December 3, 2025, 6:26 am
শিরোনামঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুরে তারুণ্যের উৎসবে কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প ও সঞ্চয় প্রনোদনা বিতরণ মাগুরায় টিআরের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রাষ্ট্রপতির ফেসবুক আইডি হ্যাকড ; জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা ; দেওয়া হচ্ছে এসএসএফের নিরাপত্তায় আগামী ৮ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে নির্বাচন ও গণভোট : ইসি আনোয়ারুল ইসলাম পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা দেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে খুলনায় আদালত চত্বরে জোড়া খুনের ঘটনায় একজন আটক নানা আয়োজনে বান্দরবানে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কারাগারে ইমরান খানকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে : সাক্ষাতের পর বোন উজমা যুদ্ধ বন্ধের ‘অগ্রগতি’র পর ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করলেন জেলেনস্কি
এইমাত্রপাওয়াঃ

ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত পরীক্ষামূলকভাবে ঢোকানো হলো মানুষের দেহে

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা রক্ত এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিৃটেনের গবেষকেরা। এই পরীক্ষায় যে পরিমাণ রক্ত মানুষের দেহে ঢোকানো হয়েছে, তা খুবই সামান্য, কয়েক চামচ মাত্র। এই রক্ত কতটা কাজ করে, সেটা দেখাই এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য।

মানুষের দেহে যে রক্ত সঞ্চালন করতে হয়, সেটা এখনো প্রায় সব ক্ষেত্রেই মানুষের দেহ থেকেই নিতে হয়। এজন্য বহু মানুষ নিয়মিত রক্ত দান করেন। কিন্তু গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরির এই পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্য সেই সব বিরল গ্রুপের রক্ত তৈরি করা, যা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। যেসব রোগের কারণে শরীরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করার দরকার হয়, তাদের জন্য এর প্রয়োজন খুব বেশি।

মানুষের দেহের রক্তের সঙ্গে যদি সঞ্চালিত রক্ত না মেলে, তখন শরীর এই রক্ত প্রত্যাখ্যান করে এবং চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। এক জনের রক্তের সঙ্গে শুধু আরেক জনের রক্তের গ্রুপ মিললেই হবে না, এই মিল হতে হবে আরো অনেক বেশি। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রফেসর অ্যাশলে টোয়ে বলেন, কিছু কিছু রক্তের গ্রুপ এতটাই বিরল যে, একটা দেশে হয়তো মাত্র ১০ জন আছেন, যারা এই রক্ত দিতে পারবেন। যেমন :পুরো যুক্তরাজ্যে ব্লাড ব্যাংকে যত রক্ত আছে, তাতে এই মুহূর্তে ‘বোম্বে ব্লাড গ্রুপের’ মাত্র তিনটি ইউনিট আছে। এই রক্তের গ্রুপটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ভারতে।

ল্যাবরেটরিতে যেভাবে রক্ত তৈরি করা হয় : এই গবেষণা যৌথভাবে পরিচালনা করছে ব্রিস্টল, ক্যামব্রিজ, লন্ডন এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের গবেষক দল। রক্তের যে লোহিতকণিকা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে শরীরের অন্যান্য অংশে নিয়ে যায়, এই গবেষণায় সেটার ওপরই মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।

এটি যেভাবে কাজ করে :  স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় দান করা এক পাউন্ট রক্ত দিয়ে কাজটি শুরু হয়। এরপর এই রক্ত থেকে চুম্বকের মাধ্যমে এমন কিছু নমনীয় স্টেম সেল বের করে আনা হয়, যেগুলোর লোহিত রক্তকণিকায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরপর গবেষণাগারে এগুলোকে বেশি সংখ্যায় বড় করার জন্য এমনভাবে রাখা হয়, যাতে এগুলো পূর্ণাঙ্গ লোহিত কণিকায় পরিণত হতে পারে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় তিন সপ্তাহ সময় লাগে এবং এই সময়ের মধ্যে ৫ লাখ স্টেম সেল থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা যায়। এগুলো থেকে ফিল্টার করে এরপর প্রায় দেড় হাজার লোহিত রক্তকণিকা বের করা হয় মানুষের দেহে সঞ্চালন করার জন্য।

অধ্যাপক টোয়ে বলেন, ভবিষ্যতে আমরা এভাবে যত বেশি সম্ভব রক্ত তৈরি করতে চাই। আমার মাথার ভেতরে যে দৃশ্যটা আমি দেখতে পাই, তা হলো একটা রুমভর্তি মেশিন আর সেখান থেকে মানুষের দান করা স্বাভাবিক রক্ত ব্যবহার করে ক্রমাগত রক্ত তৈরি করা হচ্ছে।

পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দুজনের দেহে এরকম রক্ত দেওয়া হয়েছে। মোট দশ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবকের দেহে এই রক্ত প্রয়োগ করা হবে। তাদের অন্তত চার মাসের ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার পরিমাণে দুই বার ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত দেওয়া হবে। এই রক্তে একধরনের তেজষ্ক্রিয় চিহ্ন (রেডিও অ্যাকটিভ ট্যাগ) দেওয়া আছে, যাতে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন এই রক্ত কত দিন টিকে থাকে। আশা করা হচ্ছে, ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্ত স্বাভাবিক রক্তের চেয়ে অনেক বেশি টিকবে। লোহিত রক্তকণিকা সাধারণত ১২০ দিন টেকে, এরপর এগুলো প্রতিস্থাপনের দরকার হয়। যখন কোনো ব্যক্তি রক্ত দান করেন, তখন সেই রক্তে সাধারণত নতুন ও পুরোনো দুই ধরনের লোহিত কণিকাই থাকে। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে তৈরি রক্তে সবই নতুন লোহিত কণিকা, কাজেই এই রক্ত পুরো ১২০ দিন কাজ করার কথা।

গবেষকেরা মনে করছেন, এর ফলে ভবিষ্যতে হয়তো রোগীর দেহে অত ঘন ঘন রক্ত দিতে হবে না বা এত পরিমাণেও হয়তো কম লাগবে। তবে এক্ষেত্রে এখনো বিরাট আর্থিক ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ আছে। যুক্তরাজ্যে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে রোগীকে এক বার রক্ত দিতে গড়ে খরচ পড়ে প্রায় ১৩০ পাউন্ড।

ল্যাবরেটরিতে রক্ত তৈরিতে খরচ পড়বে অনেক বেশি, তবে গবেষকেরা এখনো বলছেন না, এই খরচের পরিমাণ কত হতে পারে। আরেকটা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, মানুষের দেহের রক্ত থেকে সংগৃহীত স্টেমসেলের সক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে কত রক্ত এ থেকে তৈরি করা যাবে, তার একটা সীমা আছে। এক্ষেত্রে এখনো অনেক গবেষণার দরকার হবে।

এনএইচএসের ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সফিউশনের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ড. ফররুখ শাহ বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনের ভিত্তি রচিত হচ্ছে। সিকেল সেলের মতো রোগে আক্রান্ত মানুষের দেহে এই রক্ত নিরাপদে সঞ্চালন করা যাবে। যাদের জন্য রক্ত পাওয়া খুব কঠিন, সেই সব রোগীর জন্য এই গবেষণার বিরাট সম্ভাবনা আছে।

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page