসি যে কোনদিন কার্যকর করতে পারবেন।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দিন জানান, রাবি শিক্ষক হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা কারাবিধি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। তাদের সেই আবেদন নাকচ হয়ে গেছে। তার চিঠি ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র গত ৫ জুলাই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছেছে। এখন কারাবিধি মেনেই তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদশক (ডিআইজি প্রিজন) কামাল হোসেন বলেন, ‘আসামিদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ায় ফাঁসি কার্যকরে আইনি বাধা নেই। এখন জেল কোড অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের ধাপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। জেল কোডে আদেশপ্রাপ্তির ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বিধান রয়েছে।
এর আগে গত ২ মার্চ ড. এস তাহের হত্যা মামলায় এই দুজনের ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। নিম্ন আদালতে দুজনের মৃত্যুদণ্ডের যে রায় এসেছিল তাই বহাল থাকে আপিল বিভাগে, খারিজ হয় রিভিউ আবেদনও। এরপরে তারা প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ বাদি হয়েনগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপরে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন।
Leave a Reply