November 13, 2025, 1:56 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহে দুইদিন ব্যাপি কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন আগামী বছর হজ করতে পারবেন সাড়ে ৭৮ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোরকে প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনে নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দিল দ. কোরিয়া গত অক্টোবরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মতবিনিময় সভা গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নাকফুল- আংটি-বদনা ফিরে পেলেন বাগেরহাটের শ্রাবণী বাগেরহাটের চিতলমারী ও মোল্লাহাটে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার চাঁদপুরে পাঁচটি পাইপগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
এইমাত্রপাওয়াঃ

লালমনিরহাটে জেগে ওঠা তিস্তার চরে সবুজ ফসলের সমারোহ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  লালমনিরহাটে চলতি শুষ্ক মৌসুমে  পানিশূন্য হয়ে পড়া তিস্তা নদীর বুকে জেগে উঠেছে শতাধিক চর। মরুভূমির মতো সাদা বালুতে ফসল ফলাচ্ছেন কৃষকেরা।

২০২৪ সালে কয়েক দফা বন্যার পানিতে উজান থেকে ভেসে আসা পলি মাটি বালুতে পরে চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেছে এসব চরাঞ্চল। বন্যা ও নদী ভাঙ্গনের ক্ষতি কাটিয়ে পলিযুক্ত সাদা বালুর চরে এখন চাষ হচ্ছে বাদাম, আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, তামাক, রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়াসহ অর্থকরী ফসলগুলো।

নদীতে পানি না থাকায়  ডিজেল চালিত পানির পাম্প (শ্যালো) বসিয়ে সেচের পানি সংগ্রহ করে চাষাবাদ করছেন চাষিরা। তিস্তার বুকে জেগে ওঠা ধুধু বালু চরে কৃষকের এই সেচনির্ভর চাষাবাদে ফসল উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে করে বাড়তি খরচে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়,  তিস্তার এই চরগুলোতে গ্রামের দামি জমির চেয়েও ফলন বেশি। জমিহীন বর্গা চাষিরা গ্রামের জমির চেয়ে কম দামে চরের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। ১৫ থেকে ২০ ফিট মাটি খুঁড়লেই সেচের পানির ব্যবস্থা করতে পারছেন বলে জানান তারা। তবে বর্গাচাষি বেশির ভাগ কৃষকেরই সেই সামর্থ্য নেই।

গত বছর সিকিমের চুংথাং বাঁধ ভেঙে একদিনে ভেসে যায় তিস্তা। তখন দুর্গতির সীমা ছিল না। কিন্তু এখন তিস্তাপাড়ের মানুষ খুশি। ওই বন্যায় স্মরণকালের সব থেকে ঘোলাটে পানি আসে। পানি কমে গিয়ে তিস্তার চকচকে বালির ওপর ১ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত পলি জমেছে। আর এই পলিযুক্ত বালিতে অল্প সার ও পানি ব্যবহার করেই কৃষকরা ফসল ফলাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ বছর তিস্তার চরে চাষকৃত আমনের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ হাজার হেক্টর চাষাবাদযোগ্য জমি আছে। প্রতিনিয়ত নতুন চরকে চাষযোগ্য করা হচ্ছে। যেখানে শুধু বালি আছে সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা করে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে।

তিনি জানান, রবিশস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, মরিচ, ডাল এসব অর্থকরী ফসল চরাঞ্চলেই বেশি উৎপাদন হয়। জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদরের তিস্তার চরে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে।

জানা যায়, সেচের অভাবে জেগে ওঠা চরের বৃহৎ অংশই চাষাবাদের বাইরে রয়েছে। এদিকে নদীতে পানি সংকট থাকায় চাষাবাদকৃত জমিতে কৃষকরা শ্যালো ইঞ্জিন ব্যবহার করে সেচ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

মরুভূমির মতো সাদা বালুতে সেচের মাধ্যমে পানি দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবারো শুকিয়ে যায়। তিস্তা খনন করে স্থায়ী প্রবাহমান পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তিস্তায় পানি থাকলে সোনালী ফসল ফলাতে তাদের কোনো বেগ পেতে হতো না।  নতুন জেগে ওঠা হাজার হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদের উপযোগী হতো।

পানি না থাকায় তাদের এখন মরণদশা। ডিজেল কিনে ফসল ফলাতে তাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষক মাহতাব আলী (৫৫) বলেন, তিস্তা সড়ক সেতুর পাশে তিস্তা নদীর বুকে ধুধু বালুচরে আলু ও লাল শাক করেছেন। আলু ক্ষেতের পানির দরকার হওয়ায় তিনি নদীর বুকে শ্যালো মেশিন বসিয়েছেন। সেচ পদ্ধতির বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, কয়েকজন কৃষক মিলে আমরা একটি শ্যালো মেশিন থেকে সেচের পানি সংগ্রহ করে ধুধু বালু চরে চাষাবাদ করছি।

কালিগঞ্জ উপজেলার মুন্সির বাজার এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলাম (৫৯) বলেন, তিস্তার পানি নেমে যাওয়ার পর জেগে ওঠা চরে নানা জাতের ফসল চাষ হয়। এবছর আমি ৫ একর জমিতে আগাম ভুট্টা লাগিয়েছি। চরের এসব জমিতে ভুট্টার ফলন অন্যান্য জমির চেয়ে অনেক বেশি। ধানের চেয়ে ফলন বেশি ও দাম দ্বিগুণ হওয়ায় লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন।

চর অধ্যুষিত ভোটমারী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, অনাবাদি পতিত জমিকে আবাদযোগ্য করার লক্ষ্যে উপজেলা সম্প্রসারণ অধিদফতরের বিভিন্ন সহযোগিতায় কৃষকদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চরের কৃষকদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ি লালমনিরহাটের উপ-পরিচালক মো. শায়খুল আরফিন বলেন, জেলায় তিস্তা ও ধরলা নদীর বিশাল চরাঞ্চলে প্রায় ২০ হাজার কৃষক বালুচরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। আলু, ভুট্টা ও মিষ্টি কুমড়া উৎপন্ন করে চরের কৃষকরা নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন। সেচের জন্য ব্যয় কিছুটা বাড়লেও কীটনাশকের ব্যয় চরের চাষাবাদে কম লাগে। তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ থাকলে তারা সেখান থেকে সেচের পানি সরবরাহ করে ফসল উৎপাদনে খরচ কমাতে পারতেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে চর কৃষকদের বালুচরে নানা ফসল উৎপাদনে কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।

 

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page